"নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর/ জন্ম নিল বাংলাদেশ-স্বাধীন বাংলাদেশ। / এখনও স্বতীত্ব বিসর্জন দেয়/ হাজারো নারী। "
সতীত্ব রক্ষায় চলছে যুগে যুগে দেশে দেশে কালে কালে নারী নির্যাতন। কেন এই সতীত্ব রক্ষা? এর কারন কি পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষ নিশ্চীত হতে চায় তার সন্তানের জনক অন্য কেউ নয়। নির্যাতিত হয় নারীরা, পুরুষ করে নির্যাতন।
পুরুষ তার স্বার্থে নারীকে পতিতা বানায়, আবার সমাজে তাকে প্রবল ঘৃণা করা হয়। নারী ধর্ষিত হলেও দোষী হয় নারীর। গ্রাম্য সালিসে দেখা যায় ধর্ষিতা নারী বেশি শাস্তি পায় ধর্ষকের চেয়ে। দুনিয়াতে বিভিন্ন ধর্ম বিভিন্নভাবে নারীকে নিজের মত সামাজিক অবস্থান ও অধিকার দান করেছে। কোন ধর্ম বা সম্প্রদায়ই তার সঠিক মর্যাদা ও অধিকার দিতে পারেনি।
কেউ করেছে দেহ পসারিনী, কেউ করেছে ভোগের সামগ্রী, কেউ করেছে দাসী, কেউ করেছে দেবী। কোন কালে, কোন ধর্মে বা কোন সমাজে নারীর যথাযথ মুল্যায়ন করা হয়নি বরং যে যেভাবে পেরেছে হেয় প্রতিপন্ন করেছে।
একটি মানুষ খাদ্যের পর যে অভাব বোধ করে তার নাম যৌনতা। আমাদের সমাজে যৌনতাকে সবসময় নেতিবাচক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা হয়। দর্শন বলে- যৌনতা এটা একটা প্রকৃতিপ্রদত্ত মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।
মানুষের বোধ বুদ্ধি আছে বলেই যৌনতা বিভিন্ন শ্রেণী বিভাজনে বিভক্ত। খুব কম বাঙ্গালী নারী আছে যারা বাঙ্গালী পুরুষের কাছ থেকে প্রকৃত যৌন সচ্ছলতার তৃপ্তি পায়। নারী যেন আধুনিকতার নাম করে শুধু পুরুষের ভোগপন্য না হয়ে উঠে, সেদিক থেকে নারীকেই তার নিজস্ব অবস্হান শক্ত করে ধরতে হবে। নারী যেন শেষ পর্যন্ত নারী হওয়ার আগে মানুষ হিসাবে মুখ্য হয়ে উঠে।
সমাজে অনাচারের জন্য ধর্মই দায়ী ।
কারণ ধর্মই পুরুষকে জানিয়েছে, নারী পুরুষের ভোগের বস্তু। কোরান মুমিন নারীগণকে নিজের স্বতীত্ব, নিজ লজ্জাস্হানের হেফাজতের কথা বলেছে। স্বামীকে ভালবাসতে, মর্যাদা দিতে ও সহযোগীতা করতে বলেছে। বলা হয়েছে, তার সন্তুষ্টিই তাকে জান্নাতে স্বামীর সঙ্গী করবে। মানুষের অন্ধকারে বসবাসের সময়ও পরিবর্তন হয়েছে।
তার পরও কি মান্ধাত্বার আমালের চিন্তাধারা নিয়ে থাকবেন?সতীত্ব একটি মেয়ের জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ?এটি হারানোর কারণে হাজার হাজার মেয়ে তাদের জীবন পর্যন্ত দিতে বাধ্য হয়!
যতক্ষণ পর্যন্ত একটা আতরের শিশির ঢাকনা বন্ধ থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত আতরের সুগন্ধ ঐ শিশির ভিতরেই সুরক্ষিত থাকে। কিন্তু যখনই আতরের শিশির ঢাকনা খোলা হয় তখনই সেই আতরের সুগন্ধ আর ঐ শিশির ভেতরে আবদ্ধ থাকে না। আর তখনই ঐ আতর তার ন্যায্য মূল্যকে হাত ছাড়া করে এবং কারো কাছে আর সেই মর্যাদা পায় না। - কি বলতে চাচ্ছি বুঝতে পারছেন ? আর একটু সহজ করে বলি- ফুল যতক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ ফোটে না, ততক্ষণ পর্যন্ত সুগন্ধযুক্ত ও ভাল থাকে এবং ছিঁড়ে নেয়ার খেয়ালও কেউ করে না, কিন্তু যখন ফুল, কলি থেকে ফোটা শুরু করে তখন তার সেই সৌন্দর্য্য ও সুগন্ধ ধীরে ধীরে বিলীন হতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে তা নিঃশেষ হয়ে যায় অর্থাৎ তার সৌন্দর্য্যকে হারিয়ে ফেলে।
হুমায়ুন আহমেদ এর শুভ্র চরিত্রটির সাথে অনেকেরই হয়ত পরিচয় আছে।
বেশ চমতকার একটি চরিত্র। শুভ্রতার প্রতীক। একজন শুদ্ধ মানুষ। যাকে কোন পাপ কোন দিন স্পর্শ করে নি। যেন এক কল্পনার জগতের বাসিন্দা।
কিন্তু হুমায়ুন নিজেই একদিন স্বীকার করলেন এমন শুদ্ধ মানুষ হয় না। তাই শুভ্রকে তিনি কিছু অশুভের সাথে পরচয় ঘটালেন তার "শুভ্র" নামক উপন্যাসে এসে। শুভ্রকে দেখালেন উত্তারিধিকার সুত্রে পাওয়া একটি বেশ্যা পল্লীর মালিক হিসাবে। বেশ্যা পল্লীর মালিক হয়েই শুভ্র আর শুভ্র থাকল না। মদ, মেয়ে মানুষের তার সব সত্বীত্ব ধুয়ে মুছে গেল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।