আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিরুদ্দেশ যাত্রা

আমি আঁধারে তামাসায় ঘেরা জীবন দেখেছি, আমার বুকের ভেতর শূন্যতা থেকে শূন্যরা এসে বাসা বেঁধেছে, আমি খুঁজেছি তোমাকে সেই আঁধারে আমার মনের যত রঙলীলা; আজ সাঙ্গ হতেছে এই ভবের বাজারে। অনুপ্রেরনায় প্রিয় ব্লগার ঘুড্ডির পাইলট যাত্রা বা ভ্রমন সংস্কৃতে যা লোক নাটক নামে বহুল প্রচলিত । বাংলাদেশে যাত্রা বলতে একে মঞ্চ নাটক হিসাবে গন্য করা হয়। এক স্থান হতে অন্য স্থানে যাত্রা ভ্রমন করতে থাকে বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপট , ধর্ম নিয়ে নাটক , নাচ ও গান পরিবেষণ করে । বাংলাদেশে এই যাত্রা শুরু হয় ঢাকায় ১৮৬০ সনে ।

কিন্তু ১৯৮০ সনের পর থেকে যাত্রা তার আকর্ষণ হারাতে থাকে। মানুষ বেশী আগ্রহী হয়ে উঠে টেলিভিশন ,সিনেমা হলের প্রতি । এর কারনে যাত্রা শিল্পীরা হারাতে থাকে তাদের কাজের পরিধি । পারিশ্রমিক কমের কারনে শুরু হয় তাদের কষ্টের জীবন। কিন্তু তবু তারা থেমে নেই আজো অনেকে এই শিল্পের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে ।

যদিও অনেকে বেছেনিয়েছনোংরা পথ যারা যাত্রা আসরে নগ্ন নৃত্য প্রদর্শন করে ফায়দা লুটছে । বাংলাদেশে যাত্রার জন্য কোন স্থায়ী মঞ্চ নেই । যাত্রা মুলত সমসাময়িক রাজনীতি অথবা পুরান ইতিহাস ভিত্তিক নাটক দিয়ে মঞ্চস্থ হয়ে থাকে । এর সময় পরিধি প্রায় ৪ ঘণ্টা ব্যাপী যেখানে থাকে সংগীত , নৃত্য , অভিনয় যা একটি যাত্রার মূল আকর্ষণ । যাত্রার মূল অংশ হল এর মঞ্চ যা একটি খোলা ময়দানে করা হয়ে থাকে ।

এর চারদিক খোলা রাখা হয় । এই মঞ্চ বর্গাকৃতি আকারের হয়ে থাকে যার উচ্চতা হয় ২ ফুট এবং চওড়ায় ১৬ ফুট । এটা আসর নামেও পরিচিত । মূল আসর থেকে ৬ ইঞ্চি নিচে করা হয় আরেকটি মঞ্চ যেখানে বসে থাকে সংগীত শিল্পী গন পেছন থেকে সংগীত এবং সংলাপ বলতে থাকে । সেখানে থাকে ঢোল , গীটার , বাঁশী ইত্যাদি বাদ্য যন্ত্র ।

অনেক বাল্ব লাগান থাকে পুরো মঞ্চ আলোকিত করার জন্য । সেসব বাল্ব আবার লাল , নীল , হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে পুরো মঞ্চ আলোকিত করার জন্য । দর্শকদের সামনে থাকে বাঁশের ব্যারিকেড। এবং নারী ও পুরুষ ভাগ করে আলাদা বসার স্থান করে দেয়া থাকে । সিরাজুদ্দউলা,বেহুলা – লক্ষ্মীন্দর দুটি বাংলাদেশের কালজয়ী যাত্রা পালা যা এখনো মঞ্চায়িত হয়ে আসছে বিভিন্ন যাত্রার মঞ্চে।

যাত্রা মুলত অভিনীত হয় পুরুষ শিল্পী দিয়ে কখনো কখনো তারা নারী চরিত্রেও অভিনয় করত । তবে অনেক নারী শিল্পী পরে এর সাথে জড়িয়েছে । তারা কখনো কেঁদে উঠে, কখনো উচ্চ সরে হেসে উঠে , কখনো গান গায় আর এসবই যেন শুধু অভিনয় নয় যেন জীবন বোধ । একসময় যাত্রায় খুব প্রচলন ছিল “বিবেক” নামের একটি চরিত্র যার কাজ ছিল কখনো কাহিনীর সাথে মিল রেখে গান করা কখনোবা সংলাপ বলা কিন্তু বর্তমানে এই চরিত্রটি প্রায় হারিয়ে গেছে । এখন অনেক নামী দামী চলচিত্র শিল্পীগণ তাদের অবসর সময়ে যাত্রায় অভিনয় করেন ।

তবে দুঃখের বিষয় যাত্রার মুল শিল্পীরা যুগে যুগে হারিয়ে গেছেন অনেক সামাজিক অবহেলা আর আর্থিক দইন্যতায় । তবে তাদের কীর্তি রয়ে যাবে যতদিন যাত্রা থাকবে । ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারন ছবিগুলো নেট থেকে সংগৃহীত করা হয়েছে ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।