আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইসিসি, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতি টানার যুক্তি কী: 'আই অ্যাম একদম ফেড-আপ'!

খেলাধুলার সর্বোচ্চ সংস্থাগুলোর উপর টুকটাক আপত্তি থাকেই। ফুটবলে যেমন ফিফার উপর ক্লাব থেকে শুরু করে ফুটবল খেলুড়ে দেশগুলোর প্রায় সবাই কমবেশি অসন্তুষ্ট। ক্রিকেটেও তেমনি আইসিসির উপর। সাম্প্রতিক সময়ে তো কয়েকটা মেজর ইস্যুতে আইসিসির একপক্ষীয় নীতি এবং নিরবতার কারণে এর অ্যাব্রিভিয়েশন 'ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল' থেকে পরিবর্তিত হয়ে 'ইন্ডিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল' হয়ে গেছে। সবচেয়ে মেজর ইস্যুটার নাম সম্ভবত ডিআরএস; ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম।

লেখাটা অবশ্য ডিআরএস নিয়ে না। আজ থেকে শুরু হওয়া ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর সর্বোচ্চ মর্যাদার আসর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সমাপ্তি টানা নিয়ে। টুর্নামেন্ট সমাপ্তির কারণ হিশেবে আইসিসি দু'টো কারণ দাঁড় করিয়েছে পড়লাম। এক, একই ফিক্সারে আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হবে ২০১৭ থেকে। দুই, ঘন ঘন হওয়ায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জনপ্রিয়তা হ্রাস।

প্রথম কারণে আসি। ফরম্যাটটা না জানলেও অনুমান করা যায় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিশ্চয়ই দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন পড়বে। ৫ দিনের টেস্ট, সাথে এই ধকল কাটিয়ে পরের টেস্টের প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম কাউন্ট করলে সময়টা দীর্ঘ হবে এটা বুঝতে পন্ডিত হওয়া লাগে না। সে নক-আউট ফরম্যাটের হলেও। অথচ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মাত্র দুই সপ্তাহের টুর্নামেন্ট।

আয়োজনের সময় একটা মাঝারি টাইপের বাই ল্যাটারাল সিরিজ থেকেও বেশ কম। অথচ আইসিসি যুক্তি দেখিয়ে দিলো, ফিক্সার নেই, সময়ের ঘাটতি! কারো জানতে বাকি নেই, অফিশিয়াল না হলেও এপ্রিল-মে মাসে আইপিএলের কারণে একটা অলিখিত উইন্ডো থাকে গত কয়েক বছর ধরে। আইপিএলের দেড় মাস র্যাংকিংয়ের বড় দলগুলোর খেলাই থাকেনা ধরতে গেলে। তখন বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে বাই ল্যাটারাল সিরিজ হয়। আয়ারল্যান্ড-নেদারল্যান্ড-আফগানিস্তানের ট্রাই-সিরিজ হয়।

আইসিসি এই উইন্ডোটা খুব সচেতন ভাবেই খালি রাখে এবং কারণটা আর কিছু না, বিসিসিআই এর টাকার প্রভাব। আইসিসির ওই দেড় মাসে শিডিউলে টান পড়ে না। টান পড়ে শুধু ১৫ দিনের একটা চ্যাম্পিয়নশিপে, তাও যেটা কি-না দুই বছর পরপর হয়! সেলুকাস। দুই নাম্বার কারণটাতে আসি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির না-কি জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে।

আমি তো বলি, অপ্রিয় হলেও সত্য, টেস্টের জনপ্রিয়তা আরও কমে গেছে। তাহলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন কেন? উত্তরটা হবে, টেস্টের হ্রাস পাওয়া জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধারের তাগিদে। ব্যাস, পাল্টা প্রশ্নটা শুনুন, তাহলে সেটা জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ক্ষেত্রে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কী হবে? আমি বলছি না টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দরকার নেই। অবশ্যই আছে। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফির মত একটা আসরকে চিরতরে বন্ধ করে দিতে আইসিসির যুক্তি মোটেই গ্রহনযোগ্য মনে হয়নি।

আইসিসির আরও গাফিলতি চোখে পড়ার মত। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুর একটা উদ্দেশ্য ছিলো, যেসব দেশ আইসিসির পূর্ণ সদস্যা না সেসব দেশে ক্রিকেটের বিস্তারের জন্য ওই দেশগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে ট্রফিটা। সেই হিশেবে ১৯৯৮ তে বাংলাদেশকে দিয়েই শুরু হয়েছিলো। ২০০০ এ হলো কেনিয়ায়। ব্যাস, তারপরেই পাশার চাল উল্টে দিলো আইসিসি।

২০০২ এ শ্রীলংকা, ২০০৪ এ ইংল্যান্ড, ২০০৬ এ ভারত, ২০০৯ এ দক্ষিন আফ্রিকা হয়ে ২০১৩ তে আবার ইংল্যান্ডে। কেন, টুর্নামেন্টগুলো আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নামিবিয়ায় হতে পারতো না? এই একচোখা আচরণ কেন? আজকে বাজেট পাশের দিন। তাই মাল মুহিতের সুরে বলি, আইসিসির কর্মকান্ড নিয়ে 'আই অ্যাম একদম ফেড-আপ'। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.