আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লীগ নেতার দখলে কলাপাড়া কলেজের জমি

পটুয়াখালীর কলাপাড়া মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের জমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করেছেন বিকেএসবি ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী ও কলাপাড়া পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি বিপুল হাওলাদার। শুক্রবার সকাল থেকে কলেজের পূর্ব পাশের সীমানার প্রায় এক একর জমিতে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শুক্রবার কলেজ বন্ধ হওয়ায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে থানা পুলিশকে খবর দেয়। এর মধ্যে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে নির্মাণ শ্রমিকদের ফেলেই ওই আওয়ামী লীগ নেতা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত এলাকাবাসীর কাছে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা দিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করে।

এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ কলাপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। এলাকাবাসী সূত্রে ও কলেজ কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজের মাছ চাষের লেক ১৯৮৬-৮৭ সালে নিজে ভূমিহীন সেজে বিপুল হাওলাদার বন্দোবস্ত নেন। এ জমি বন্দোবস্ত নিয়ে তিনি খেপুপাড়া মৌজার ৮১৫ ও বাদুরতলী মৌজার ১৪১ খতিয়ানের মোট ৪২ শতাংশ কলেজের জমি বালু ব্যবসার অজুহাতে কৌশলে দখলে নেন। যার বর্তমান মূল্য প্রায় কোটি টাকা। ওই জমি অবৈধভাবে দখলে নেওয়ায় আদালতে মামলা চলমান।

বালুর ব্যবসা করবেন বলে জমিতে বালুর স্তূপ রেখে কৌশলে ভরাট করেন ওই নেতা। হঠাৎ শুক্রবার বন্ধ থাকার সুযোগে আইন ভঙ্গ করে ক্ষমতার জোরে ওই জমিতে ভোর থেকে স্থাপনা নির্মাণের কাজ শুরু করেন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করতে বাধা দেয়। বিপুল হাওলাদার ক্ষমতাসীন হওয়ায় কর্তৃপক্ষের বাধা উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। পরে থানা পুলিশে খবর দেয় কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষের বাধা উপেক্ষা করায় এলাকাবাসীর তোপের মুখে ওই আওয়ামী লীগ নেতা শ্রমিকদের রেখে সটকে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। সরিয়ে ফেলা হয় স্থাপনা তৈরির মালামাল। সূত্র জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষের দখলে থাকা ওই জমি বিপুল হাওলাদার গোপনে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। কলেজ অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, কলেজের মাছ চাষের লেক ভূমি অফিসের অসাধু কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে চাষকৃত জমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত নেন বিপুল হাওলাদার।

এ ব্যাপারে শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপুল হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়দানকারী তার ছেলে বিকাশ হাওলাদার জানান, ওই জমি আমাদের নিজেদের। ওখানে স্থাপনা তৈরি নয়, বালুর ব্যবসা করার জন্য একটি ঘর তুলছিলাম। কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. হানিফ সিকদার বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের খবরে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, পুলিশ তাদের সহায়তা করবে।

কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ মাহবুবুর রহমান তালুকদার জানান, ওই জমি কলেজের সম্পত্তি। দলীয় পরিচয়ে কলেজের সম্পত্তি কেউ যদি অবৈধভাবে দখল করতে চায় তিনি যত বড় প্রভাবশালীই হোক তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.