আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দোহা জলবায়ু সম্মেলন: পর্ব-১: ভুল দিয়েই শুরু জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে সংশয়

আসুন ভালো থাকি (মূল ইংরেজির অনুবাদ, ইংরেজি লেখা: রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রধান সঞ্চালক, ইক্যুইটিবিডি) অনেকেই মনে করেন জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে সরকারি প্রতিনিধি দলের প্রধান দায়িত্বই বোধ হয় দেশের জন্য আন্তর্জাতিক মহল থেকে অর্থ সংগ্রহ করা। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ইউএনএফসিসিসি বা এ ধরনের আন্তর্জাতিক বহপাক্ষিক সম্মেলনগুলোর উদ্দেশ্য এরকম কিছু নয়। এটা অবশ্য ঠিক যে, এসব সম্মেলনে একটি ইতিবাচক ইমেজ তৈরি করতে পারলে পরবর্তীতে অর্থ সংগ্রহে ভূমিকা রাখতে পারে। ইউএনএফসিসিসি জলবায়ু সম্মেলন জলবায়ু পরিবর্তনের ঐতিহাসিক দায়িত্ব এবং যে দূষণ করবে সেই ক্ষতিপূরণ দিবে এই নীতি অনুযায়ী জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য উন্নত দেশগুলোর যে অর্থায়ন করার কথা রয়েছে তার ব্যাপারে একটি রূপরেখা তৈরি করার দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু কোপেনহেগেন এবং কানকুনে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করছে না এনেক্স ১ ভুক্ত তথা উন্নত দেশগুলো।

তারা বলেছিল প্রথম পর্যায়ে ২০১২ সাল নাগাদ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবেলায় মোকাবেলায় ৩০ বিলিয়ন ডলার প্রদান করবে, কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিলে জমা হয়েছে। অথচ ধনী দেশগুলো, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া বলছে যে এই তহবিলের পরিমাণ ২৮ বিলিয়ন ডলার। কানকুন সম্মেলনের সমঝোতা অনুযায়ী এই অর্থায়ন হওয়ার কথা ধনী দেশগুলোর বৈদেশিক উন্নয়ন তহবিলের অতিরিক্ত এবং একেবারেই অনুদান হিসেবে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন যে, পিপিসিআর’র আওতায় দেওয়া ঋণকে ধনী দেশগুলো জলবায়ু অর্থায়ন হিসেবে অভিহিত করতে চাচ্ছে। ইসিও নামের একটি প্রচারণাপত্রে এই প্রবণতাকে জলবায়ু তহবিলের তড়িঘড়ি ও ভুল শুরু বলে অভিহিত করেছে।

সুশীল সমাজ সদস্যরা অভিযোগ করছেন, উন্নত দেশগুলো জলবায়ু বা জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে লুকোচুরি খেলছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে দোহাতে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের নি¤েœাক্ত কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে-(১) ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কোন অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি নেই উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে। এই সময়কালের জন্য অবশ্যই নতুন প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে, (২) যেহেতু প্রতিশ্রুতি পূরণের ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোর অর্জন আশানুরূপ নয়, সুতরাং ২০২০ সাল থেকে প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা কী হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। কানকুন এবং কোপেনহেগেন সম্মেলনে সৃষ্ট গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডে এখন পর্যন্ত খুবই নগন্য অর্থ জমা হয়েছে, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডকে সুশীল সমাজ সদস্যদের পক্ষ থেকে একটি শূণ্য তহবিল বলে অভিহিত করা হচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষ থেকে আরও দাবি উঠেছে যে, জলবায়ু তহবিলের ট্রাস্টি হিসেবে বিশ্ব ব্যাংক থাকতে পারবে না, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডে কোনও কোম্পানির প্রবেশাধিকার থাকবে না, এই তহবিল থেকে কোনও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান কোনও সুবিধাও নিতে পারবে না।

উন্নত দেশগুলো জলবায়ু তহবিলগুলোতে বিশ্ব ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদী ভূমিকা চায় এবং গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডে বেসরকারি বিভিন্ন কোম্পানির জন্য নানা সুযোগ সুবিধা রাখতে চায়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষ থেকে দাবি তোলা হচ্ছে এই গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডে কপ বা ইউএনএফসিসিসি’র ভূমিকা প্রতিষ্ঠার। এসব বিষয়ে দোহা সম্মেলনে কী সিদ্ধান্ত হয় বা কী ধরনের অগ্রগতি হয় তাই এখন দেখার বিষয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে। প্রণোদনার জন্য ট্রিলিয়ন ডলার খরচ করেও সেই অর্থিৈনতক মন্দা থেকে এখনও পুরোপুরি মুক্তি পাচ্ছে না ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র।

সুতরাং জলবায়ু অর্থায়ন নির্ভর করবে বিভিন্ন দেশের পারস্পরিক যোগাযোগের উপর। তাছাড়া যে দেশটি অর্থ চাচ্ছে সেই দেশের ইমেজ ও সেই দেশটি সেই অর্থ কতটুকু স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারে তাও এক্ষেত্রে নিয়ামকের ভূমিকা পালন করবে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.