যা অনুভব করি,তা বিশ্বাস করি...আর,যা বিশ্বাস করি...তা অনুভব করতে জানি...
প্রিয়তমেষু,
কেমন থাকো আজকাল?তোমার ব্যস্তদিনের চায়ের কাপ কি মনে রাখে সকাল-চড়ুই?
শেষ কবে চলতিপথে মন্থর পায়ে ঘাসফড়িঙের ডানায় সন্ধ্যা নেমেছিল,মনে নেই। ঠিক কোন বিকেলের কনে-দেখা রোদের আভা চোখজোড়া বিষাদময় করে দিয়েছিল বিদায়-বেলা,ভুলে গেছি সেটাও! চশমার কাঁচগুলো কারো পাঞ্জাবির প্রান্তের স্পর্শের অপেক্ষায় ধূলো জমে দৃষ্টি ঝাপসা করে রেখেছে সে ও অনেকটা সময় হলো! কুপিবাতি জ্বালানো টংয়ের দোকানের র' চায়ের লোভে কাঁচঘেরা কফিশপের ক্যাপুচিনো আমার বড্ড বিস্বাদ লাগতে শুরু করেছে! চারুকলার সামনের চুড়িওয়ালা খালা অনেক দিন আমাদের লাল-নীল চুড়ির খুনসুঁটি দেখেনি!
জানি,চোখের জল বড্ড স্বার্থপর!তবু,অনুযোগ,অভিযোগ,অভিমানে কোথাও না কোথাও অতল জলের ভালোবাসাই তো রাত জেগে থাকে!
একটা গল্প শুনবে?
বেলিফুল ভালোবাসা মেয়েটা খুব ভায়োলিন বাজাতে চাইতো,এখন হয়তো মাসেও একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত গুণগুণ করে না ঘুণপোকায় খাওয়া মাঝরাতে!
ছেলেটা আড্ডাপ্রিয়,বন্ধুদের সাথে হৈচৈ করে বার্সার ম্যাচ নিয়ে যে চায়ের কাপে ঝড় তুলতো,তার ব্যস্ততার কাছে বাকি পৃথিবী হঠাৎ অস্পৃশ্য লাগতে শুরু করে!
তবু,ভিন্ন দুই ছাদ আর অভিন্ন এক আকাশের নিচে বিপরীত মেরুর দুই সত্ত্বা ফ্রন্টাল কর্টেক্সের অদৃশ্য ষড়যন্ত্রে এক অদ্ভুত শহরবন্দী হয়ে যায়! যে শহরে ভালোবাসার মেঘ জানালা দিয়ে পালাবার পরও শূণ্য চিলেকোঠায় দুজন একই বৃষ্টিবন্দী হয়ে বাঁচে!
ঘুমপরী ডাকছে বুঝি? ফাগুনের শেষরাতের কুয়াশার মতো রাতঘুম নেমে গেছে এখন,তোমার চোখের বারান্দায়।
আর আমি বরাবরই নৈশপ্রহরীর মতো স্বার্থপর ঘুমের অপেক্ষায়।
আজ কেন যেন মন খারাপের মেঘ নেই,চাদরজুড়ে নেই ঠাসবুননের অভিমান। দুঃখবিলাসের সাথে কত সহস্র ম্যারাথন স্প্রিন্ট জিতেও শ্রান্ত আমি হাসতে শিখে গেছি!চোখের তারায় চিকচিকে সকালের অনুরণনে,গুণতে শিখে গেছি,রোদের ফোঁটা!
জেনে গেছি,আলোকবর্ষ দূরত্ব পার হলেই কতোটা কাছাকাছি মুঠোবন্দী হাতে ভালোবাসা বেঁচে থাকে!
খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যেস তোমার জানি।
সদ্য ঘুম ভাঙা চোখে আরশিতে মুখ দেখার আগেই
জানালার শার্সিতে
নরম রোদের আনাগোণা দেখো খুব মনোযোগ দিয়ে।
কতোদিন ঐ কুসুম-রঙা রোদকে মুঠোবন্দি করতে চেয়েছি
তোমার চোখ ছুঁয়ে দেবার আজন্ম সলজ্জ্ব সাধে!
ভুলতে ভুলতে মনে পড়ে যাওয়া চৈত্রের কোনও বিকেলে
নিচের দিকে তাকিয়ে কী ভীষণ চিন্তামগ্ন হয়ে হাঁটছিলে!
ফুটপাথ ধরে হাঁটতে থাকা আমায় দেখে এড়িয়ে যেতেও পারতে!
তার বদলে বহুদিনের
পরিচিত একটা হাসি দেখলাম তোমার ঠোঁটের কোণে।
সাদাসিধে অগোছালো আমার সাদামাটা চোখ দুটোতে
ঐ এক মুহূর্তের কালবৈশাখি
যে নিবিড় জলবন্দনা এঁকে গেছে,
তা থেকে বাঁচবার চেষ্টা করিনি বহুকাল!
কুসংস্কারে কখনো বিশ্বাস করতে মন সায় দেয়নি,
তবু,শেষ রাতে পুবের আকাশে তারা-খসে গেলে
সবার অলক্ষে তোমার বন্ধ চোখে শিশুর মতো প্রার্থনায়
ভীষণ গভীরে নিমজ্জিত হতে দেখেছি আমার স্বপ্নগুলোকে!
এই ব্যস্ত শহরের কিউপিডগুলো বুঝি সব মেঘের ওপারেই
ঘুমিয়ে পড়েছে!
আমাদের শরবিদ্ধ করবার অপেক্ষায় না থেকেই!
ভালো থেকো প্রিয়তমেষু! ভালোবাসায় থেকো!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।