ফসলের গান শুনাব কেবলই ম্যারি ক্রিসমাস টু এভরিবডি! জীবন দিল যে মানুষটি-এই নামের একটা বই দিয়ে আমার ছোটবেলায় হাতেখড়ি। কাহিনি হলো এক দরিদ্র হিন্দু ভদ্রলোক পাড়ার ছেলেপেলেদের ফাও বিদ্যাদান করতেন। আমিও তাঁর ছাত্র ছিলাম। বিচিত্র সে পাঠশালায় কারো কারো পাঠ্য বই, কাগজকলম, খাতাপত্র ঠিকঠাকই ছিল, কারো ছিল শ্লেটপেন্সিল, কারো আবার কঞ্চি/কাঠের কলম, কারো দোয়াতের কালি কলম। আমার খুব ভাল মনে আছে কেউ একজন একদিন কলাপাতার পিঠে খেজুর কাটা দিয়ে নামতা লেখছিল।
আরো দুচারজন ছিল শুরুতে যাদের কিছুই থাকত না। প্রথম দুচারদিন আমিও ছিলাম শেষ দলের সদস্য। তবে এই নিয়ে ঘরে গিয়ে খুব ঝামেলা করতাম। বইয়ের দাবি মেটাতেই মা যেন একদিন কোত্থেকে বইটা যোগাড় করে দিল। জীবন দিল যে মানুষটি।
মনে আছে, কভারে ক্রুশবিদ্ধ যিশুখ্রিস্টের ছবি। তৎকালিন খ্রিস্টধর্ম প্রচারকদের সহজবোধ্য বাংলা্য় লেখা বাইবেলের কাহিনি সম্বলিত ঐ বই থেকেই আমার প্রথম গুরুজি আমাকে বিদ্যাদান শুরু করেন। চ্যাপ্টারের শুরুতে একটা বর্ণ বেশ বড় করে লেখা থাকত। সেগুলো চেনানোর মধ্য দিয়েই বর্ণপরিচয় করাতে লাগলেন। সকল পাপীকে মুক্তি দিতে নিজের জীবন দিয়েছিলেন যিশুখ্রিস্ট, পরে জেনেছি আমার শিশুশিক্ষার বইটি ছিল সেই মহামানবের জীবনকাহিনিভিত্তিক।
সবধর্মেরই শিক্ষা ত্যাগ। নিজের জীবন বিপন্ন করে হলেও পরের মঙ্গল কামনাই ধর্মের মর্মবাণী। পর সে যেই হোক, যতই হোক না পাপীতাপী। সেসব পাপপুণ্যের বিচার ঈশ্বর স্বয়ং করবেন বলেই বার বার ঘোষণা করেছেন। আমাদের সমাজের ধার্মিকদের আচরণ থেকে মাঝে মাঝে মনে হয় এদের ধর্মের ভেতর সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ত্ব নাই।
অহংকার, গুয়ার্তুমি, আর অন্ধবিশ্বাসে ভরা আবর্জনার এক মহা ডাস্টবিনকেই তারা আবশ্যকীয় অবিনাশি জ্ঞানভাণ্ডার বলে মনে করে থাকেন। ধর্মের জঞ্জাল মগজ থেকে না সরাতে পারলে মানুষ কোনদিনই ঈশ্বরের সন্ধান পাবে বলে আমার বিশ্বাস হয় না।
অতি পুরনো এক সভ্যতার মানুষ দুই হাজার বারো সালের বারো বা একুশ ডিসেম্বর পৃথিবীর শেষদিন বলেই বিশ্বাস করেছে বহুকাল। সে সভ্যতার অবশিষ্ট খোলসধারীরা এখন যা ভাবছে বা বলছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্মবিশ্বাসীদের বিশ্বাসের শেষ অংক তারা প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পেলে একই ঘটনা ঘটবে।
ধর্ম আবার রাজনীতির এক উৎকৃষ্ট হাতিয়ার ইতিহাসের প্রায় সূচনালগ্ন থেকেই।
রাজনৈতিক নাট্যমঞ্চে নর্তকী হবার কারণেই ধর্মের নষ্টচরিত্র মানবতাকে এত কাতর করেছে যুগে যুগে সমাজে সমাজে।
সবধরণের বিশ্বাসকে বেশ্যাচরিত্রে রূপান্তরিত করে ক্ষমতাসীনরা সাধারণ মানুষকে যুগ যুগ ধরে গড্ডল বানিয়ে রেখেছে। সিফিলিস, গনোরিয়া কিংবা এইডস-এর মত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েও বহু মানুষ যারপর নাই সফল জীবনযাপন করছে। কারো কারো চুলকানিতে আরাম। কেউ কেউ আবার সুইসাইডাল নীতিতে বলিয়ান।
ভালবা্সাই বড় ধর্ম। মানুষের ভালবাসাই পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়েছে। আরো বাঁচাবে। কিয়ামতের দিনও। ছোটবড় সবাইকে আবারো বড়দিনের শুভেচ্ছা্।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।