আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহানবী (সাঃ) এর জীবনী পর্বঃ মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র চূল বা কেশ মোবারক ।

আল্লাহ ছাড়া আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই । হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল । The hair of Allah's Messenger, Muhammad (peace be upon him) safely saved in Topkapy Museum, Turkey. হযরত কাতাদা (রাঃ) বলেন, আমি হযরত আনাস (রাঃ) কে হুযুর (সাঃ) এর পবিত্র কেশ মোবারক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম । তিনি বলেন, হুযুর (সাঃ) এর চুল রাজিল জাতীয় ছিলো । এর অর্থ হলো - নরম এবং মোলায়েম চূল ।

আবার আরেক বর্ণনায় উনার চূল ছিলো নরম, লম্বা, কোকড়ানো এবং ঝূলন্ত । উনার মাথার চূল কানের মধ্য খান পর্যন্ত লম্বা ছিলো । অন্য এক বর্ণনায় দুকানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিলো । তাছাড়া চূল লম্বা হলে তা কাধ পর্যন্ত বা প্রায় কাধ পর্যন্ত থাকত এরূপ বর্ণনাও আছে । সে হিসেবে চূল লম্বা রাখাও সুন্নত ।

হুযুর (সাঃ) এর চূল কখনও কখনও চুলে তেল ব্যবহার করতেন এবং চিরুনী দিয়ে আচড়াতেন । চূল বড় হয়ে গেলে তিনি ছোট করে ফেলতেন তবে সাধারণতঃ মাথা মুন্ডন বা কামিয়ে ফেলতেন না । মাথা মুন্ডন করার ব্যাপারে বলেছেন, হজ্ব এবং ওমরা ব্যতীত তিনি মাথা মুন্ডন করতেন না । আল্লাহতায়ালাই সর্বাধিক জ্ঞাত । হুযুর (সাঃ) স্বীয় কেশরাজীতে অধিক চিরুণী ব্যবহার করতেন ।

কারো মাথার চূল আলূথালূ এবং অবিন্যাস্ত থাকলে তিনি তা পছন্দ করতেন না । তদ্রুপ অতিমাত্রায় লম্বা চূল পরিপাটি করাও তিনি অপছন্দ করতেন । হযরত আলী (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) কে একথা বলতে শুনেছি, প্রত্যেক চুলের ফাকেই নাপাকী থাকে । এ কারণে মাশায়েখ দরবেশ এবং আবেদগণ যারা চূল আচরাণোর সময় পেতেন না বা পরিস্কার এর ব্যাপারে সময় পেতেন না তারা চূল ছোট করে রাখতেন । মহানবী (সাঃ) যেহেতু চূল ছেড়ে রাখতেন আবার তেল দিয়ে সিথি করেও রাখতেন সে হিসেবে দুটোই সুন্নত ।

তবে উত্তম মতটি হলো - চুল আচরাণোর সময় যদি এমনিই সিথি বের হয়ে যায় তবে সিথি করে নেওয়া নতুবা চূলকে আপন অবস্হায় ছেড়ে দেওয়া উত্তম । মূল কথা চূলকে পরিপাটি করে রাখতে হবে যেন কাউকে দেখে এরকম মনে না হয়ে যে, মাথার চুল না যেন পাখির বাসা । চুলে কলপ ব্যবহার করা নিয়ে ওলামাগণের মধ্যে মতভেদ আছে । অধিকাংশের মতে এটা মাকরূহ অর্থাৎ না করাই উত্তম । মহানবী (সাঃ) এর ইন্তিকালের সময় উনার সতের বা আঠারটি চূল সাদা হয়ে ছিলো মাত্র ।

তাও তেল দিয়ে আচরালে তা ঢাকা পড়ে যেত । মহানবী (সাঃ) বলেছেন, বার্ধক্য সম্মান ও নূরের প্রতীক । হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও উনার পুত্র হযরত ইসহাক (আঃ) এর মধ্যে বয়সের পার্থক্য বুঝানোর জন্য মহান আল্লাহপাক পিতার চুলের মধ্যে শুভ্রতা এনে দিলেন । এ দেখে তিনি আরজ করলেন, হে প্রতিপালক ! এটা কি ? আল্লাহতায়ালা বললেন, এটা হচ্ছে মর্যাদার প্রতীক । তখন তিনি বললেন, হে আমার প্রভূ ! আমার মর্যাদা আরো বাড়িয়ে দাও ।

-সূ্ত্রঃ মাদরিজ উন নবূয়ত । ১. হযরত আমর ইবনে শোয়ায়েব (রাঃ) তাহার পিতা হইতে, তিনি তাহার পিতামহ হইতে বর্ণনা করেন, রাছূল (সাঃ) বলিয়াছেন, সাদা চুল উঠাইবে না , কেননা এই বার্ধক্য মুসলমানের নূর স্বরূপ । (তিরমিযি) ২. হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) বলিয়াছেন, সাদা চুল উঠাইয়া ফেলিওনা । কেননা কিয়ামতের দিন ইহা নূর হইবে । মুসলমান থাকা অবস্হায় যাহার একটি চুল সাদা হয় , এ কারণে তাহার একটি পূণ্য লিখিয়া দেওয়া হয়, একটি পাপ ক্ষমা করা হয় এবং একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় ।

(ইবনে হাকাম) ৩. হযরত আবু উমামা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল (সাঃ) বলিয়াছেন, আমার উম্মতের পরবর্তী খলিফাকে আমি আল্লাহকে ভয় করার জন্য অসিয়ত করিতেছি । মুসলমানদের সম্পর্কে তাহাকে অসিয়ত করিতেছি যে, সে যেন বড়দের সম্মান করে আর ছোটদের স্নেহ করে , আলেমদের সম্মান করে । অপছন্দ করার মতো প্রহার না করে । কাফেরে পরিণত করার মতো ভয় না দেখায় । বংশ বিস্তার রোধ করার উদ্দেশে যেন খাসি না করে ।

ফরিয়াদিদের জন্য যেন ঘরের দরজা বন্ধ না করে । এইরূপ করিলে শক্তিশালী লোকেরা দুর্বলদের পর্যদুস্ত করিবে অর্থাৎ জুলুমের অত্যাচার ব্যাপকতা লাভ করিবে । (বায়হাকী ) সূত্রঃ Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.