বলিউডের প্রভাবশালী বচ্চন পরিবারকে ২০১১ সালের নভেম্বরে নতুন অতিথি উপহার দিয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। মা হওয়ার পর থেকে একমাত্র মেয়ে আরাধ্যকে নিয়েই যেন ছিল তাঁর সব আরাধনা। অগণিত ভক্ত-দর্শকের প্রবল আগ্রহ সত্ত্বেও বড় পর্দায় আর অভিনয় করেননি সাবেক এ বিশ্বসুন্দরী ও বলিউডের অভিনেত্রী। মনি রত্নমের পরবর্তী ছবি দিয়ে বলিউডে অ্যাশের প্রত্যাবর্তনের খবর চাউর হলেও এখন শোনা যাচ্ছে, আবারও নাকি মা হওয়ার পরিকল্পনা করছেন ৪০ বছর বয়সী এ তারকা অভিনেত্রী। কাজেই আরও দীর্ঘদিন সম্ভবত বলিউডের পথ মাড়াবেন না সাবেক এই বিশ্বসুন্দরী ও অভিনেত্রী।
মাতৃত্বের টানে বিনোদন জগতের চাকচিক্য আর তারকাখ্যাতির মোহ থেকে বছরের পর বছর ধরে দূরে আছেন ঐশ্বরিয়া। ঘর সামলানো আর একমাত্র মেয়ের দেখভালের দায়িত্ব পালনকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। কাজটাকে তিনি অনেক উপভোগও করছেন। বাইরের জগতের চেয়ে নিজস্ব জগতে বিচরণ করতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন ঐশ্বরিয়া। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ারও পরিকল্পনা করছেন তিনি।
সম্প্রতি এক খবরে এমনটিই জানিয়েছে ওয়ান ইন্ডিয়া।
মা হওয়ার পর হাতে গোনা কিছু পণ্যের দূতিয়ালি ও বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ করলেও, নতুন কোনো ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হননি ঐশ্বরিয়া। নির্মাতারা প্রায়ই তাঁর কাছে ছবির প্রস্তাব নিয়ে গেলেও, কাউকেই পাকা কথা দেননি তিনি।
বলিউডের প্রখ্যাত নির্মাতা মনি রত্নমের ‘গুরু’ (২০০৭) ও ‘রাবণ’ (২০১০) ছবিতে স্বামী অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন ঐশ্বরিয়া। সম্প্রতি বলিউড কেন্দ্রিক কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়, মনি রত্নমের পরবর্তী ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন নীল নয়না ঐশ্বরিয়া।
কিন্তু এরই মধ্যে ঐশ্বরিয়া আবার মা হওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে খবর চাউর হল। বলাই বাহুল্য, এর মধ্য দিয়ে তাঁর অভিনয়ে প্রত্যাবর্তনের বিষয়টি ফের অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।
বলিউডে যথেষ্ট চাহিদা থাকার পরও অভিনয় ক্যারিয়ারের চেয়ে পরিবার ও সন্তান নিয়ে সংসারধর্ম পালনকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ঐশ্বরিয়া। এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছিলেন, ‘জীবনে পরিবর্তনটাই সবচেয়ে বড় ধ্রুবক। প্রতিনিয়ত জীবনের পথ পরিবর্তিত হয় আর নতুন নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়।
প্রতিটি অভিজ্ঞতা জীবনকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ভালো মানুষ হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মাতৃত্ব আমার কাছে অনেক বড় একটি আশীর্বাদ। ঈশ্বর প্রদত্ত এই উপহার আমি সযত্নে লালন করতে চাই। ’
২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন অভিষেক ও ঐশ্বরিয়া। তবে তাঁদের প্রেমের শুরুটা হয়েছিল আরও আগেই।
২০০৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘উমরাও জান’ ছবিতে তাঁরা জুটি বেঁধে অভিনয় করেন। এই জুটির বাস্তব জীবনের ভালোবাসার গল্পের শুরুটা হয়েছিল ‘উমরাও জান’ ছবির সেটে। একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে ঐশ্বরিয়ায় মুগ্ধ হয়েছিলেন অভিষেক।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নিজেদের প্রেমের গল্পের কথা জনসমক্ষে প্রকাশ করেন অভিষেক। তিনি জানান, ‘উমরাও জান’ ছবির শুটিং শেষ করে আরেকটি ছবির শুটিং করতে নিউইয়র্ক গিয়েছিলেন।
সেখানে যে হোটেলে তিনি উঠেছিলেন তার বারান্দায় দাঁড়িয়ে প্রায়ই তিনি ঐশ্বরিয়ার কথা ভাবতেন। মনের ক্যানভাসে অ্যাশকে নিয়ে নানা ছবি আঁঁকতেন। বারান্দায় দাঁড়িয়ে মনের চোখ দিয়ে ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে নিজের বিয়ের দৃশ্যও কল্পনা করতেন।
|২০০৭ সালের জানুয়ারি মাসে মুক্তি পায় অভিষেক-ঐশ্বরিয়া অভিনীত চলচ্চিত্র ‘গুরু’। এর উদ্বোধনী প্রদর্শনীর পর একদিন ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে নিউইয়র্কের সেই হোটেল বারান্দায় যান অভিষেক, যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি অ্যাশকে নিয়ে নানা স্বপ্ন বুনতেন।
সেখানেই প্রিয়তমাকে সারা জীবনের সঙ্গী হওয়ার প্রস্তাব দেন অভিষেক। তাঁর প্রস্তাবে সানন্দেই ইতিবাচক সাড়া দেন ঐশ্বরিয়া।
২০০৭ সালের ২০ এপ্রিল হিন্দু রীতি অনুযায়ী অভিষেক-ঐশ্বরিয়ার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। তারা ঝলমলে সেই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল জুহুতে, বচ্চনদের প্রতীক্ষা বাসভবনে। ২০১১ সালের ১৬ নভেম্বর একমাত্র মেয়ে আরাধ্য বচ্চনের জন্ম দেন অ্যাশ।
বলিউডের তারকাদের মধ্যে সুখী দাম্পত্যের উদাহরণ কমই আছে। পরকীয়া, মনের অমিল কিংবা আরও নানা তুচ্ছ কারণে তারকাদের বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিরল দৃষ্টান্তই স্থাপন করেছেন অভিষেক-ঐশ্বরিয়া। বলিউডের অন্যতম সুখী তারকা দম্পতি হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছেন তাঁরা। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, বিশ্বাস আর ভালোবাসায় ভর করে এগিয়ে চলেছে তাঁদের সুখী দাম্পত্য জীবন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।