আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যাঙ্গারু কোর্ট

আমি এক ত্যাঁদড় মুনশি :D বড়োই দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে আজ লিখিতে বসিয়াছি। দুঃখের কারণ আর কিছু না; মশ্‌হুর আলেমে দ্বীন, মুফাসসীরে কুর্‌আন, সফল ছিয়াছি নেতা আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী'র বিচারের ফয়সালা নাকি যেকোন দিন। এইটা কেমন তরিকার বিচার? তদন্ত রিপোর্ট তৈরি আর সাক্ষীসাবুদ প্রদানের নিমিত্তে হুকুমাত পক্ষের উকিলগণ সময় পাইয়াছেন নয়মাস(এই সময়ে দস্তুরমতোন একখান মুক্তিযুদ্ধ করা যায়), আর আসামীপক্ষের উকিলগণ পাইয়াছেন শুধুমাত্র এক মাস পাঁচ দিন(এক চিল্লাও পুরা করিতে দেওয়া হয় নাই). তার উপরে সেইফ হাউজ নামক আচানক চিড়িয়াখানায় রাখিয়া সাক্ষীদিগকে পূর্বে তৈরিকৃত জবানবন্দী(ইহা কি ইন্ডিয়া তৈরি করিয়াছে, নাকি ভুলোমনা মুনতাসীর মামুন র মাথামোটা শাহরিয়ার কবির গং তৈরি করিয়ায়াছে তাহা আমার ইয়াদ নাই) তোতাপাখির ন্যায় মুখস্থ করানোর ইয়ানে গিলাইয়া দিবার যে হীন প্রচেষ্টা চলিয়াছে তাহা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলসহ অগায়রা মিডিয়াতে প্রচারিত হইয়াছে। মজার ব্যাপার হইলো, হুকুমাতপক্ষের সাক্ষীগণ পর্যন্ত মাওলানার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে নারাজ ছিলেন। এই কারণে যে হযরত সুখরঞ্জন বালীকে আদালতের সামনে হইতে গুম করা হইয়াছে তাহা আপনারা বিভিন্ন রোজানা আখবারসহ অগায়রা টিভি চ্যানেলসমূহে দেখিয়া থাকিবেন।

গুম হইবার পর হইতে এই বেচারার টিকিটির্‌ও দেখা আজ পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। আল্লাহ তাহাকে হেফাজত করুক। ওইদিকে তাহার অনুপস্থিতিতেই বিচারকার্য রকেটের গতিতে ছুটিতেছে। জীবনে প্রথম দেখিলাম সাক্ষী ছাড়াই বিচারকার্য সিধা চলিতেছে। আহা! বাংলাদেশের অগায়রা বিচারআচার যদি এইরকম হাওয়াইয়ের ন্যায় ছুটিতো তাহলে বহুত দিলচসপির হইতাম।

যাহা হউক, আবার দেখিতেছি হুকুমাতপক্ষের সাক্ষীদিগকে আদালতে না আনিয়া সেইফ হাউজেই তাহাদের হইতে নেওয়া জবানবন্দীকেই সাক্ষ্য বলিয়া গ্রহণ করা হইতেছে। ইহাতো সামরিক আদালতকেও হার মানাইয়া গেলো! দুনিয়ার কোন আদালতে সাক্ষীকে হাজির না করিয়াই এইভাবে জবানবন্দী নেওয়ার কোন নিয়ম আছে কি? ইহার পরে প্রশ্ন উঠে বিচারবিভাগের নিরপেক্ষতা লইয়া। যে হাকিমদিগকে বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হইয়াছে তাহারা কি আদৌ নিরপেক্ষ? ৯০-এর দশকেইতো তাহাদিগকে দেখিয়াছি ঘাদানি কমিটির তথাকথিত 'গণআদালত'-এ। এই গণআদালতিদিগকেই দেখিয়াছি সিএম্‌এম কোর্টে হামলা চালাইতে। স্পিকার শাহেদ আলীকেতো ইহারাই হত্যা করিয়াছিলো।

ইহাদিগকেই আবার হযরত শেখ হাছিনা ইয়ানে হাছিনা গান্ধী আদমিয়ানবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নামক আরেক আচানক আদালতে আনিয়া বসাইয়াছেন। ওইদিকে আবার বিলেতের 'দ্য ইকোনমিস্ট' নামক রোজানা আখবারের মশহুর আদমিগণ এই ট্রাইব্যুনালের মশহুর হাকিম হযরত নিজামুল হক নাসিম ছাহেবের ইমেইল আর স্কাইপে আইডি কোপাইয়া দিয়াছেন আর উহার ভিতরে যে বয়ান আর দস্তুরসমূহ আছে তাহা খোলাসা করিয়া দেওয়ার জন্য তড়পাইতেছেন। উহাতে কি এমন চীজ আছে যাহার জন্যে হাকিম ছাহেব এতো খামোশ হইলেন যে গতদিন বিচারকার্যের মাঝখানে উহার প্রসংগ তুলিলেন? তাহা হইলে কি এইখানে আন্তর্জাতিক মহল গুটি চালিতেছে? এই সওয়ালের জ্‌ওয়াব আমার জানা নাই। যাহা হউক, একখানা ব্যাপার আমি লক্ষ্য করিতে পারিয়াছি যে, হুকুমাত মাওলানা ছাহেবের বিচারের ফয়সালা ঘোষণা করিতে বহুত ডরাইতেছে। মাওলানা ছাহেব যে সে লোক তো নন।

তাহার হইতে বড় কথা হইলো মাওলানা ছাহেব গতকালই কাঠগড়ায় দাঁড়াইয়া বলিয়াছেন যে, তাহার বিরুদ্ধে যে ২০খানি অভিযোগ আনা হইয়াছে উহার একটির্‌ও ধারেকাছেও তিনি ছিলেন না। বিচারকার্যের অসংলগ্নতা দেখিয়া আমরাও তাহা ইয়াদ করিতে পারিয়াছি। আদপে যুদ্ধাপরাধ নয়, জনপ্রিয়তাই মাওলানা ছাহেবের কসুর। এই মুহুর্তে আসিয়া বলিতে চাই উপমহাদেশের মশহুর আলেমে দ্বীন সাইয়েদ আবুল আ'লা মওদুদী(রহ) ছাহেবের ফাঁসির আদেশ পাওয়ার পর বয়ানকৃত সেই বিখ্যাত উক্তিখানি,'হায়াত মউতের ফয়সালা আসমানে হয়, জমিনে নয়। ' ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.