বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
জীবনানন্দ দাশ । সুচেতনা কবিতায় যিনি লিখেছিলেন,
কলকাতা একদিন কল্লোলিনী তিলোত্তমা হবে;
তবুও তোমার কাছে আমার হৃদয়।
সত্যিই তো! একুশ শতকে পৌঁছে কল্লোলিনী তিলোত্তমাই তো হয়ে উঠল কলকাতা।
কবির এই প্রজ্ঞা ... শহর কলকাতাকে বড় ভালোবাসতেন কবি। ছাত্রজীবনের পড়াশোনা তো ওই শহরেই -তারপর দুঃসহ কর্মজীবন, বিমর্ষ ঘরসংসার ... সবই তো ঐ বিস্ময়কর বিখ্যাত শহরেই।
শোনা যায়, কবি নাকি কলকাতা শহরের রাস্তায় রাস্তায় রাতভর হাঁটতেন। "পথহাঁটা" কবিতায় সে কথা রয়েছে-
কী এক ইশারা যেন মনে রেখে একা-একা শহরের পথ থেকে পথে
অনেক হেঁটেছি আমি; অনেক দেখেছি আমি ট্রাম-বাস সব ঠিক চলে;
তারপর পথ ছেড়ে শান্ত হয়ে চলে যায় তাহাদের ঘুমের জগতে:
সারারাত গ্যাস লাইট আপনার কাজ বুঝে ভালো করে জ্বলে।
কেউ ভুল করে নাকো-ইঁট বাড়ি সাইনবোর্ড জানালা কপাট ছাঁদ সব
চুপ হয়ে ঘুমাবার প্রয়োজন বোধ করে আকাশের তলে।
একা একা পথ হেঁটে এদের গভীর শান্তি হৃদয়ে করেছি অনুভব;
তখন অনেক রাত-তখন অনেক তারা মনুমেন্ট মিনারের মাথা
নির্জনে ঘিরেছে এসে;-মনে হয় কোনোদিন এর চেয়ে সহজ সম্ভব
আর কিছু দেখেছি কি: একরাশ তারা আর মনুমেন্ট ভরা কলকাতা?
চোখ নিচে নেমে যায়-চূরুট নীরবে জ্বলে-বাতাসে অনেক ধূলো খড়;
চোখ বুজে একপাশে সরে যাই-গাছ থেকে অনেক বাদামি জীর্ণ পাতা
উড়ে গেছে; বেবিলনে একা একা এমনই হেঁটেছি আমি রাতের ভিতর
কেন যেন; আজো আমি জানি নাকো হাজার হাজার ব্যস্ত বছরের পর।
তো, কি রকম ছিল দেখতে সেই চল্লিশের দশকের কলকাতা শহর ? ঝাঁ চকচকে নিশ্চয়ই না, বরং নির্জন, ম্লান ও ম্রিয়মান। আসলে কি রকম দেখতে ছিল সেই চল্লিশের দশকের কলকাতা শহর ? প্রশ্নটি নিয়ে আমি প্রায়শই ভাবি-যেহেতু জীবনানন্দ - অন্য অনেকের মতোই - আমার নিত্য ভাবনার অনুষঙ্গ । তো, হঠাৎ করেই ১৯৪২ সালের কলকাতা শহরের কিছু ছবি (আমার এক কবি বন্ধুর সুবাদে ) আমার হাতে এসে গেল। ছবিগুলি দেখতে দেখতে উত্তেজনা বোধ করছিলাম।
এই সেই শহর-যেখানে বেঁচে ছিলেন জীবনানন্দ ...এই শহরের ট্রামলাইনের ...
ছবিগুলি দেখে জীবনান্দকে এক নতুন মাত্রায় আবিস্কার করা যেতেও পারে বলেই ছবিগুলি শেয়ার করলাম ...
না, কখনও আমি কলকাতা যাইনি। সুতরাং, ছবিগুলির পরিচয় আমি দিতে পারছি না। তবে এও সত্য যে- আমি কখনও কলকাতায় গেলেও ছবিগুলির পরিচয় দিতে পারতাম কি না সন্দেহ! ছবিগুলি ১৯৪২ সালের-অর্থাৎ জীবনানন্দের সময়কালের বলেই এবং বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করেই ছবিগুলি আপলোড করলাম ...হয়তো একদিন কেউ জীবনানন্দকে নিয়ে একটি উপন্যাস লিখবে ... তার আগে ছবিগুলি সে অনেকক্ষণ ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখবে ...এই আশায় ...
... আর কিছু দেখেছি কি: একরাশ তারা আর মনুমেন্ট ভরা কলকাতা?
চোখ নিচে নেমে যায়-চূরুট নীরবে জ্বলে-বাতাসে অনেক ধূলো খড়;
চোখ বুজে একপাশে সরে যাই-গাছ থেকে অনেক বাদামি জীর্ণ পাতা
উড়ে গেছে; বেবিলনে একা একা এমনই হেঁটেছি আমি রাতের ভিতর
কেন যেন; আজো আমি জানি নাকো হাজার হাজার ব্যস্ত বছরের পর।
উৎসর্গ: কলকাতার দীপান্বিতা কে-যার উষ্ণ ও উচ্ছ্বল হৃদয় এ ব্লগটিকে ভরিয়ে রাখে ।
কলকাতা নিয়ে নচিকেতার একটি গান:
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।