কোটা প্রথা সব সময়ই বিতর্কের। আর সেই কোটা যদি কোনো বিশেষ জাতি-গোষ্ঠীর পক্ষে হয়, তাহলে তা বিতর্কের বিষবাষ্প ছড়াতে বাধ্য। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রীড়াজগতে ‘কোটা-প্রথা’ নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। ব্যাপারটি নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ গোপন রাখেননি সাবেক দুই প্রোটিয়া ক্রিকেটার ক্লাইভ রাইস ও রে জেনিংস।
বিতর্কটা আসলে শুরু হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্তে।
সিদ্ধান্তটি হলো, এখন থেকে সব জাতীয় দলে কালো-সাদা খেলোয়াড়দের আনুপাতিক হার হবে ৬০:৪০। মন্ত্রণালয় হুমকি দিয়েছে, সরকারি এই সিদ্ধান্ত না মানলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অংশগ্রহণের ওপর আরোপ করা হবে নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন খেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, এতে জাতীয় দলগুলোর মান নেমে যাওয়ার রয়েছে সমূহ সম্ভাবনা।
পুরো ব্যাপারটিই দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রী ফিকিলে এমবালুলার মস্তিষ্কপ্রসূত। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বর্ণবাদের কারণে ২১ বছরের নির্বাসন শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর প্রথম প্রোটিয়া অধিনায়ক ক্লাইভ রাইসও ঠিক এমনটাই মনে করেন। তিনি বলেন, ‘মেধার ভিত্তিতে খেলোয়াড়েরা জাতীয় দলে আসবে, এটাই স্বাভাবিক। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এভাবেই জাতীয় দলগুলো গঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোটা-পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়া মানেই জাতীয় দলে জোর করে সংখ্যাপূরণের জন্য এমন কিছু খেলোয়াড়কে ঢুকিয়ে দেওয়া, যারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার জন্য প্রস্তুত নয়। ’
রাইসের মতে, ‘রাজনীতিবিদরা কেবলই নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ নিয়ে ভাবেন।
আমাদের মন্ত্রীও রাজনৈতিক কারণেই কালোদের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কিন্তু সত্যি বলছি, এটা সাদা-কালো সবার জন্যই ক্ষতিকর। মন্ত্রী বুঝতেও পারছেন না, তিনি কী ভয়ংকর এক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। ’
শুধু জাতীয় দলই নয়। প্রতিটি ক্রীড়া সংস্থার কার্যক্রম পরিচালনাও নাকি কোটা পদ্ধতিতে হতে হবে, এমন নির্দেশনা এসেছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে।
অর্থাত্ যে খেলা কালোরা খেলে না, সেটাতেও শুধু সংখ্যা পূরণের জন্য ৬০ শতাংশ কালো খেলোয়াড় খেলাতে হবে।
রে জেনিংসও মনে করেন, পুরো ব্যাপারটিই খেলাধুলার জন্য ক্ষতিকারক, ‘এটা অবশ্যই ক্ষতিকর। এতে জোর করেই কিছু খেলোয়াড়কে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ঠেলে দেওয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ আফ্রিকার ফুটবল, ক্রিকেট, রাগবিসহ অন্যান্য খেলার জাতীয় দলগুলোর মান অনেকটাই নিচে নেমে যাবে। ’ এএনআই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।