নিন্দুকেরা প্রায়ই খোঁচার ছলে বলে থাকে, দেশে নাকি পার্টির অভাব নেই। আবার অনেক পার্টিই নাকি নামসর্বস্ব। নেই কোনো কর্মী, নেই কোনো কার্যক্রম। নিন্দুকদের এসব খোঁচাত্দক কথা অজ্ঞান পার্টির ক্ষেত্রে একদমই প্রযোজ্য নয়। কারণ অজ্ঞান পার্টি মোটেই নামসর্বস্ব পার্টি নয়।
তাদের ম্যালা কর্মী, ম্যালা কার্যক্রম। যখন তখন তারা আপনাকে সেবা দিতে প্রস্তুত। তাদের এই সেবা নিয়ে নানারকম নেতিবাচক কথা প্রচলিত থাকলেও ইতিবাচক কথা বলার লোকও সেদিন পাওয়া গেল। আমার এক দূরসম্পর্কের আত্দীয়। আত্দীয় সাহেব বললেন, সবাই অজ্ঞান পার্টিকে অপছন্দ করলেও আমি পছন্দ করি।
কারণ অজ্ঞান পার্টি আমার বিরাট উপকার করেছে। অজ্ঞান পার্টি কী ধরনের উপকার করেছে, এটা শোনার জন্য আমরা কান খাড়া করলাম।
তিনি উপকারের ধরন বর্ণনা করলেন আমি বহুদিন ধরে অনিদ্রায় ভুগছিলাম। কত দামি দামি ঘুমের বড়ি খেলাম। তবু ঘুম আসেনি।
অজ্ঞান পার্টি আমাকে রুমাল শুঁকানোর পর সেই যে ঘুম আসল, একটানা তিন দিন ঘুমালাম। এখনো ঘুমের ভাব আছে। এই পর্যন্ত বলে আত্দীয় সাহেব ইয়া বড় হা করে হাই তুলতে লাগলেন।
একবার কাকতালীয়ভাবে অজ্ঞান পার্টির এক সদস্যের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। কথায় কথায় তাকে অনেক বিষয়েই প্রশ্ন করে ফেললাম।
সদস্য মহোদয় সব প্রশ্নের আলাদা আলাদা উত্তর না দিয়ে পাইকারিভাবে একটা কথা বলল, দেখেন, সব পার্টিই পাবলিকরে কিছু না কিছু দেয়। তবে অন্য যে কোনো পার্টি শুধু নির্বাচনের সিজনেই পাবলিকরে এইটা সেইটা দেয়। যেমন পান, বিড়ি, সিগারেট ইত্যাদি। আর আমরা শুধু নির্বাচনের সিজনে না, সবসময়ই পাবলিকরে গিফট দিয়া থাকি। এই গিফটের নাম হইল ডাব।
বলেন আমার কথা সত্য কিনা? আমি হ্যাঁবোধক উত্তর দিলাম এই ভয়ে- যদি 'না' বলি আর যদি আমার চোখেই মলম মাখতে শুরু করে! আমার এক বড় ভাই খুবই দায়িত্বপরায়ণ লোক। উনার সঙ্গে কোথাও কিছু খেলে জীবনেও কাউকে বিল দিতে দেন না। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সব বিল উনি পরিশোধ করেন। উনি কিছুদিন আগে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছিলেন। তারপর তিনি সুস্থ হয়েছেন বটে, তবে তার মন ভীষণ খারাপ।
আমরা ধরেই নিলাম তার মতো ভালো মানুষকে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়তে হয়েছিল দেখে বুঝি তার মন খারাপ। কিন্তু না, তিনি মন খারাপের এমন এক কারণ বললেন, যা শুনে আমরা তাজ্জব হয়ে গেলাম। তিনি বললেন, অজ্ঞান করার আগে ওরা আমাকে ডাব খাইয়েছিল। অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার কারণে আমি ডাবের বিলটা দিতে পারিনি। বিলটা দিতে না পারায় আমি খুবই কষ্ট পাচ্ছি।
সদ্য বিবাহিত আমার আরেক বড় ভাইকে সেদিন নতুন ভাবী সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই বললেন, আর বলিস না, তোর ভাবী মনে হয় আগে অজ্ঞান পার্টির সদস্য ছিল। আমি বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন?
ভাই বললেন, সে যদি অজ্ঞান পার্টির সদস্যই না হবে, তাহলে আমি তার রান্না করা তরকারি মুখে দিতেই কেন অজ্ঞান হই?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।