আর কদিন পরেই বাঙালির দরজায় কড়া নাড়বে পহেলা বৈশাখ। 'এসো হে বৈশাখ এসো এসো' চির নতুনের ডাকে পহেলা বৈশাখের ভোরে জেগে উঠবে নগর-গ্রাম-মফস্বল। উদ্দীপনা, উচ্ছ্বাস, আবেগ আর উল্লাসে সব বয়সের মানুষ বাংলা নববর্ষ বরণে জেগে উঠবে প্রাণের আনন্দে। রমনায় বর্ষবরণের প্রভাত সংগীত ও চারুকলায় মঙ্গল শোভাযাত্রার পাশাপাশি রাজপথে নাগরিকদের জটলা পহেলা বৈশাখকে করে তুলবে সুষমামণ্ডিত। পান্তার সঙ্গে ইলিশের স্বাদে বাঙালির পহেলা বৈশাখের আনন্দের ঢেউ আছড়ে পড়বে গ্রাম থেকে নগরে, শহর থেকে বন্দরে।
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদিন বৈশাখ ও বাঙালিয়ানার উন্মাদনায় মেতে উঠবে সমগ্র বাঙালি। পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে বড় মঙ্গল শোভাযাত্রাটি করে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। 'উদ্ধত কর, জাগ্রত কর, নির্ভয় কর হে'- এ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার উপকরণ তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রায় হাঁসকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বাঙালির ঐতিহ্যের যেসব খেলনা বিলুপ্ত হয়ে গেছে সেসব খেলনাকে নতুন করে তুলে ধরা হবে শোভাযাত্রায়।
এ ছাড়া থাকছে সরাচিত্র, খেলনা, পুতুল, মা ও শিশু, বাঘ, হরিণ, মাছ, মাছের ঝাঁক, মুখোশ, হাতপাখা, শখের হাঁড়ি, বিড়াল, লক্ষ্মী পেঁচাসহ আরও নানা ধরনের শিল্পকর্ম। ২০০ শিক্ষার্থী তৈরি করছেন শিল্পকর্ম ও চিত্রকর্ম। অন্যদিকে সহপাঠীদের তৈরি এসব শিল্পকর্ম ও চিত্রকর্ম বিক্রি করে মঙ্গল শোভাযাত্রায় ফান্ড তৈরিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে পাখির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা, সরার দাম ২০০ থেকে ১০০০ টাকা, বিভিন্ন চিত্রকর্মের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত, মুখোশের দাম রয়েছে ৩০০ টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। বাংলা সংস্কৃতিপ্রিয় বাঙালিদের কাছ থেকে বরাবরের মতো এবারও ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান এই আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্তরা।
রাজধানীর দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা চারুকলা প্রাঙ্গণে ছুটে আসছেন এবং শিল্পকর্ম ও চিত্রকর্ম কিনে বৈশাখ উদযাপনের মঙ্গল শোভাযাত্রার গর্বিত অংশীদার হয়ে থাকছেন।
জবিতেও ব্যাপক প্রস্তুতি : পুরান ঢাকায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে (জবি) ঘিরে সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলার জোর প্রস্তুতি চলছে। সদরঘাট, পাটুয়াটুলী, বাংলাবাজার, শাঁখারীবাজার, লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, পাতলাখান লেন, নয়াবাজার, তাঁতীবাজার ও রায়সাহেব বাজারসহ আশপাশ এলাকায় বৈশাখের ঐতিহ্য-আনন্দ ছড়ানোর দায়িত্বভার নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতি হিসেবে বাঘ, হরিণ, প্রজাপতি ও বিভিন্ন প্রজাতির মূর্তি এবং ছবি অাঁকানো শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন আর্টস বিভাগ। প্রধান ফটকেও তৈরি করা হবে দৃষ্টিনন্দন বৈশাখী গেট।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে বৈশাখী মেলা এবং কলা অনুষদ প্রাঙ্গণে বাউল সংগীত পরিবেশনের মঞ্চ তৈরি করা হবে।
বৈশাখ বরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনের ব্যাপকতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।