পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র মামলায় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গ্রেপ্তার হওয়া অপরজন হলেন সেতুর নির্মাণ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যসচিব কাজী মো. ফেরদাউস।
দুদকের কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন এ দুজনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রথম আলো ডটকমকে নিশ্চিত করেন।
দুদকের পরিচালক উইং কমান্ডার মো. তাহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলো ডটকমকে জানান, আজ বুধবার বেলা একটা ৫০ মিনিটের দিকে র্যাবের সহযোগিতায় শাহবাগ এলাকা থেকে দুদক এ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দুদক কার্যালয়ে নিয়ে আসা হবে।
আজ এ দুজনের আগাম জামিন আবেদন হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ছিল। কিন্তু বিচারপতি কাজী মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি কাজী মো. ইজহারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ আবেদন দুটি নিয়মিত বেঞ্চে উপস্থাপন করতে বলেন। পরে আদালত থেকে ফেরার পথে শাহবাগ থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বুধবার মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও কাজী মো. ফেরদাউস হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আগাম জামিনের আবেদন করেন। আজ উচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় আবেদন দুটি ৯৪ ও ৯৫ ক্রমিক নম্বরে ছিল।
আদালত সূত্র জানায়, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিক-উল হক ওই দুই আবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন। আদালত আবেদন দুটি নিয়মিত বেঞ্চে দাখিল করার কথা বলেন।
এ সময় আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুমিন ফারহানা এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। এর আগে সকালে সংশ্লিষ্ট দুই আসামি আদালত অঙ্গনে আসেন বলে জানা যায়।
আইনজীবী রুমিন ফারহানা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, জামিন আবেদন দুটি নিয়মিত বেঞ্চে দাখিল করার কথা বলেছেন আদালত।
আগামী ২ জানুয়ারি আদালত খুলবে। তখন আবেদন দুটি নিয়মিত বেঞ্চে দাখিল করা হবে। আবেদনকারী দুজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।
১৭ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন এই দুজনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেন। দুদকের জ্যেষ্ঠ উপপরিচালক ও অনুসন্ধান দলের প্রধান আবদুল্লাহ আল জাহিদ বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলাটি করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন: সড়ক ও জনপথের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী রিয়াজ আহমেদ জাবের, এসএনসি-লাভালিনের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইল, আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ এবং এসএনসি-লাভালিনের স্থানীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড প্ল্যানিং কনসালট্যান্ট কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোস্তফা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘একে অপরকে আর্থিকভাবে লাভবান করার অসত্ অভিপ্রায়ে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিধিবিধান ভঙ্গ করে ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম তারা পরিচালনা করেছে। এর মাধ্যমে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্মাণকাজে নির্মাণ তদারকি পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম দরদাতা এসএনসি-লাভালিন ইন্টারন্যাশনাল ইনকরপোরেটকে কার্যাদেশ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা তারা করেছে। এই কাজ দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা অনুযায়ী অপরাধ করার অভিপ্রায়ে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র। এ ধরনের ষড়যন্ত্র দণ্ডবিধির ১২০(বি) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
’ আরও বলা হয়, ‘নির্মাণ তদারকি পরামর্শক হিসেবে এসএনসি-লাভালিন কার্যাদেশ পেলে ঘুষ লেনদেন সম্পন্ন হতো। ’ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।