আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মামলার জালে হলমার্কের টাকা উদ্ধার অনিশ্চিত

২৬ মামলার জালে পড়ে হলমার্কের কাছ থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। হলমার্ক গ্রুপের কাছ থেকে ৪১০ কোটি টাকা পেয়েছে সোনালী ব্যাংক। বাকি ২ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা আদায়ে কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছে না তারা। এর মধ্যে মাত্র ২২ কোটি টাকা আদায়ের জন্য হলমার্কের ৩টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে তিনটি মামলা করেছে সোনালী ব্যাংক। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চলছে আরও ২৩টি মামলার কার্যক্রম।

দুদকের এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে জালিয়াতির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে। এসব মামলার সঙ্গে টাকা উদ্ধারের কোনো সম্পর্ক নেই।

এই প্রক্রিয়ায় টাকা উদ্ধারকে দীর্ঘসূত্রিতার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন শীর্ষ ব্যাংকাররা। তারা বলেছেন, মামলার মাধ্যমে টাকা উদ্ধার প্রক্রিয়াকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে টাকা আদায়ে আদালতে উপস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ নেই সোনালী ব্যাংকের হাতে।

জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা তুলে নেওয়ার কারণে সোনালী ব্যাংকের কাছে দলিলাদি নেই। তবে এ মামলা নিষ্পত্তি হলে মাত্র ২২ কোটি টাকা পাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। অথচ সোনালী ব্যাংক থেকে হলমার্কের আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে, বোর্ডের সিদ্ধান্তে মামলা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রয়ে আরও মামলা করা হবে।

সময় দীর্ঘায়িত হলেও মামলার মাধ্যমেই টাকা উদ্ধার করা সম্ভব বলে মনে করে ব্যাংকটি।

এ প্রসঙ্গে জানতে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রদীপ কুমার দত্ত বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রথমদিকে মনে করা হয়েছিল সমঝোতার মাধ্যমে টাকা আদায় করা যাবে। পরবর্তীতে হলমার্ক গ্রুপের সম্পত্তি নিলামে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তাতেও সাড়া মেলেনি। ফলে সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তক্রমে অর্থঋণ আদালতে মামলা করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত হলমার্ক গ্রুপের কাছ থেকে ৪১০ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মামলার মাধ্যমে টাকা আদায়ের নিশ্চয়তার ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ছাড়া আর কী করা আছে। এদিকে সোনালী ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় অর্থঋণ আদালতে মামলা করাতে তা শুধু সময়ক্ষেপণ আর টাকা উদ্ধার প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িতই করবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, অর্থঋণ আদালতে মামলার মাধ্যমে কখনই টাকা আদায় প্রক্রিয়া সহজসাধ্য নয়। হলমার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে টাকা আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

পাশাপাশি হলমার্ক গ্রুপের অনুকূলে থাকা সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা জাতীয়করণ করে ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করা যেতে পারে বলে মনে করেন তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অর্থঋণ আদালতে মামলার মাধ্যমে টাকা উদ্ধার প্রক্রিয়াকে ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। এটা লোক দেখানো ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করেন তিনি। হলমার্কের মালিকানায় থাকা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দীন আহমদ বলেছেন, এর মাধ্যমে শুধু টাকা উদ্ধার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িতই হবে কিন্তু টাকা তুলতে হলে সমঝোতার মাধ্যমে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, এটা কোনো ঋণ জালিয়াতি নয়। এটা হচ্ছে স্রেফ একটা প্রতারণা, জালিয়াতি। সোনালী ব্যাংক মামলা করলেও আদালতে তথ্য-প্রমাণ দাখিল করতে পারবে না। কেননা এটা কোনো ঋণ নয়। ফলে ব্যাংকের কাছে কোনো দালিলাদিও নেই।

যা আদালতে উপস্থাপন করতে পারবে। এ জন্য মামলা করেও টাকা তুলতে পারবে না।

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.