আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাপে খায় বিড়ি পোলার নাম হ্যারি (প্রথম পর্ব)

-ঐ হেলাইলা তোরে না কালকে কামে আইতে কইলাম গায়ে কি চর্বি জমছে নাকি। কাম না করলে খাবি কি? কিরে কথা কসনা কেন?

নাম হেলালউদ্দিন। বয়স ২৮। পেশা মানুষের বাড়িতে যোগালি দেওয়া। এক দিন কাম করে তো পরের দিন টাকা দিয়া মৌজ মারে।

জুয়া, যাত্রা, নেশা সব কাজে এক্সপার্ট। বৌ আছিল স্বামীর স্বভাব চরিত্র ভালো না দেইখা অনেক দিন আগে বাপের বাড়িতে চইলা গেছে। হেলাইলার কোন বিকার নাই বৌ থাকলে কি আর না থাকলে কি। একদিন কাম করবো পরে মৌজ মারবো এই নীতিতে হেলাইলা বিশ্বাসী

-কিরে তোর কি হইছে কথা কি কান দিয়া ঢুকে না, না আজকে মাল বেশী টানছস।

রফিক ভাই কথা কম কউতো।

যামু না কামে আমি আর কাম করুম না হইছে। এবার যাও তুমি।

-কাম না করলে কি খাবি? সংসারে বুড়া বাপটারে আর কত না খাওাইয়া কষ্ট দিবি?

তোমার যদি আমার বাপের জন্য এতো বেশী কষ্ট লাগে তুমি যাও হেরে খাওাইয়া দিয়া আও। বেশী বকর বকর কইরো না।

-তোর মতন সন্তান যেন কোন বাপের না হয়।

কুলাঙ্গার।

এমনিতে মন খারাপ কালকে রাত্রে সব টাকা জুয়াতে হারছে। মাল ও খাইতে পারে নাই। যে বন্ধুরে এতদিন মাল খাওাইয়ছে ঐ বন্ধু ও কালকে নিজে নিজে মাল খাইছে একবার ডাক ও দেই নাই। সব শালারে দেইখা লমু, দিন একদিন আমারও হইবো তহন দেখুম তোমরা কি করো।



বৃদ্ধ আফাজুদ্দিন বয়স হইছে অনেক। শরীরটা কয়েকদিন ধইরা ভালো যাইতেছেনা কাশি আগের থেকে অনেক বাইরা গেছে। কবিরাজ কইছিলো বয়সতো অনেক হইছে আফাজ ভাই এবার বিড়ি খাওয়া বন্ধ কইরা দাও। নাইলে মইরা যাবা। আমার বাইচ্চা থাইকা হইবো কি? যা সম্পত্তি আছিল পোলাটা বিক্রি কইরা দিছে।

এমন একটা পোলা পয়দা হইছে কোন কামের না বাপরে ঠিকমতো দেখেনা, খাবার দেয় না ঠিকমতন। পোলা এমন হইবো জানলে কিছুই দিতামনা।

রফিক ভাই কাম আছে। একটা কাম দাও।

-তোরে কাম দিমু তুই না আর কাম করবিনা দুইদিন আগে কি কইলি।

মনে নাই। আমি কেন এই গ্রামের কেউ তোরে আর কাম দিবো না। যা ভাগ।

তোমাগো কামের খেতা পুরি আমি শহরে যামুগা। কাজের আবার অভাব আছে নাকি।

করলাম না গ্রামের কাম। যা টাকা দাও এই টাকায় আমার বিড়ির খরচাও উঠেনা।

-আরে যা যা তোর মতো কামচোরারে শহরে কাম দিবো কে। ঐখানে বাবুগিরি দেখাবি যা দেখা। এখন আমার সামনে দিয়ে সর।



রফিকের কথা শুইন্না হেলালের মাথা গরম হইয়া গেলো। এতো বড় অপমান আর গ্রামে থাকা যাইবোনা। যে ভাবা ঐ কাম এক কাপড়ে বাস স্ট্যান্ড এ আইসা পড়লো আইসাই শহরের বাসে উইঠা পড়লো। ঢাকায় গিয়া এবার দেখাইতে হইবো। অনেক হইছে আর না।

আমারে চিনেনা।

-ভাই কই যাইবেন?

ঢাকা যামু।

-১০০ টাকা দেন

ভাই আমার কাছে মাত্র ৬০ টাকা আছে।

-টাকা নাই তাইলে সিটে বইছস কেন। ছাঁদে যা।

ঐ ওস্তাদ বাস থামাও। টাকা নাই উনি বাবুগিরি দেখায়। সিটে বইসা যাইবো। যা ছাঁদে যা।

অপমানে গা খানা জলতাছে রফিকের এতগুলা মানুষের সামনে দিয়া তারে বাস দিয়া নামাই দিলো।

ছাদের উপর উঠাইয়া দিলো। নিজেরে খুব অক্ষম মনে হইতাছে রফিকের। সব টাকা নিয়া নিছে কন্ডাক্টারে ঢাকায় গিয়া থাকবো কই কি খাইবো এই কথা ভাবতে গা অবশ হইয়া যাইতেছে।

-ভাই মন খারাপ নাকি। আরে মিয়া মন খারাপ কইরেননা।

মন খারাপ করলে বড় হইবার পারবেন না। লন একখান বিড়ি খান। মন ভালো হইয়া যাইবো।

রফিক বিড়িটা নিলো।

-ঢাকায় কই যাইবেন।

কি কাম করেন?

জানিনা ভাই, ঢাকায় কেউ থাকেনা। কই যামু কি করমু কিছু জানিনা।

-হুম, চিন্তা কইরেন না, ভাই আছেনা আমার লগে লন একটা গতি হইয়া যাইবো।

(চলবে)।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।