শাশুড়ি-বউয়ের টক-ঝাল-তেতো-মিষ্টি সম্পর্ককে টেলিভিশনের পর্দায় এনে যিনি বিখ্যাত, সেই শাস ভি কাভি বহু থি সিরিয়ালের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানিকে বিজেপি আমেথিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিপক্ষে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। গত সোমবার গভীর রাতে বিজেপি এই ঘোষণা দিলেও রায়বেরিলিতে সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে জুতসই কাউকে পায়নি দলটি। এই আসনে কংগ্রেস নেত্রীর বিপক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অজয় আগরওয়ালকে বিজেপি মনোনয়ন দিচ্ছে।
অজয় কংগ্রেসবিরোধীই শুধু নন, বোফর্স ও স্ট্যাম্প কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে তিনি জনস্বার্থ মামলা করেও খবরের শিরোনামে এসেছিলেন। কংগ্রেসের বড় প্রার্থীদের বিপক্ষে বিজেপি প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করলেও বারানসিতে নরেন্দ্র মোদির বিপক্ষে কংগ্রেস কাকে প্রার্থী দেয়, তা স্পষ্ট নয়।
স্মৃতি ইরানি অভিনেত্রী হলেও কয়েক বছর ধরে রাজনীতিটা তিনি খুব নিষ্ঠার সঙ্গেই করছেন। ফলে বিজেপিও তাঁকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করেছে। রাজ্যসভায় তিনি দলের প্রতিদিনের মুখ। তা ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি দলের পক্ষে টিভি বিতর্কেও অংশ নেন। স্মৃতি নিজেই আমেথিতে কংগ্রেসের সহসভাপতিকে চ্যালেঞ্জ জানানোর আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
দলে মোদির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত স্মৃতিকে টিকিট দিতে বিজেপির তাই অসুবিধা হয়নি। তা ছাড়া রাজ্যসভার সদস্য বলে স্মৃতিকে রাহুলের বিপক্ষে দেওয়ায় ঝুঁকিও নেই।
আমেথিতে রাহুলকে অবশ্য প্রথম চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন আম আদমি পার্টির কবি কাম রাজনীতিক কুমার বিশ্বাস। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনেক আগেই তিনি রাহুলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন। পরে দল তাঁর সেই ইচ্ছার মর্যাদা দেয়।
সেই থেকে কুমার আমেথিতে এমনই ঘাঁটি গেড়েছেন, দিল্লি আসাই ছেড়ে দিয়েছেন।
এবার স্মৃতি ইরানিও রাহুলকে চ্যালেঞ্জ জানানোয় আমেথির লড়াইটা জমে গেল। কংগ্রেসের এক নম্বর পরিবারের বিরুদ্ধে সমাজবাদী পার্টি কোনো এক অজ্ঞাত কারণে প্রার্থী দেয় না। বহুজন সমাজ পার্টিও দিতে হয় বলেই প্রার্থী দেয়। আম আদমি পার্টি ও বিজেপির সেই দায় নেই।
ফলে ত্রিমুখী লড়াইয়ে কে জেতে, কে হারে, সেই আগ্রহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। ২০০৪ ও ২০০৯ সালে জেতা রাহুলের কাছে এবারের লড়াইটা সেই অর্থে বেশ কঠিন।
সোনিয়ার আসনে বিজেপি ভালো কোনো প্রার্থী খুঁজে পায়নি। ফলে তাঁর জন্য লড়াইটা রাহুলের মতো ততটা কঠিন নয়। বিজেপি এই আসনে যাঁকে বেছে নিল, সেই অজয় আগরওয়াল একসময় সমালোচনা করছিলেন, বিজেপি ইচ্ছা করেই সোনিয়ার বিরুদ্ধে কাউকে মনোনয়ন দিচ্ছে না।
তাঁর সমালোচনার মুখে বিজেপি সাবেক সন্ন্যাসিনী মুখ্যমন্ত্রী (মধ্যপ্রদেশ) উমা ভারতীকে রায়বেরিলির জন্য ভেবেছিল। কিন্তু তত দিনে উমা ঝাঁসিতে নির্বাচনী কাজ শুরু করে দিয়েছেন। তার ওপর সোনিয়ার সঙ্গে টক্কর দিতেও তিনি নিমরাজি। শেষ পর্যন্ত বিজেপি তাঁকে ঝাঁসির পাশাপাশি রায়বেরিলি থেকে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেয়। উমা রাজি না হওয়ায় শিকে ছিঁড়ল অজয়ের ভাগ্যে।
বড় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে শেষ চমকটা কংগ্রেস এখনো তুলে রেখেছে। বারানসিতে নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে কাকে দাঁড় করাবে, কংগ্রেস এখনো তা ঠিক করতে পারেনি। সেই অর্থে মোদির চ্যালেঞ্জার এখনো আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শহরের মুসলিম সম্প্রদায় এখনো ঠিক করতে পারেননি, মোদিকে ঠেকাতে কাকে তাঁরা বেছে নেবেন। কারাবন্দী রাজনীতিক মুখতার আনসারির ভাই সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও কংগ্রেসের কাছে একটা প্রস্তাব দিয়েছেন।
সবাই মিলে একজন প্রার্থী দিক। কংগ্রেস তাতে রাজি নয়।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।