আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোদের গরব মোদের আশা আমরি বাংলা ভাষা

বাংলা আমাদের মায়ের,মাতৃভূমির ভাষা। বাংলা ভাষাকে কেন্দ্র করে হয়ে যাওয়া আন্দোলনের ফসল আজকের এ বাংলাদেশের বাংলা ভাষা । পাকিস্তানিদের কাছে দেশের সে সময়কার ৫৬ ভাগ লোকের মুখের ভাষা কোন গুরুত্ব পেল না। পাকিস্তানের করাচিতে ’৪৭ এ অনুষ্ঠিত এক শিক্ষা সম্মেলনে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপিত হয়। এর প্রতিবাদে ‘তমদ্দুন মজলিস’ নামে একটি সংস্কৃতিক সংগঠন গঠিত হয় ’৪৭ এর ২ সেপ্টেম্বর।

এটি ১৫ সেপ্টেম্বর ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু ’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লার সভাপতিত্বে। এ প্রবন্ধের লেখক ছিলেন আবুল মনসুর আহমদ,অধ্যাপক আবুল কাসেম,ড.কাজী মোতাহের হোসেন। ঐ সময় ভাষা আন্দোলনের মুখপত্র হিসেবে ব্যাবহৃত হত“সাপ্তাহিক সৈনিক”। এর পর ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তানের গণপরিষদে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্যে দাবী উত্থাপন করেছেন কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (২৩ ফেব্্রুয়ারী ১৯৪৮)।

এর পর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ’৪৮ এর ২১ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে এবং ২৪ মার্চ কার্জন হলে ঘোষণা করেন যে ‘উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা’। এটাকে পরবর্তীতে আরো জোরালোভাবে উপস্থাপন করেন পাকিস্তানের সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুউদ্দিন ২৬ জানুয়ারি ১৯৫২ সালে ঢাকায়। তিনি বলেন ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’। এর পর বাংলার ছাত্রসমাজ ফুঁসে উঠে। ৩০, ৩১ জানুয়ারি “সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ” গঠিত হয় এবং ঐ দিন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘ভাষা দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে।

অবস্থা বেগতিক দেখে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ দিনের জন্যে পাকিস্তান সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে মিছিল করলে এতে প্রাণ হারান সালাম,বরকত,রফিত,জাব্বার,শফিউর সহ বহু মায়ের ভাষার প্রেমিক। পরবর্তীতে ২৩ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার উদ্বোধন করা হয় উদ্বোধন করেন শহীদ শফিউর রহমানের পিতা মাহবুবুর রহমান। এটা আমাদের ভাষা শহীদদের স্মৃতিকে স্বরণ করিয়ে দেয়। ১৯৫৩ সালে ৪ঠা ডিসেম্বর যুক্তফ্রন্টের উদ্ভব হলে তাদের ২১ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করে তার মধ্যে প্রথম দাবি গণ মানুষের মুখের ভাষা বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করতে হবে।

অবশেষে ১৯৫৬ সালে বংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো ৩১ তম বৈঠকে ২১ ফেব্র“য়ারিরে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস ঘোষণা করে। প্রথম ২০০০ সালে ১৮৮টি দেশে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালিত হয়। বর্তমানে ১৯২ টি দেশে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস পালিত হচ্ছে। বর্তমানে আরবি,চীনা,ইংরেজি,স্প্যানিস,রুশ,ফরাসি জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে রয়েছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.