গনজাগরনের মাধ্যেমে পরিবর্তন সম্ভব....মানুষের চিন্তার পরিবর্তন করাটা জরুরি ....বুদ্ধিবৃত্তিক পুনরজাগরনে বিশ্বাসী আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডে সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করেন জাহিদুল ইসলাম। তাঁর স্ত্রী ও দুই শ্যালিকাও এখানে কাজ করতেন। আজ সোমবার পর্যন্ত তাঁদের কোনো খোঁজ পাননি তিনি। শিল্প পুলিশের অনুমতি নিয়ে সকাল নয়টায় তাজরীন ফ্যাশনে ঢোকেন জাহিদুল। কান্না ভেজা কণ্ঠে তিনি প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘শনিবার রাতে আমি তিন তলায় কাজ করছিলাম।
আগুনের খবর পেয়ে পাঁচ তলায় স্ত্রী লাভলী বেগমকে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু বাধা দেন আমাদের ম্যানেজার রাজ্জাক। তারপর আমি দক্ষিণ পাশে অ্যাডজাস্ট ফ্যান ভেঙে নির্মাণকাজের জন্য বেঁধে রাখা বাঁশ বেয়ে নিচে নেমে আসি। ’
জাহিদুল বলতে থাকেন, ‘প্রতিটি তলায় কলাপসিবল গেটে তালা লাগিয়ে দেন ম্যানেজার রাজ্জাক ও কোয়ালিটি ম্যানেজার দুলাল। তা না হলে ছাদে উঠে অন্তত অনেকে প্রাণ বাঁচাতে পারতেন।
’ সঙ্গে প্রশ্ন ছোড়েন, ‘আমার সাড়ে চার বছরের ছেলেকে নিয়ে এখন কী করব? আমার স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দুই বোন লাইলী ও পপিকেও খুঁজে পাচ্ছি না। ’
জীবন বাজি রেখে ছয় তলায় থাকা সুইং অপারেটর মো. মোমিন তাঁর স্ত্রী মুক্তা খাতুনকে বাঁচিয়েছেন। সেই সময়ের কথা বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আগুন লাগলেও কর্তৃপক্ষ সতর্কঘণ্টি বাজায় ছয়টা ৫৫ মিনিটের দিকে। তারপর ম্যানেজারের দক্ষিণ পাশে থাকা কক্ষ থেকে জোরে গান বাজানো শুরু হয়। কলাপসিবল গেটেও তালা থাকায় কর্মচারীরা যার যার তলায় আটকা পড়েন।
আগুন যেন আমাদের এখানে ছড়াতে না পারে, এ জন্য পাঁচটি অ্যাডজাস্ট ফ্যান বন্ধ করে সবাইকে আমার কাছে আসতে বলি। আগুন নেভানোর সিলিন্ডার দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। পরে জেনারেল ম্যানেজারের (মহাব্যবস্থাপক) কক্ষের জানালা ভেঙে বাঁশ ধরে তিনজন পুরুষ ও ১২ জন মহিলাকে নিচে নামিয়েছি। ভবনের দক্ষিণ পাশে আগুন না ছড়ানোয় আমি, আমার স্ত্রী ও বাকিরা নামতে পেরেছি। ’
জাহিদুলের সঙ্গে এসেছিলেন বাদশা মিয়া।
তিনিও তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগমের খোঁজে এসেছেন ষষ্ঠ তলায়। বাদশা মিয়া জানান, ছেলে কর্মচারীদের অনেকে বেঁচে গেছেন। তবে নারীকর্মীর সংখ্যা বেশি থাকায় নিহত কর্মীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা বেশি।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এবং ভবনটি ঘুরে দেখা গেছে, পুরো ভবনে তিনটি সিঁড়ি আছে। কিন্তু ওপরের সিঁড়িতে রেলিং না থাকায় সিঁড়ি থেকে অনেকে নিচে পড়ে মারা গেছে।
ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে আটকে পড়া অনেক শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।