আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সস্তা খাবারে সুস্থ কিডনি

কিডনিকে দেহের ওয়াশিং মেশিন বললে ভুল হবে না। শরীরের বর্জ্য পদার্থ ও বাড়তি পানি বের করে দিয়ে দেহকে ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষমুক্ত রাখাই কিডনির কাজ। কিডনিতে সমস্যা দেখা দিলেই হাত-পায়ে পানি জমতে শুরু করে। শরীর হয়ে ওঠে বিষময়। মৃত্যু এসে দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করে।

কিডনি সমস্যায় ভুগে প্রতিবছরই মারা যাচ্ছে অসংখ্য মানুষ।

দিনকে দিন খাদ্যে কেমিক্যাল ব্যবহার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। বাড়ছে বিষাক্ত ফরমালিন, কিটনাশক, রাসায়নিক সারসহ শরীরের জন্য ক্ষতিকর নানা পদার্থের ব্যবহার। নিজের অজান্তেই আমরা প্রতিনিয়ত এগুলো বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে শরীরে ঢুকাচ্ছি। এতে চাপ বাড়ছে কিডনির উপর।

অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যাঙ্গের পাশাপাশি বাড়ছে কিডনি রোগ।   তাই কিডনিকে সুস্থ রাখতে সচেতনতার বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল- কিডনি সুস্থ রাখতে প্রথম মহৌষধ বিশুদ্ধ পানি। এক্ষেত্রে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষকে প্রতিদিন কমপক্ষে আড়াই লিটার পানি পান করতে হবে। এর বাইরে হাতের কাছে আছে এমন সব খাবার যা কিডনিকে সুস্থ ও সবল রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

নিচে এর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেওয়া হলো:-

রসুন

গন্ধের জন্য রসুন অনেকেই পছন্দ করেন না। কিন্তু দিনে ২/৩ কোয়া কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাস করলে কিডনি থাকবে পরিষ্কার। এতে কিডনির সমস্যা জনিত রোগের সম্ভাবনা কমে যায় প্রায় ৩০%। কাঁচা রসুন না খেতে চাইলে রান্নায় ব্যবহৃত রসুন ফেলে না দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন।

পেঁয়াজ

পেঁয়াজ কিডনির পাথর এবং ব্লাডারের ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।

রান্নায় ব্যবহারের পাশাপাশি কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার অভ্যাস কিডনির যে কোন সমস্যা থেকে দেহকে মুক্ত রাখবে। এতে আছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার তারুণ্যকেও ধরে রাখবে দীর্ঘদিন।

বাঁধাকপি

বাঁধাকপিতে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি৬, ফলিক অ্যাসিড এবং ফাইবার যা কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। এছাড়া কিডনিসহ দেহের অন্যান্য অংশের ক্যান্সার সেল দমনে বাঁধাকপি বেশ কার্যকরী।

ফুলকপি

ভিটামিন সি, ফোলাইট, ফাইবার, ইনডোলস, গ্লুকোসিনোলেটস এবং থায়োসায়ানেটস উপাদান ভরপুর ফুলকপি কিডনি এবং দেহের সেল মেমব্রেন এবং ডিএনএ ড্যামেজ করতে সক্ষম এমন নানা ধরনের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে।

তাই খাদ্য তালিকায় ফুলকপি রাখার চেষ্টা করুন। এটি কিডনি বিকলের আশঙ্কা কমিয়ে দেয়।

ডিমের সাদা অংশ

ডিমকে সবাই একটি সুপারফুড হিসেবেই জানি। দেহে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে ডিমের ভূমিকা অনেক বেশি। এছাড়াও এতে রয়েছে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড যা কিডনিতে পাথর জমতে বাঁধা দেয়।

তবে কিডনির উপকারের জন্য কুসুম এড়িয়ে চলাই ভালো।

মাছ

মাছ সব চাইতে ভালো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ। এই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড দেহে ক্যান্সারের সেলগঠন প্রতিরোধে বেশ কার্যকরী। প্রতিদিন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ ৪০ গ্রাম মাছ খেলে কিডনির সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে পারেন দেহকে। যদি প্রতিদিন খেতে না পারেন তবে সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন খাবার তালিকায় মাছ রাখার চেষ্টা করুন।

আপেল

হাই ফাইবার, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানে ভরপুর আপেল আমাদের দেহের নানা সমস্যা সমাধানে কাজ করে। কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রন, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর, হৃদপিণ্ডের সুস্থতা এবং ক্যান্সার সেল গঠন প্রতিরোধ করে আপেল। এছাড়াও আপেল কিডনির জন্য সব চাইতে ভালো একটি ফল হিসেবে পরিচিত। বলা হয়, দিনে ১ টি আপেল আপনাকে রাখবে নীরোগ এবং সুস্থ।

স্ট্রবেরি

স্ট্রবেরিকে মোটামোটি সর্বগুণ সম্পন্ন ফল বলা যায়।

দেহের বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে স্ট্রবেরির অনেক ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু দেহের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সুরক্ষায় স্ট্রবেরি অনেক বেশি কার্যকরী। এটি আমাদের দেহের ভেতরের সেল গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। কিডনির অক্সিডেটিভ ড্যামেজ প্রতিরোধ করে। বর্তমানে স্ট্রবেরি বেশ সুলভে আমাদের দেশের বাজারেই পাওয়া যায়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।