আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার কলকাতা ভ্রমণ ==< ৩য় পর্ব >== ইন্ডিয়ান ভিসা

যদি পারতাম দুঃখগুলো নিলামে বিক্রি করে দিতাম গত দুই পর্বে আমার কলকাতা ভ্রমণের সংক্ষিপ্ত ভ্রমণ কাহিনী লিখেছি। আরো লেখার ইচ্ছে ছিল,কিন্তু 'ইজি কাজে বিজি থাকার' কারণে আগামী পর্বে সমাপ্ত দেবো। সমাপ্ত দেবার আগে 'কিভাবে ইন্ডিয়ান ভিসা নিতে হবে, ভিসার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগবে, কম টাকায় কিভাবে কলকাতা ভ্রমণ করবেন, কোথায় থাকবেন,কলকাতার দর্শনীয় স্থান ইত্যাদি তুলে ধরব। পুরাতন অভিজ্ঞ জ্ঞানী ব্যক্তিরা আর নিচের লেখা পড়ার দরকার নাই। নতুন অবস্থায় যারা কলকাতায় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যাবেন, তাদের জন্য আমার আজকের এই লেখা।

:: ভিসা :: বিদেশ ভ্রমণের প্রথম এবং প্রধান শর্ত হলো আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে অর্থাৎ কমপক্ষে ৩-৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে এবং ভিসার জন্য পাসপোর্টের কমপক্ষে দুই পেইজ খালি থাকতে হবে। :: ইন্ডিয়ান ভিসা :: ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে ধারাবাহিকভাবে নিচে উল্লেখ করা হল : ---> ০১ : ই-টোকেন। অনলাইনের মাধ্যমে যথাযথ ভাবে একটি আবেদন পত্র পুরণ করার পর জমাদানের তারিখ (এ্যাপন্টমেন্ট) সহ ই-টোকেনের একসেট প্রিন্ট নিতে হবে। (ই-টোকেন ফিলাপের সময় ইন্ডিয়ার ঠিকানা লাগবে, আপনার পরিচিত ঠিকানা জানা থাকলে দিতে পারেন, না থাকলে ইন্ডিয়ার যেকোন একটি হোটেল এর ফোন নাম্বার সহ ঠিকানা অনলাইন থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। ইচ্ছে করলে এই ঠিকানাও ব্যবহার করতে পারেন।

Mr. Firoz Khan Hotel Garib Nawaz 9, Chowringhee Lane, Kolkata-700016 Phone : +91 22175452 ই-টোকেনের আরেকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল- Port of Arrival in India, অর্থাৎ আপনে যখন ভিসার জন্য ই-টোকেন ফিলাপ করবেন তখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আপনে কিসে যাবেন যেমন : By Air, By Road নাকি By Rail । যদি By Air এ অর্থাৎ বিমানে যেতে চান তাহলে কোনো বর্ডারের কথা উল্লেখ না করলেও চলবে। শুধু By Air সিলেকশন করে দিলে হবে। যদি By Road এ যান অর্থাৎ গাড়ীতে যেতে চান তাহলে কোন বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়া প্রবেশ করবেন তা উল্লেখ করতে হবে (আপনার সুবিধা এবং পছন্দসই একটি বর্ডার নাম সিলেকশন করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনে- BY AIR/HARIDASPUR উল্লেখ করতে পারেন, মনে রাখবেন আপনে যে পোর্ট (বর্ডার) দিয়ে ইন্ডিয়া প্রবেশ করবেন , ইন্ডিয়া থেকে বের হওয়ার সময়ও সেই পোর্ট (বর্ডার) দিয়ে আসতে হবে )।

ট্রেন এ যেতে চাইলে RAIL GADE অথবা RAIL GADE/BY AIR অথবা BY RAIL GEDE/BY ROAD HARIDASPUR উল্লেখ করতে পারেন। ই-টোকেন এর জন অনলাইন ফরম এই লিঙ্কে পাওযা যাবে ---> ০২ : ফটো : সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের এক কপি ফটো লাগবে। (লক্ষ্য রাখতে হবে পাসপোর্টের ছবির সাথে যেনো মিল না হয় কিংবা একি ছবি যেনো না হয়। ---> ০৩ : ডলার এন্ড্রোসমেন্ট : যেকোনো ব্যাংক থেকে কমপক্ষে ১৫০/- ডলার পাসপোর্টে এন্ড্রোসমেন্ট করাতে হবে। অথবা ব্যাংক ষ্টেটম্যান্ট থাকলে ডলার এন্ড্রোসমেন্ট লাগবে না (ইন্ডিয়া যাবার সময় লাগবে) ।

সেক্ষেত্রে আপডেট ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং সাথে ব্যাংক সলভেন্সী সার্টিফিকেট নিতে হবে। ---> ০৪ : কভার লেটার : কোম্পানী/অফিস প্যাডে ইন্ডিয়ান হাইকমিশন বরাবরে "ভিসা চাহিয়া ধরণের" একটি কভার লেটার লেখতে হবে। ---> ০৫ : ভিজিটিং কার্ড : ব্যবসায়ী হোন কিংবা প্রাইভেট সার্ভিস হোল্ডার যেকোনো প্রফেশনেরই হোক ভিজিটিং কার্ড দিতে হবে। ---> ০৬ : যে সকল কাগজপত্রে ফটো কপি লাগবে : (১) পাসপোর্টের ১ম ৪ (চার) পৃষ্ঠা, নবায়ন কপি (যদি থাকে), ডলার এন্ড্রোসমেন্ট পৃষ্ঠা এবং সর্বশেষ ইন্ডিয়া ভিসা কপি (যদি থাকে)। (২) ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।

(যদি থাকে নাগরিকত্বের সনদের ফটোকপিও দিতে পারেন। ) (৩) টেলিফোন বিল অথবা বিদ্যুৎ বিল অথবা ওয়াসার (পানি) বিলের ফটোকপি। (নতুনদের জন্য খুবই প্রয়োজন) (৪) ব্যাংক স্টেটম্যান্টের ফটোকপি। :: এক নজরে যে সকল কাগজপত্র সহ ভিসার জন্য লাগবে :: ==> পাসপোর্ট এবং পাসপোর্টের ফটোকপি। ==> ই-টোকেন এবং ই-টোকেনের ফটোকপি।

==> অফিস প্যাডে কভার লেটার এবং ভিজিটিং কার্ড ==> সদ্য তোলা সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের এককপি ফটো। ==> ডলার এন্ড্রোসমেন্ট অথবা ব্যাংক স্টেটম্যান্ট । ==> টেলিফোন বিল অথবা ইলেক্ট্রিক বিলের ফটোকপি। ==> ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি। ==> ব্যাংকের কোনো কার্ড থাকলে ফটোকপি দিতে পারেন (যদি থাকে)।

==> ভিসা ফি ৪০০/- (চারশত) টাকা মাত্র। ---> ০৭ : প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ আবেদন পত্র এম্বেসীতে জমাদান: ই-টোকেনের ডানপাশে জমাদানের তারিখ এবং সময় উল্লেখ থাকবে। নির্দিষ্ট তারিখে সময়মত কাগজপত্র জমা দিতে হবে। মনে রাখবেন- ই-টোকেনে উল্লেখিত তারিখ ছাড়া একদিন আগে বা পরে জমা দিতে পারবেননা। যদি কোনো কারণে ই-টোকেনে প্রাপ্ত তারিখ মত জমা দিতে না পারেন, তাহলে ঐ ই-টোকেন (অনলাইন ফর্ম) বাতিল হয়ে যাবে।

পরবর্তীতে নতুন আরেকটি ই-টোকেন ফিলাপ করে উল্লেখিত তারিখ মত জমা দিতে হবে। ---> ০৮ : এম্বেসী থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ : যথাযথ ভাবে যদি আবেদন করে থাকেন তাহলে ৩-৪ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্টে পেয়ে যেতে পারেন। মানি রিসিপটের সাথে ডেলিভারীর তারিখ দেওয়া থাকে। যেকোনো কারণে এক দু'দিন বিলম্বও হতে পারে। কাজেই জরুরী প্রয়োজন না থাকলে ডেলিভারী তারিখের একদিন পরে যাওয়াই ভালো।

এছাড়াও অনলাইনেও জানা যায়। নির্দিষ্ট তারিখের পাসপোর্ট বিকেল ৪টা থেকে ডেলিভারী দেওয়া হয়। এবং একদিন পরে গেলে অর্থাৎ ব্যাকডেট হয়ে গেলে বিকেল তিন থেকে পাসপোর্ট ডেলিভারী পাওয়া যায়। ========================================= গত দুই পর্ব যাদের নেক নজরে পরেনি তাদের জন্য ======================================= ১ম পর্ব ২য় পর্ব ===> আগামী পর্বে যা থাকবে অল্প টাকায় ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা যাতাযত। ===> বর্ডার (ইমিগ্রেশন) পাস।

===> থাকার জন্য হোটেল। ===> অল্প টাকায় মেট্রো রেলে কলকাতার দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ। ===> অল্প টাকায় ট্রামে কলকাতা শহর ভ্রমণ। ===> কলকাতায় কেনাকাটা। ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।