http://sphotos-f.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash4/481679_10151244931678366_507400756_n.jpg অনেকদিনের প্লান ছিলো বান্দরবান এ গিয়ে নীলগিরি তে রাত কাটাবো। এর আগেও বান্দারবান গিয়েছি কিন্তু নীলগিরি তে থাকা হৈ নি। যাবো যাবো করেও যাওয়া হচ্ছিলো না। অবশেষে গত ০৮। ১১।
২০১২ তারিখ বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার শ্যামলী পরিবহনের বাসে চড়ে বসলাম বান্দরবানের উদ্দেশ্য। সাথে স্ত্রী, বোন,দুলাভাই,১ মাত্র ভাগ্নে,বন্ধু,বন্ধুর স্ত্রী - ছেলে, মেয়ে। সারারাত বাস চললো তুফান মেইলের মত।
সকাল ৮ টায় বান্দরবান শহরে পৌছে গেলাম। বাস থেকে নেমেই তাজিংডং রেস্টুরেন্ট এ ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করলা্ম।
খাবার এর মান এবং পরিবেশ বেশ ভালো। নাস্তা শেষে নীলগিরি জাউয়ার জন্য রউনা হয়ে গেলাম। আগে থেকেই আমরা একটা একটা ছোট টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার ভাড়া করে রেখেছিলাম ৬০০০ টাকা। প্যাকেজ এভাবে, সকালে সরাসরি লীলগিরি, রাত এ নীলগিরি তেই গাড়ি এবং ড্রাইভার থাকবে সেখান থেকে পরেরদিন আসার পথে চিম্বুক, তারপর শৈলপ্রপাত। বিকালে আবার মেঘলা ও সন্ধ্যায় নীলাচল ভ্রমন।
অসাধারণ সুন্দর সবুজ পাহাড় গুলো দেখতে দেখতে খুব সুন্দর একটা অনুভুতি মাঝে মাঝে আকাবাকা আর উঁচু নিচু রাস্তার জন্য ভই নিয়ে নীলগিরি পৌঁছে গেলাম দুপুর ১২ টা ৩০ এর দিকে। অনেক দূর থেকেই নীলগিরির লাল কটেজ ছখে পরছি। কাছাকাছি পৌঁছে দেখলাম একটা হেলিপেড তৈরি করছে। আমার জানা মতে ওখানে আগে থেকেই একটা হেলিপেড আছে তার পর ও আবার একটা ঘটনা কি? পড়ে শুনলাম ১৬। ১১।
২০১২ তারিখ এ আমাদের প্রধানমন্ত্রী নীলগিরি জাবেন তাই আরেকটা হেলিপেড বানানো হচ্ছে।
যাই হোক নীলগিরি পৌঁছে আমাদের মুগ্ধতা যেন কাতছেই না। যেদিকেই তাকাই চোখ ফিরিয়ে নিতে পারি না। অসাধারণ সুন্দর সবকিছুই। সমুদ্র সমতল হতে ২২০০ ফুট উপরে আকাশের কোল ঘেষে এ যেন একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্বপ্নরাজ্য।
এখানে আকাশ পাহাড়ের সাথে মিতালী করে। মেঘবালিকা চুমু দিয়ে যায় পাহাড়ের চুড়ায়। হাত বাড়ালেই ছুয়ে দেয়া যায় মেঘের পালক। মেঘের দল এখানে খেলা করে আপনমনে। মেঘের আলিঙ্গন যেন ছেলের হাতের মোয়া।
চাইলেই ছুয়ে দেখা যায়। সে এক রোমাঞ্চকর অনুভুতি। মনে হবে আপনি উড়ে বেড়াচ্ছেন আকাশের বুকে মেঘের সাথে। আকাশ বাতাস সবুজ আর মেঘের দল লুটোপুটি খায় পদতলে। কিযে এক শিহরণ জাগানো অনুভূতি না দেখলে বিশ্বাস করা মুশকিল।
মনে হবে যেন স্বর্গ এসে ধরা দিয়েছে এ ধরায়। অবচেতন মনে আপনি হারিয়ে যাবেন ক্ষনিকের জন্য, তবে রেশ রয়ে যাবে সারা জীবন। এ এমনই এক সুখস্মৃতি যা আপনাকে বার বার হাজার বার টেনে নিয়ে আসবে এখানে।
নিলগিরি হিল রিসোর্ট এ মোট ৫ টি কটেজ আছে। আমরা ছিলাম যেটাতে অতার নাম ছিল আকাশলীনা।
আকাশলীনা র মেঘদূত এই ২ টা কটেজ সবথেকে সুন্দর। মেঘদূত এ কোনও গেস্ট থাকতে দেই না । কারন এটা শুধু মাত্র ভি ভি আই পি দের জন্য। আমরা যেদিন ছিলাম ওইদিন সেনাবাহিনী প্রধান ওখানে ছিলেন। আমাদের কটেজ এ ২ টা রুম।
আমরা ছেলেরা ১ রুম এ আর মেয়ে রা ১ রুম এ ছিলাম। ৪ জন এর বেশি যতজন থাকবে জন প্রতি ৫০০ টাকা অতিরিক্ত দিতে হল। কটেজ ভারা ৭৪০০ টাকা যা আমরা ২ মাস আগেই ব্যাংক এ জমা দিয়েছিলাম অই ডিপজিট স্লিপ টি সাথে অবশ্যই নিয়ে যেতে হবে।
এবার আসা যাক খাউয়া দাউয়া র ব্যাপার । আমরা আগে থেকেই জানিএ দিয়েছিলাম আমরা কতজন আসছি এবং আমরা দুপুর এ পৌঁছে দুপুর এর খাবার খাব।
যদি আগে থেকে বলে দেউয়া না হৈ তাহলে খাবার পাউয়া যাবে না। সেনাবাহিনীর যারা রিসোর্ট টি দেখাশুনা করে তারা যথেষ্ট হেল্পফুল। দুপুর এ জুম্মা নামাজ এর সময়ই হয়ে গেলে উনারাই এশে আমাদের সাথে করে মসজিদ এ নিয়ে গেলেন। নামাজ শেষে দুপুরের খাউয়ার জন্য রেস্টুরেন্ট এ ঢুকলাম। রেস্টুরেন্ট এর পরিবেশ যে এত্ত পরিশকার পরিসশন্ন আর খাবার এত বেশি সুস্বাদু যে ভাষাই প্রকাশ করতে পারলাম না।
এখানে যেই রেস্টুরেন্ট টি আছে ওখানে শুধুই যারা কটেজ এর গেস্ট তারা খাবে বাইরের কেউ ঢুকতেই পারে না। যারা দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আশে তাদের জন্য একটু নিচের দিকে ক্যানটিন আছে।
সবাই ভেবেছিলাম দুপুর এর খাউয়া শেষে ঘুম দিতে হবে কারন সারা রাত এর জার্নি এবং বান্দারবান থেকে নীলগিরি র উঁচু নিচু পথ এর ধকল কিন্তু মজার ব্যাপার কেউ ই ঘুমতে গেলো না সবাই এদিক শেদিক বসে প্রকৃতি দেখা নিয়ে বেস্ত। রিসোর্ট থেকে হেলিপেড এর দিকে যেতে বাচ্চা দের জন্য দোলনা ও স্লিপ এর বেবস্থা আছে ওখানে বাচ্চারা অনেক মজা করলো। এভাবেই বিকেল হয়ে গেলো।
আমরা সবাই মিলে হেলিপেড এর উপরে বসে আড্ডা দিলাম।
সন্ধ্যাই রেস্টুরেন্ট এর সামনে বসে চা খাউয়া আর আদ্দা,গান,গল্প,হাশি এভাবেই রাত ৮ টা বেজে গেলো। রাত ৮ঃ৩০ থেকে ৯ঃ৩০ পর্যন্ত রাতের খাউয়ার সময়ই। তাই সবাই জার জার মতো ফ্রেশ হয়ে খেতে চলে গেলাম (চলবে)
[img|http://ciu.somewherein.net/ciu/image/62902/small/?token_id=943d541eb81198c8cf97d873c5b0db3
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।