ফারাক্কার গেট ভেঙে যাওয়ার নাম করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশকে পানি দিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগে এক নির্বাচনী জনসভায় কংগ্রেসকে আক্রমণ করে তিনি বলেন 'রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে পরিকল্পনা করেই কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার নীচ থেকে সব পানি বাংলাদেশকে দিয়ে দিচ্ছে। মমতার বক্তব্য- রাজ্যের সম্মতি নিয়ে চুক্তি করে বাংলাদেশকে পানি ছাড়া হলে কোন আপত্তি নেই, কিন্তু যেভাবে রাজ্যকে অগোচরে রেখে প্রতিবেশী দেশকে পানি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না।
মমতার বলেন, 'আমরা বাংলাদেশকে খুব ভালবাসি। বাংলাদেশ থেকে যখন উদ্বাস্তুরা এপার বাংলায় আসে আমরা তাদের নিজেদের আপনজন বলে মনে করেছি।
তাদের জন্য আমি আন্দোলন করেছি। উদ্বাস্তু আন্দোলনের নিঃশর্ত জমির দলিল আমিই দিয়েছি সবাইকে। '
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পনা করেই গেট ভেঙে দিয়েছে। এতে তিন মাস ফারাক্কার পানি চলে গেল। গঙ্গা শুকিয়ে দিল, বন্দর শুকিয়ে দিল।
বন্দর শুকিয়ে গেলে শিল্পও বন্ধ হয়ে যায়। পানি শুকিয়ে গেলে মানুষ চাষের পানি, খাওয়ার পানি পাবে না। এটা বোঝবার ক্ষমতা কংগ্রেসের নেতাদের ছিল না।
উল্লেখ্য, তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে আপত্তি থাকার কারণেই ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় মনমোহনের সফরসঙ্গী হননি মমতা। সে সময় তিস্তা পানি বন্টন চুক্তির খসড়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।
তার মতে তিস্তা চুক্তিতে রাজ্যের স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে না। মমতা বলেছিলেন গ্রীষ্মের সময় তিস্তা থেকে ২৫ হাজার কিউসেকের বেশি পানি বাংলাদেশকে দেওয়া সম্ভব নয়। এর বেশি পানি দিলে বাংলাদেশের সমস্যা মেটাতে গিয়ে বঞ্চিত হবে উত্তরবঙ্গ। এর প্রভাব পড়বে গোটা পশ্চিমবঙ্গে। আর এই কারণ দেখিয়ে শেষ মূহুর্তে তিস্তা চুক্তি থেকে সরে আসেন মমতা।
এতে অস্বস্তিতে পড়েন মনমোহন সিং। হতাশ হয় প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বিরোধী দল বিএনপি-র সমালাচনার মুখে পড়তে হয়। এরপর বাংলাদেশের তরফে বার বার এই চুক্তি সাক্ষরে চাপ দেওয়া হয় ভারতকে। গত আড়াই বছর ধরে ভারতের তরফে দফায় দফায় চেষ্টা করা হলেও মমতা তার সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।