রোগী মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় রাজশাহী নগরের ডলফিন ক্লিনিকের মালিককে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে নগরের সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে অনেক রোগী এসব হাসপাতাল ছেড়েছে। সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসাসেবাও বন্ধ।
কারাগারে পাঠানো ওই ক্লিনিকের মালিক শামিউল উদ্দিন আহম্মেদ জেলা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
আদালত সূত্র জানায়, দুপুরে রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক বিশ্বনাথ চন্দ্র মণ্ডল রোগী মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে শামিউল উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে পুনঃ তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শামিউল উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদে বিকেল চারটা থেকে নগরের সব বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে অনেক রোগী বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ছেড়ে চলে যায়। আবার অনেকে এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিতে এসে সেবা না পেয়ে ফেরত যায়। রোগনির্ণয় কেন্দ্রে এসেও রোগীরা চিকিৎসক দেখাতে না পেরে ফিরে যায়।
রাত সাড়ে সাতটায় নগরের একটি ক্লিনিকে সংবাদ সম্মেলন করে বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এতে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য দেন বিএমএ রাজশাহীর সভাপতি এস আর তরফদার।
সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেওয়া হয়, শামিউল উদ্দিন মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত নগরের সব ধরনের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগও বন্ধ থাকবে। শুধু বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।
চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট সব সংগঠন এই কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শেখটোলা গ্রামের আজগর আলীর ছেলে ব্যবসায়ী আনোয়ারুল হককে (৩৫) পিটিয়ে পা ভেঙে দেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। ২৯ জানুয়ারি শামিউল উদ্দিনের ডলফিন ক্লিনিকে তাঁকে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার করার জন্য চেতনানাশক ইনজেকশন দেওয়া হয়। এর পরই তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ওই রাতেই ভুল চিকিৎসায় স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ এনে ক্লিনিকের মালিকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন আনোয়ারুলের স্ত্রী শারমিন আক্তার। মামলাটি তদন্ত করে ১ মার্চ বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুল ইসলাম চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিনি আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করেন।
এর আগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুর্ঘটনাবশত আনোয়ারুল মারা যান বলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জোবাইদুর রহমান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।