বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের খেলার মধ্যে দিয়ে রবিবার টি-২০ বিশ্বকাপের পর্দা উঠছে। আয়োজনকে সফল করে তুলতে ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রস্তুতির পুরো কাজ সম্পন্ন করে রেখেছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে পুরুষ ও সিলেটে মহিলাদের টি-২০ বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে। ২০১১ সালে ভারত আর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মূল বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল ঢাকা।
অনেকের মতে বিশ্বের কোনো ক্রীড়ানুষ্ঠানে এত সুন্দর উদ্বোধন আর কখনো হয়নি। শুধু উদ্বোধন বললে ভুল হবে, বিশ্বকাপের যে ক'টি ম্যাচ বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয় সেখানেও ছিল চোখে পড়ার মতো শৃঙ্খলা। অনেকে তাই আশা করছেন টি-২০ বিশ্বকাপও স্বার্থকভাবে সম্পন্ন হবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলো ইতোমধ্যে ঢাকা আসতে শুরু করেছে। প্রস্তুতি ম্যাচও শুরু হয়ে গেছে।
আসরকে জমজমাট করে তুলতে গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মনোমুঙ্কর কনসার্টের আয়োজন হয়। ক'দিন আগে শেষ হয়েছে জমজমাট এশিয়া কাপ। রবিবার থেকে বসছে টি-২০ বিশ্বকাপ। ক্রিকেটকে ঘিরে পুরো দেশই উৎসবে ভাসছে।
বাংলাদেশের মানুষ খেলাপাগল।
তাই এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কোনো ক্রীড়ানুষ্ঠানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শৃঙ্খলার কারণে ভারত চাচ্ছে আইএপিএলের কিছু ম্যাচ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হোক। তারপরও সরকার সতর্ক, টি-২০ বিশ্বকাপে যেন কোনোভাবে শান্তি বিঘ্নিত না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখছে। র্যাব, পুলিশ, আনসার এমনকি প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে নিরাপত্তা টিম মোতায়েন করা হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে এখন থেকে শুরু হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষীদের টহল।
স্টেডিয়াম, বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিকমানের হোটেল ছাড়াও শহরে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি দলের সঙ্গে থাকছে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা। টি-২০ বিশ্বকাপ উপলক্ষে কি ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর থেকে জানা গেছে এর আগে বাংলাদেশে কোনো আন্তর্জাতিক ক্রীড়ানুষ্ঠানে এমনভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নিরাপত্তার জন্য হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হবে।
এত গেল শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নিরাপত্তার দিক। টি-২০ ম্যাচে জুয়াড়িরা যেন কোনোভাবে ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন সেদিকেও কড়া নজর রাখা হচ্ছে। এ জন্য গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষ একটি দলকে কাজে লাগানো হবে। ক্রিকেটে ইদানীং টি-২০ আসরে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে স্পট ফিক্সিংটা বেশি হয়ে থাকে। আর বিশ্বকাপ উপলক্ষে প্রচুর জুয়াড়িদের আগমন ঘটে।
টি-২০ বিশ্বকাপ চলা অবস্থায় বাংলাদেশে কারা আসছে এদিকটাও গুরুত্ব সহকারে দেখছে গোয়েন্দা সংস্থা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান ও ভারতীয় নাগরিকদের প্রতি আলাদাভাবে নজর রাখা হবে। কেননা ক্রিকেটে জুয়াড়িরা সাধারণত এ সব দেশের হয়ে থাকে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিমাবন্দরে গোয়েন্দা সংস্থার বুথও খোলা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে আসা বিভিন্ন নাগরিকের তালিকাও গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে।
গোয়েন্দারা লক্ষ্য রাখবেন কোন কোন ক্রিকেটার হোটেল বা বাইরে কার সঙ্গে আলাপ করছেন। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত হতে পারেন এমন বেশ ক'জন ক্রিকেটাকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে নাকি পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের নাম শীর্ষে রয়েছে। তারপর ভারত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া এমনকি বাংলাদেশের তালিকা তৈরি হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার কাজ হবে ২৪ ঘণ্টা এদেরকে কড়া নজরদারিতে রাখা।
জানা গেছে অতীতে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে অভিযুক্তকারী ক্রিকেটারদের পেছনে সাদা পোশাকধারী নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকবেন। কোন ক্রিকেটার কাকে অটোগ্রাফ দিচ্ছে বা ভক্ত পরিচয়ে কারা হোটেলে দেখা করতে চাচ্ছেন সেদিকেও নজর রাখা হবে। বিসিবি বা দূতবাস ছাড়া টি-২০ বিশ্বকাপ চলা অবস্থায় ক্রিকেটারদের সব রকম নিমন্ত্রণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু ক্রিকেটাররা নয় বিশেষভাবে আমন্ত্রিত সাবেক ক্রিকেটব্যক্তিত্ব্ব ও ধারাভাষ্যকারদেরও নজরে রাখা হবে। এই তালিকা থেকে আম্পায়ারাও বাদ যাচ্ছেন না।
গোয়েন্দা সংস্থা সন্দেহ মনে করলেই জিজ্ঞাসাবাদ এমনকি গ্রেফতারেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।