রাজশাহীতে কিলিং স্কোয়াড গড়ে তুলেছে ছাত্রশিবির!
আতঙ্কে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা
রাজশাহীতে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির দুটি 'কিলিং স্কোয়াড' গড়ে তুলেছে। এই খুনি দলেরই একটি অংশ গত বুধবার রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আখেরুজ্জামান তাকিমকে কুপিয়ে জখম করে তাঁর হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। গোয়েন্দা প্রতিবেদন এবং গ্রেপ্তারকৃত জামায়াত-শিবির ক্যাডারদের কাছ থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে 'সেই দলের' তিন সদস্যকে আটকও করা হয়েছে।
অন্যদিকে আখেরুজ্জামান তাকিমের আহত হওয়ার ঘটনায় যেকোনো সময় শিবির ক্যাডারদের হামলা এবং ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষের আশঙ্কায় চরম আতঙ্কে দিন কাটছে আবাসিক হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
এ আতঙ্কে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং কিছু ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী আবাসিক হল ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে কয়েকজন সাংবাদিককে ভারপ্রাপ্ত কমিশনার এস এম মনির-উজ-জামান জানান, 'ছাত্রশিবির তাদের ক্যাডারদের নিয়ে জঙ্গি কায়দায় দুটি কিলিং স্কোয়াড গঠন করেছে। প্রতিটি স্কোয়াডে ১০ জন করে সদস্য রয়েছে। ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগ নেতা এবং পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে এই স্কোয়াড গঠন করা হয়। এ ছাড়া রাজশাহী নগরে মিছিল ও হামলার জন্য শিবিরের একাধিক টিম রয়েছে।
এরা সবাই বহিরাগত। এর একটি টিম কোথায় কখন মিছিল বের করবে তার সময় ও স্থান নির্ধারণ করে। তারা মিছিল বের করার কিছুক্ষণ আগে ওই এলাকা পরিদর্শন করে এবং মোবাইলের মাধ্যমে মেসেজ পাঠিয়ে দেয়। আর মিছিলের সামনে তারা মোটরসাইকেলে অবস্থান নিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়।
পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, 'রাজশাহী ছাড়াও নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর দায়িত্বে রয়েছে শিবিরের এ দুটি স্কোয়াড।
তাদের গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে। '
নগরের মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ সানাউল হক জানান, রাবি ছাত্রলীগ নেতা তাকিমের ওপর হামলার অভিযোগে আটক রাজশাহী মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদের শূরা সদস্য আবদুল মালেককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল বিকেলে ছাত্রশিবিরের ওমর ফারুক বাবু ওরফে কসাই বাবু ও দেলোয়ার রহমান অমিত ও শান্ত নামে 'কিলিং স্কোয়াডের' তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ওমর ফারুক ও দেলোয়ার রহমান অমিতকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন নগরের বিনোদপুর এবং শান্তকে মির্জাপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। আটকের পর তাঁদের নিয়ে অভিযানে নামে পুলিশ।
অন্যদিকে বুধবার রাতের ঘটনার পর থেকে হামলা ও সংঘর্ষের আশঙ্কা বৃদ্ধি পেয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। আতঙ্কে রয়েছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি আহম্মদ আলী মোল্লা বলেন, 'শিবিরের চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোসাইন বিপু বলেন, ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবিরের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধতে পারে এমন আশঙ্কায় হল ও ক্যাম্পাস ছাড়ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রাবি বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, শিবিরের চোরাগোপ্তা হামলা ও হাত-পায়ের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনায় আতঙ্কে প্রায় ৪০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী বুধবারের পর থেকে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে গেছে।
এ জন্য তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুর্বলতাকে দায়ী করেন।
Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।