ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে নিজেদের নাম লেখাতে সবচেয়ে বেশি দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন হাইব্রিড নেতারা। তাদের সমর্থকদের ঘিরে সরগম হয়ে উঠছে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। পদপ্রত্যাশী এসব হাইব্রিড নেতা নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শোডাউন করছেন। লক্ষ্য একটাই- মহানগরের শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তবে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বিশেষ করে তরুণ সংগঠকরাও দলবল নিয়ে পার্টি অফিসে আনাগোনা করছেন সকাল-সন্ধ্যা।
গত কয়েকদিন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানার সম্মেলন শুরু হয়। ৪৯টি সাংগঠনিক থানার মধ্যে এ পর্যন্ত ৪২টি থানার সব ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে সম্মেলন শেষ হয়েছে। সম্মেলন সম্পন্ন হলেও কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বাকি ৭টি থানার সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
থানা কমিটি ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ওয়ার্ড, ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করবে মহানগর কমিটি। যেসব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানায় সম্মেলন হয়েছে সেসব কমিটিতে স্থান পেতে সম্ভাব্য পদপ্রত্যাশী নেতারা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখন দলীয় কার্যালয়ে নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন। তবে খোদ মহানগরের দায়িত্বে থাকা শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, বিগত দিনে রাজপথের সক্রিয় কর্মীর চেয়ে হাইব্রিড নেতাদেরই আনাগোনা বেড়েছে দলীয় কার্যালয়ে। তারা জানান, নগরের প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটিতে কোনো হাইব্রিড নেতার স্থান হবে না।
পরীক্ষিত ও ত্যাগী, সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন এবং ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।
গতকাল সরেজমিন কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, কামরাঙ্গীচর, শাহজাহানপুর, মতিঝিল, শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ পদপ্রত্যাশী নেতারা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বসে আছেন। কামরাঙ্গীরচর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের সম্মেলন শেষ হয়েছে বেশ কয়েকদিন আগে। এখন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আসছি লিডারদের সঙ্গে দেখা করতে। বিগত দিনে রাজপথে যেমন সক্রিয় ছিলাম, আগামীতেও থাকব।
সে বিবেচনায় কাঙ্ক্ষিত পদ তিনি পাবেন বলেও জানান। পদপ্রত্যাশী নেতাদের পদচারণা বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি বেড়েছে দলীয় কার্যালয়ের সামনের চা ও ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে। এক চা দোকানি জানান, গত এক মাস ধরে কেনাবেচা অনেক বেড়ে গেছে। দলীয় সূত্রমতে, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ৪৯টি সাংগঠনিক থানা কমিটি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা দিলেও মহানগর আওয়ামী লীগের মতামত নিয়েই তা করা হবে। এ ক্ষেত্রে মহানগর নেতাদের ইচ্ছাকেই প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে।
সে কারণেই মহানগর আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পদপ্রত্যাশীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মাঠের নেতাদেরই থানা ও ওয়ার্ডের দায়িত্বে বসানো হবে। উড়ে এসে জুড়ে বসার কোনো সুযোগ নেই। ত্যাগী ও দক্ষ ব্যক্তিকেই কমিটিতে স্থান দেওয়া হবে। সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, দক্ষ, ত্যাগী এবং দলের জন্য নিবেদিত কর্মীদেরই নতুন কমিটিতে আনা হবে।
বিগত দিনের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করেই কমিটি প্রস্তুত করা হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।