আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভয়াবহ বায়ুদূষণ

বিশ্বের যে সব দেশের বায়ু ভয়াবহ দূষণের শিকার বাংলাদেশ তার মধ্যে একটি। নদ-নদী ও সবুজের সমারোহে ভরা দেশের এই বৈসাদৃশ্য নিঃসন্দেহে দুর্ভাগ্যজনক। গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ইনডেঙ্-২০১৪ অনুযায়ী বায়ুদূষণের দিক থেকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট দেশ বাংলাদেশ। আর দূষণের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই রাজধানী ঢাকা এগিয়ে। বাতাসে কার্বনের সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা ২৯০-৩০০ পিপিএম হলেও ঢাকার বাতাসে কার্বনের মাত্রা ৩৫০ পিপিএম। পরিবেশবিদদের মতে, ঢাকার চারপাশে থাকা ইটভাটা ও শিল্প-কলকারখানা এবং পুরনো মোটরগাড়ি থেকে নির্গত বিষাক্ত কালো ধোঁয়া এবং যত্রতত্র খোলা ডাস্টবিন বায়ুদূষণের মাত্রা বৃদ্ধি করছে। ধূলিময় ঢাকায় এখন প্রাণভরে শ্বাস নেওয়াই সম্ভব হয় না। বায়ুদূষণের কারণে পথচারীদের ব্যবহার করতে হচ্ছে মাস্ক। বায়ুদূষণের অশুভ প্রতিক্রিয়ায় মানুষ প্রতিনিয়ত শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ফুসফুস ক্যান্সার ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জনসংখ্যার চাপে যানবাহন বৃদ্ধি পাওয়ায় গত কয়েক বছরে ঢাকার বায়ুদূষণ মারাত্দক আকার ধারণ করেছে। ঢাকার পানি এখন ভয়াবহ দূষণের শিকার। নদী ও প্রাকৃতিক জলাশয়ে শিল্পবর্জ্য ফেলার পরিণতিতে তা ব্যবহারের অযোগ্য। মাটি দূষণেও এটি অবদান রাখছে। বায়ুদূষণের বিষাক্ত ছোবল পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলছে। বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদন মতে, ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি। প্রতি কিউবিক মিটারে এয়ার বোর্ন পার্টিকুলেট ম্যাটারের পরিমাণ এ শহরে ২৫০ মাইক্রোগ্রাম, যেখানে সহনীয় মাত্রা ৫০ মাইক্রোগ্রাম। বর্তমানে সিসাযুক্ত পেট্রল আমদানি ও দুই স্ট্রোক ইঞ্জিনবিশিষ্ট বেবিট্যাঙ্ িচলাচল বন্ধ করার পরও বায়ুদূষণ প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। ফিটনেস ও কালো ধোঁয়ার সহনীয় মাত্রা পরীক্ষা ছাড়াই ঢাকার রাস্তায় প্রতিদিন ঢুকছে বহু ট্রাক। এসব যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া বাতাসকে বিষিয়ে তুলছে। বিশেষ করে ঢাকার পাশেই নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, সাভার, ধামরাই, টঙ্গী, যাত্রাবাড়ী, লালবাগ ও হাজারীবাগে শিল্প-কারখানা অবস্থানের কারণে আশঙ্কাজনক হারে বায়ুদূষণ হচ্ছে। বায়ুদূষণ রাজধানীর দেড় কোটি মানুষের অস্তিত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। নিজেদের স্বার্থেই এ বিপদ মোকাবিলায় ত্বরিত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এ ব্যাপারে সরকার ও পরিবেশ সংগঠনই শুধু নয়, নাগরিকদেরও উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.