আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আওয়ামী লীগের জয় বেড়েছে সহিংসতায়

উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থীর সংখ্যাও। প্রথম দুই ধাপে বিএনপি এগিয়ে থাকলেও তৃতীয় ধাপের পর থেকে ফলাফলে পিছিয়ে পড়ে বিএনপি। বর্তমানের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মাত্র তিনটি উপজেলায় বিজয়ী হলেও ১৮ দলের শরিক জামায়াতে ইসলামী ৩৬টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়। একইসঙ্গে প্রথম ধাপে ৬৫ কেন্দ্র, দ্বিতীয় ধাপে ১০০ কেন্দ্র, তৃতীয় ধাপে ২০০ কেন্দ্র, চতুর্থ ধাপে চার শতাধিক ও পঞ্চম ধাপেও প্রায় পাঁচ শতাধিক কেন্দ্রে দখল ও অনিয়মের ঘটনা ঘটে। এছাড়া প্রশাসনের কর্মকর্তারাও শেষ ধাপে ব্যালটে সিল মেরেছেন বলে ইসিতে অভিযোগ এসেছে।

নির্বাচনী সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১২ জন মারা গেছেন। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পাঁচ ধাপের ৪৫৮ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে মোট ২৩১ উপজেলায়। বিএনপি ১৬৩টি, জামায়াত ৩৬টি জাতীয় পার্টি ৩ ও এলডিপি ১, স্বতন্ত্রসহ অন্যান্য উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৯৮ উপজেলার মধ্যে ৪৫টিতে বিএনপি, ১২টিতে জামায়াত ও ৩৫টিতে আওয়ামী লীগ- জাতীয় পার্টির একজন, স্বতন্ত্র ১ ও অন্যান্য ৪ জন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় ১১৫টি উপজেলার মধ্যে বিএনপি ৫২, আওয়ামী লীগ ৪৬টি ও জামায়াতের প্রার্থীরা আটটিতে অন্যান্য  নয়জন বিজয়ী হয়েছেন।

তৃতীয় দফায় এসে আওয়ামী লীগ বিএনপির চেয়ে এগিয়ে যায়। এ দফায় ৮১টি উপজেলার মধ্যে ৪১টিতে আওয়ামী লীগ, ২৯টিতে বিএনপি ও আটটিতে জামায়াত ও অন্যান্য ৩টিতে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়। চতুর্থ দফায় ৯১ উপজেলার মধ্যে ৫৫টিতে আওয়ামী লীগ, ২৪টিতে বিএনপি ও পাঁচটিতে জামায়াত ও ৭টিতে অন্যান্য প্রার্থীরা বিজয়ী হন। চার পর্বে জাতীয় পার্টি প্রার্থী মাত্র তিনটি উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পঞ্চম তথা শেষ ধাপে ৭৩টি উপজেলার মধ্যে আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৫৪টি, বিএনপি ১৩ জামায়াত ৩ ও অন্যান্য ৩টিতে বিজয়ী হয়েছেন।

নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, প্রথম দুই ধাপের বিএনপি এগিয়ে থাকলেও সহিংসতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা ‘নিরঙ্কুশ বিজয়’ পেয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় ধাপের পরে উপজেলায় দলীয় লোকদের বিজয়ী করার জন্য নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠপর্যায়কে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেন। কয়েকজন মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতা প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তাদের ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয় করেই দলের মান রক্ষা করেন।

পঞ্চম ধাপে ভোট পড়েছে ৬১ শতাংশ : পঞ্চম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত  সোমবার দেশের ৩৪ জেলার ৭৩ উপজেলায় ভোট হয়। তবে প্রথম থেকে পঞ্চম পর্ব মিলিয়ে এ উপজেলা নির্বাচনে গড়ে ৬১ শতাংশ ভোট পড়ে। তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৭ শতাংশ। শেষ ধাপে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৯১ হাজার ৯৯২ জন ভোটারের মধ্যে ৮৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫০৯ জন ভোট দিয়েছে।

ভোট বাতিল হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ১১২টি। এ পর্বে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় ৮৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। সর্বনিম্ন ভোট পড়ে ময়মনসিংহের ত্রিশালে ৪৪ দশমিক ২২ শতাংশ। উপজেলা নির্বাচনে প্রথম থেকে তৃতীয় পর্ব পর্যন্ত ভোটের হার টানা বাড়লেও তাতে ছেদ ঘটেছে চতুর্থ পর্বে। চতুর্থ পর্বে ৯১ উপজেলায় নির্বাচনে ৫৬ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট পড়ে।

এর আগে প্রথম পর্বে ৯৭ উপজেলায় ৬২ দশমিক ৪৪ শতাংশ, দ্বিতীয় পর্বে ১১৬ উপজেলায় ৬৩ দশমিক ৩১ শতাংশ ও তৃতীয় পর্বে ৬৩ দশমিক ৫২ শতাংশ ভোট পড়েছিল। প্রথম থেকে পঞ্চম পর্ব মিলিয়ে এ উপজেলা নির্বাচনে গড়ে ৬১ শতাংশ ভোট পড়ে। তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬৭ শতাংশ। দেশের ৪৮৭ উপজেলার মধ্যে প্রথম ধাপে ৯৭ উপজেলার ভোট দিয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্বে ১১৬ উপজেলায় ২৭ ফেব্রুয়ারি, তৃতীয় পর্বে ৮১ উপজেলায় ১৫ মার্চ, চতুর্থ পর্বে ৯১ উপজেলায় ও পঞ্চম পর্বে ৭৩ উপজেলায় ভোট হয়।

এ ৫ ধাপে ৪৫৯ উপজেলায় ভোট শেষে ষষ্ঠ ধাপে ২২ উপজেলার ভোট রয়েছে। বাকি ৬টি উপজেলার মেয়াদ এখনো উত্তীর্ণ হয়নি।  

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.