আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব মিছে তব রঙ্গ

সমাজে উচুঁদরের মানুষেরা আরো উচুঁদরের হতে স্বচেষ্ট থাকে নীচুদরের (তাদের বিবেচনায়) মানুষদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ও হেয়কর করে তোলার মাধ্যমে। কাবিল কর্তৃক হাবিলকে তথা ভাই কর্তৃক ভাইকে হত্যার মাধ্যমে মানবজাতির মধ্যে সর্বপ্রথম হত্যাকান্ড শুরু হয়েছিল। সময়ের ব্যবধানে তার রুপ ও ধরণ পাল্টেছে। এখন লাশ আর রক্তপাত খুব সস্তা হয়ে গেছে। এক নূর হোসেনের মৃত্যু স্বৈরাচার এরশাদের পতনকে ত্বরান্বিত করলেও এখন রাতের আঁধারে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের অনেক লাশও সেরুপ প্রভাব ফেলতে পারে না।

আগে দুর্বৃত্তদের দ্বারা চুরি ডাকাতি সংঘটিত হতো রাতের আঁধারে আর এখন মুখোশে ঢাকা তথাকথিত ভদ্র ঘরের সন্তানেরাও প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে মানুষকে সাপের মত, মশা-মাছির মত পিটিয়ে মারে। বিশ্বজিতের প্রাণবধে উন্মত্ত উল্লাসে চরম বিকৃতির বহি:প্রকাশ। যারা মেরেছেন বিশ্বজিত তাদের পরিচিত নন, বন্ধু কিংবা শত্রু কিছু নন তারপরও কি নৃশংসতা।

কোন দুর্নীতিবাজ, চোর-ডাকাত,খুনী-প্রতারক যদি জনসমর্থন পায়; অধিকাংশ মানুষের ভোট তথা রায় পেয়ে নির্বাচিত হয় তবে সামষ্টিক চারিত্রিক অবক্ষয় স্পষ্ট হয়ে ওঠে। যে সমাজে খারাপ মানুষের পক্ষে গণজোয়ার নামে সেখানে নৈতিক পদস্খলন বুঝতে খুব জটিল হিসাব নিকাশ লাগেনা।

লূত (আ নবী হয়েও তার স্ত্রীকে দুশ্চরিত্রবান পাপীদের সহায়তা করা থেকে ফেরাতে পারেন নি। আদম (আ এর পুত্র হয়েও হাবিল নিজ ভাই কাবিলকে মেরেছে। ইয়াকুব (আ এর সন্তানেরা একত্রে ছোট ভাই ইউসুফ (আ-কে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছে। আসলে পরিবারের সদস্যদের স্বভাব চরিত্র ভাল না হলে সে পরিবারে সুখ শান্তি থাকে না। অক্ষমতার শাস্তি অযৌক্তিক বিড়ম্ভনা কিংবা অপ্রত্যাশিত যন্ত্রণা।



বড়ই অর্থহীন এই বোবা কান্না! ধীরে ধীরে প্রাণশক্তি নি:শেষ হওয়া, নিশ্চল দেহের নিষ্ফল প্রয়াস, কর্মহীন নিষ্ক্রিয়তা- সরবতা ভুলে পিনপন নিরবতা-চাঞ্চল্য ও কর্মব্যস্ততা ভুলে নিস্তব্দতা-সব মিলিয়ে এক ভয়ংকর পরিস্থিতির উদ্ভব। সীমাহীন প্রত্যাশার মাঝে স্বল্প প্রাপ্তি, সুখের নীড় কিংবা শান্তির ঠিকানা পাবার স্বপ্নে পাড়ি দেয়া দীর্ঘপথ, দুর্গম পথে কোন পথিকের একাকী কষ্টকর পথ চলা। একসময় থামে জীবন তরী, ভিড়ে ঘাটে, কর্মব্যস্ততা শেষ হয়ে বিশ্রামের ফুরসত মেলে। কত যে নির্ঘুম রজনী কাটিয়ে, তীব্র ব্যাথায় কুকিয়ে ওঠে, ওষ্ঠাগত প্রাণে সময় কাটিয়ে শান্তির ঘুম ঘুমাতে হয়। ছায়াদানকারী কোন বৃক্ষ না পেলে, পিপাসার্ত অবস্থায় জলদানে সক্ষম কেউ এগিয়ে না এলে অযত্নে-অবহেলায় প্রাণ নির্জীব ও নিথর হয়ে পড়ে।



জীবনের সব জটিল সমীকরণ সব সময় সহজে মিলবার নয়। উপেক্ষিত মানুষও প্রতিক্ষীত হয়ে ওঠতে পারে যদি অবস্থা বদলে যায়। পাপী গোনাহগার মানুষও জানা অজানা শত ভুলের পরও পরওয়ারদেগারের ভয়ে ক্ষমা পেতে ব্যাকুল হতে পারে। যখন চলে যাবে দূর থেকে বহু দূরে, মায়ার বাঁধনে পড়ে আসবেনা কভু ফিরে ছোট্ট এই নীড়ে। তখন রক্তের দাগও মুছে যাবে, প্রাণের উত্তাপও থেমে যাবে, স্মৃতি গুলো রয়ে যাবে, স্বপ্নগুলো ডানা মেলে উড়ে যাবে।

ভাববে সে যে কোন সুদূরে মিলিয়ে গেল, শান্তির পথ ধরে হারিয়ে গেল, নিশ্চিত সুখের ঠিকানায় পৌঁছে গেল- তা বুঝা যায় না খুব সহজে। কেউ আসে, কেউ যায়, কেউ থাকে। দিন যায় কথা থাকে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।