আমি ঘুরিয়া ঘুরিয়া সন্ধানো করিয়া স্বপ্নেরও পাখি ধরতে চাই আমি স্বপ্নেরও কথা বলতে চাই আমার অন্তরের কথা বলতে চাই... আমাদের সময়ের তরুণরা যখন কবি কিংবা সাহিত্যিক হয়ে উঠবে তখন ব্যাপারটা একটু অন্য রকম হবে।
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটা সাক্ষাৎকারে পড়েছিলাম
'' ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরে তিন-চার মাস ছুটি থাকে। বাবার ধারণা ছিল, এই সময়টাতে ছেলেরা বখে যায়। আমাকে বাড়িতে আটকে রাখার জন্য টেনিসনের একটি কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বললেন রোজ দুখানা করে অনুবাদ করতে। তাতে ইংরেজিও শেখা হবে।
সে যে কি কষ্টকর ব্যাপার! বন্ধুরা যাচ্ছে সিনেমা আর খেলা দেখতে। আর আমি বাড়িতে আটকানো। বাবার মুখের ওপর কিছু বলতেও পারি না। রোজ দুটো করে কবিতা অনুবাদ করে বাবাকে দিতাম। বাবা তাতে টিক দিয়ে বলতেন, কাল আবার দুটো কবিতা অনুবাদ করে দেবে।
''
আমাদের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়য়ে ভর্তি প্রত্যাশীদের মধ্যে কবি কিংবা সাহিত্যিক হয়ে যাওয়ার একটা বিরাট সম্ভাবনা আছে !
কি যে কষ্ট আর ঘৃণার সাথে এক একটা দিন পার করতে হয় তা শুধু যে প্রত্যক্ষ করে সেই বোঝে . . .
বাসায় ছোট ভাই বোন থেকে শুরু করে কাজের লোকদের সামনেও অপমানিত হতে হয় যখন তখন। এ সময়টা আবার বয়ঃসন্ধি, বুকের অভিমান বুকে চাপা হতে থাকে। সেই চাপ তৈরি হয় ক্ষতে। সেই ক্ষত অনেক দিন তাড়িয়ে বেড়ায়। অনেকে তো কখনই আর কাটিয়ে উঠতে পারে না।
তারপর হয়ত অনেকে দুইবারের চেষ্টায় ভর্তি টরতি হয়ে আবার জীবনে ঢোকে। মাঝখানের একটা বছরকে জোর করে আড়াল করে আবার নতুন করে শুরু করতে চায় জীবন
দেশের শ্রেষ্ঠতম মহাবিদ্যালয় গুলোর একটি থেকে নিকৃষ্টতম ফলাফল নিয়ে যখন বাসায় ফিরলাম তখনও ঘটনার আকস্মিকতায়, কি করেছি সেটাই বুঝে উঠতে পারলাম না। রণাঙ্গনে এসে বুঝলাম সবাই যেখানে সর্বাধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত, আমি সেখানে ছুরি আর লাঠি হাতে বড়ই বেমানান।
ভাগ্যদেবী প্রসন্ন ছিল তাই প্রথমবারেই দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা আসন নিশ্চিত করে ফেললাম। কিন্তু অন্নপূর্ণার ইচ্ছা অন্যরকম ছিল
আমার সুরের সাথে যে সুরের ঐকতান হবে তার সাথে দেখা যে না হলেই নয় . . .
মোটামটি বড়সড় কোন কারণ ছাড়াই তিন মাসের শেষ মাথায় ফিরে এলাম আপন নীড়ে।
তার পেছনে যে একজন বিশেষ নারীর স্নেহময় অবদান রয়েছে তা আর না বললেই নয়, আমার এই বিশেষ বোনটি, অনেক মায়ার বাঁধনে তার ভবঘুরে ভাইটি কে আগলে রেখেছে সব সময়। চরম দুর্দিনে অশ্রুপাতের শেষ অবলম্বন ছিল দোতালার বারান্দার সাথে লাগোয়া তার ছোট্ট ঘরটা। আজ ঘরটা আছে বোনটা অনেক দূরে . . . .
বছর ঘুরে আবার শীতকাল এলো কান-টান ঢেকে কলম পেন্সিল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আবার "পরীক্ষা" দিতে। দেশের আনাচে কানাচে ঘুরে ঘুরে পরীক্ষা দেয়া কয়েকজন প্রাণের বন্ধুদের সাথে,
অপরিচিত হল, একদিনের যাত্রা বন্ধু, খাওয়া দাওয়া, আড্ডা গান খারাপ লাগতনা, ভালোই
এডউইন হাবালের সম্প্রসারণ সূত্রের মত আমার নক্ষত্রের মত বন্ধুরা আমাকে নিঃসঙ্গ করে দিয়ে দূরে সরে যেতে লাগল ।
দুঃসহ শীতের পর বসন্ত এলো, অভিশপ্ত বছরটাও শেষ হোল, মনের মত ভর্তি হলাম।
এবং প্রথম বারের মত হৃদয়ে বসন্তের ফুল ফুটল। শুধু ফুল না ডাল পালাও ভালোই গজালো। হ্যাঁ আমি ভালবাসলাম। জীর্ণ, শীর্ণ, ক্ষুদ্র কায়া উষ্কখুষ্ক চুলের বোকা ছেলেটা দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা করল ভালোবাসার অমিয় বাণী
আবার যখনই দেখা হবে, আমি প্রথম সুযোগেই
বলে দেব স্ট্রেটকাটঃ 'ভালোবাসি'।
এরকম সত্য-ভাষণে যদি কেঁপে ওঠে,
অথবা ঠোঁটের কাছে উচ্চারিত শব্দ থেমে যায়,
আমি নখাগ্রে দেখাবো প্রেম, ভালোবাসা, বক্ষ চিরে
তোমার প্রতিমা।
দেয়ালে টাঙ্গানো কোন প্রথাসিদ্ধ
দেবীচিত্র নয়, রক্তের ফ্রেমে বাঁধা হৃদয়ের কাচে
দেখবে নিজের মুখে ভালোবাসা ছায়া ফেলিয়াছে।
আমার সেই বসন্তের গল্প আজ বলবো না, সে বসন্তে দিনের কাঁটা ঘণ্টায়, ঘণ্টার কাঁটা মিনিটে আর মিনিটের কাঁটা সেকেন্ডে চলত। ঝড়ের মত পূর্বাভাস ছাড়াই সেই বসন্ত চলে গেল। বসন্ত চলে গেল সে ও নক্ষত্রের মত আমায় ছেড়ে দূরে চলে যেতে লাগল।
শোন মেয়ে এবার তোমায় বলি..
"একটা রাতের সবগুলো বাতি যখন নিভে যায়
শুধু তখনই দূরের তারাগুলো কত উজ্জ্বল বোঝা যায়,
তুমি ইচ্ছে করে বাতি গুলো জ্বালিয়ে রাখ;
বাতিগুলো নিভিয়ে দাও অনেক দূরে একটা তারা দেখবে
আমাকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছ ঠিকই
যে নক্ষত্র প্রদীপ জ্বেলেছি কত দূরে ঠেলবে তাকে . . . ? "
প্রথম পর্ব
রাস্তা , টিউশনি , ওয়েভ ফাংশন আর বরুনা কিংবা নীলাঞ্জনার হাত ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।