ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়ে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে দেশটির পররাষ্ট্রনীতি কেমন হবে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে নানা আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। এখনো পররাষ্ট্রনীতি প্রকাশ করেনি বিজেপি। তবে সীমান্তবিরোধ, সন্ত্রাসবাদসহ বিভিন্ন বিষয়ে চীন, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে মোদি সরকার আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে পারে।
আজ রোববার বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিজেপির নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মোদির দুই ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করে এ আভাস দিয়েছেন। আগামী ৭ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচন শুরু হবে।
পাঁচ সপ্তাহ ধরে নির্বাচন চলবে। বিভিন্ন জনমত জরিপে মোদিকে এগিয়ে রাখা হচ্ছে।
নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হওয়ার আগেই প্রতিবেশী চীন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মনোভাব ব্যক্ত করেছেন মোদি।
সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারের সময় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বেইজিংকে তার সম্প্রসারণবাদী মনোভাবের লাগাম টেনে ধরতে বলেছেন বিজেপির এই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী। এ ছাড়া ভারতের ভেতরে জঙ্গি তত্পরতা চালানোর অভিযোগে অতীতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও হুংকার তুলেছেন মোদি।
চীনের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ অরুণাচল প্রদেশে গত মাসে এক সমাবেশে মোদি বলেন, ‘মাটির নামে শপথ করেছি, দেশ রক্ষা করব। ’
ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কংগ্রেসের নীতিকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করে আসছে বিজেপি।
ওই দুই উপদেষ্টা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করবেন মোদি। এতে দেশটির অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও আঞ্চলিক উত্তেজনার বিষয় গুরুত্ব পাবে।
এক উপদেষ্টা বলেছেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হবে অর্থনীতিনির্ভর।
ভারতের অর্থনীতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে, যাতে আমরা অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের নিজস্ব শর্তে কাজ করতে পারি। ’
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গুজরাটের অর্থনীতিকে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছেন মোদি। সেখানে তিনি চীনা বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তবে উপদেষ্টাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদি ভারতের নিরাপত্তার স্বার্থ রক্ষা এবং চীনের সঙ্গে বেড়ে চলা অর্থনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে সমন্বয় করার একটি পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন।
এখন পর্যন্ত মোদি তাঁর পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য স্পষ্ট করেননি।
তবে তিনি বিজেপির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করেছেন। ১৯৯৮ সালে বেশ কয়েকটি পারমাণবিক পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন বাজপেয়ী।
বিজেপির এক উপদেষ্টার ভাষ্য, নতুন প্রধানমন্ত্রী যে দুর্বল নন, চীন তা অনুধাবন করবে। আগ্রাসীভাবে তারা কোনো কিছুই করতে পারবে না।
ভারতের দাবি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিরোধপূর্ণ সীমান্তে কয়েক শ বার অনুপ্রবেশ করেছে চীন।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেইজিং। এ ছাড়া চীনের বেশ কিছু তত্পরতায় উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। এর মধ্যে রয়েছে ভারত মহাসাগরে চীনের আগ্রাসী উপস্থিতি, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের চট্টগ্রামে সমুদ্রবন্দর নির্মাণের তোড়জোড়।
নাম প্রকাশ না করে ওই দুই উপদেষ্টা জানিয়েছেন, মোদি প্রধানমন্ত্রী হলে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সে দেশের মৌলিক নিরাপত্তার স্বার্থ নির্ধারণে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।
মোদির পররাষ্ট্রনীতি প্রসঙ্গে এক উপদেষ্টার ভাষ্য, ‘সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে আপনারা অধিক জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে পারবেন।
এটা বেশ কড়া হবে। ’
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।