একটি প্রতিষ্ঠিত অটোপার্টস কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মি. জিয়াউদ্দিন। পদটি যতটা গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কাজের ক্ষেত্রেও খুব একটা আলাদা নয়। সত্যি কথা বলতে কি, এই পদে অধিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও কোম্পানির বেশিরভাগ কাজই তাকে করতে হয় । অর্থাৎ অফিসের সর্বোচ্চ পদাধিকারীর এবং সাদামাঠা সব ধরনের কাজ করতে হয় মি. জিয়াউদ্দিনকে। কী নেই তার কাজের লিস্টে- বিদেশি ডেলিগেটদের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট, মিটিংয়ের সময় ম্যানেজ করা, এমনকি শোরুমের দেখভাল করা।
আর এর সঙ্গে তো আছেই মাঝে মাঝে ভারত, চীন, সিঙ্গাপুর অথবা দুবাইয়ে বিজনেস ট্যুরে যাওয়া, প্রেজেন্টেশন বানানো, আবার কোনো বিশেষ ক্লায়েন্টের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট- সবই সামলাতে হয় মি. জিয়াউদ্দিনকে। মাঝে মাঝে স্ত্রী ও সন্তান সাদিত ও অহনাকে নিয়েও বেরিয়ে আসতে হয় দেশের বাইরে। আরও কত কী যে অফিস আওয়ারে তাকে করতে হয় তা কাউকে বলে বোঝানো অসম্ভব। কাজে সামান্য ভুল হওয়া মানেই হাজারটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় নিজের বিবেকের কাছে। একেকদিন তো এই অমানুষিক কাজের চাপ তার কাছে 'নাইটমেয়ার' হয়ে দাঁড়ায়।
আর এর সঙ্গে তো রয়েছেই তার ছেলে সাদিত ও মেয়ে অহনার দায়িত্ব। তাদের স্কুল, হোমওয়ার্ক এবং তাদের সঙ্গে কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করা- সব মিলিয়ে মাঝে মাঝে হাঁপিয়ে ওঠে মি. জিয়াউদ্দিন। এর সঙ্গে রয়েছে স্ত্রী ও বৃদ্ধা মাকে সময় দেয়া। পরিবারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অফিসে কাজের প্রেশার সামলাতে যাদের নাজেহাল অবস্থা তাদের কাছে একটিই সলিউশন সবচেয়ে বেশি কার্যকর। তা হলো মাল্টিটাস্কিংয়ের সাহায্যে স্মার্ট ওয়ার্ক করা।
ইংরেজি 'মাল্টিটাস্কিং শব্দটির অর্থ হলো এক বিশেষ ধরনের দক্ষতা, যার সাহায্যে একাধিক কাজ একই সময়ে করা যেতে পারে। পৃথিবীজুড়ে সমীক্ষায় দেখা গেছে, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি দক্ষ মাল্টিটাস্কার। মাল্টিটাস্কিংয়ের প্রয়োজন এখন আমাদের সবার। মাল্টিটাস্কার হলেই কর্মক্ষেত্রে আপনি পরিচিত হবেন স্মার্ট ওয়ার্কার হিসেবে।
কী করবেন : স্মার্ট ওয়ার্কারের প্রথম এবং শেষ কথা হলো- গুছিয়ে কাজ করার ক্ষমতা।
প্রতিদিন অফিস ছাড়ার আগে পরের দিনের নির্দিষ্ট কাজের একটা 'টু ডু' লিস্ট করে রেখে গেলে পরের দিন কাজ শুরু করতে সুবিধা হবে। এর জন্য প্রথমেই দরকার একটি ভালো প্ল্যানার কাম ডায়েরি। প্রতিদিনের নির্দিষ্ট সময়ের পাশে অফিশিয়াল এনগেজমেন্ট প্রায়োরিটি অনুযায়ী স্পষ্ট করে লিখে নিন, যাতে কোনোভাবেই ভুলে না যান। পরেরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে করতে ওয়ার্কলিস্ট চেক করে নিন। *পরে করার জন্য কোনো কাজ ফেলে রাখবেন না।
অফিসে কাজ চলাকালীন অজস্র ফোন নম্বর বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নোট করতে হতে পারে। সমস্যা এড়াতে ফোনে কথা বলার সময় বাজে কাগজে জরুরি তথ্য লিখলেও, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফেয়ার করে লিখে নিন। *কারণে অকারণে বন্ধু-বান্ধবকে ফোন করে সময় নষ্ট করবেন না। এতে কাজের ক্ষতি হয় এবং সময়মতো কাজ শেষ করা যায় না। তাই দিনের মধ্যে একটি সময় নির্দিষ্ট করে পার্সোনাল ফোন কল করতে পারবেন।
*কাজের চাপ যতই হোক লাঞ্চ কখনো মিস করবেন না। ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে খাওয়ার সময় না থাকলে বাড়ি থেকে প্যাকেট লাঞ্চ নিয়ে আসুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।