‘’প্রেমিক মিলবে প্রেমিকার সাথে ঠিক-ই,
কিন্তু শান্তি পাবে না, শান্তি পাবে না, শান্তি পাবে না...’’
(শহীদ কাদরি)
প্রজাতি রক্ষার কথা মাথায় রেখে অথবা না রেখে, প্রকৃতির নিয়মে মন ও শরীরের তাগিদে যুগ যুগ ধরে মানব-মানবী পরস্পরের প্রেমে পড়ছে, ভালবাসছে, কাছে এসে একটু শান্তি পেতে চেয়েছে। এই কাছে আসার ব্যাকুলতা নিয়ে রচিত হয়েছে কত শত গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র, শিল্পীরা এঁকেছেন কত ছবি। প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে আসার জন্য একটি বিশেষ দিনও সারা বিশ্বে ঘটা করে পালন করা হয়ে থাকে। তারপরেও প্রেমের নান্দনিকতায় কোথায় যেন একটা শূন্যতা রয়ে যায় আজকাল। ইদানিং রাস্তায়, পার্কে,সিনেমাহলে, শপিং মলে, রেস্টুরেন্টে এমন কি বাসের ভেতরেও প্রেমিক-প্রেমিকাদের বেশ সাহসী ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়।
তাদেরকে এভাবে প্রকাশ্যে ঘনিষ্ঠ হতে দেখে বিব্রতবোধ করে থাকেন অনেকেই। এই যেমন এসব দেখলে দুর্জয়ের ‘’থাপড়াইতে ইচ্ছে করে। ‘’ প্রেমের মত সুন্দর বিষয়টির প্রতি ওর শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে যায় । অনুজ মনে করে, ব্যাপারটা যেহেতু প্রেমিক-প্রেমিকাদের ব্যক্তিগত বিষয়, তবে সেটা তাদের নিজেদের মধ্যে, ব্যক্তিগত রাখাই ভাল। নৈতিকভাবে ব্যাপারটিকে সমর্থন দেয় না ও।
প্রায় একই অভিমত নিশমের। শুভর মতে, ‘’ভালোবাসা দেখানোর জিনিস না। বাসায় বই পড়া খুবই ভালো কাজ। পরীক্ষার কক্ষে বই বের করা অপরাধ। প্রতিটা জিনিসেরই একটা উপযুক্ত স্থান ও সময় আছে।
যার বাইরে তা সৌন্দর্য হারায়। ‘’ অন্যদিকে মানব মনে করে কালচার পরিবর্তন হচ্ছে। একসময় এসব ধীরে ধীরে সবার চোখে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। ওদের কারোরই অবশ্য প্রেমিকা নেই।
প্রকাশ্যে নয়, প্রেমিক-প্রেমিকা যদি নিজেদের একান্তভাবে পেতে চায় ‘’লিটনের ফ্ল্যাটে’’? তাতে প্রেমিক-প্রেমিকা শান্তি পাক বা না পাক, আশপাশের উৎসাহী, অনুসন্ধিৎসু মানুষজন ‘’ কিন্তু শান্তি পাবে না, শান্তি পাবে না, শান্তি পাবে না...’’ ভারি অশান্তিতে পড়ে যাবেন তারা।
মানব মনে করে যদি লিটনের নির্জন ফ্ল্যাটে প্রেমিক-প্রেমিকাদের যেতেই হয়, তবে অবশ্যই জন্মনিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি ব্যবহার করে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। নিজের বোন এ ধরনের সম্পর্কে জড়াক এটা অবশ্য ও সমর্থন করে নি। আবিদা ও নওরিন, তাদের দুজনের মতে এসব খুবই বাজে ও নোংরামী। রুম্পার মতে, আমরা অতি আধুনিক হয়ে উঠছি। প্রেমিক-প্রেমিকাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে তাদের নিজেদের যদি কোন সমস্যা না হয়, তবে ওর নিজেরও এ ব্যাপারে কোন সমস্যা বা আগ্রহ নেই।
তবে প্রেমের নামে নোংরামী, একজনকে ছেড়ে আরেকজনের সাথে চলে যাওয়াকে কিছুতেই ও সমর্থন করে না। এসব কারণে ইদানিং পারিবারিক অস্থিরতা ও মানসিক টানাপোড়ন তৈরি হচ্ছে।
মজার কথা বলেছে আরিফ, ‘’ তারা একে অপরকে যদি ভালবাসে, লিটনের ফ্ল্যাটে যেতেই পারে, তবে না গেলেই ভালো। ‘’ প্রকাশ্যে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রসংগে বললো, ‘’ এর উত্তরে সবাই বলবে এটা জাস্ট নোংরামি। এটা হয়তোবা সে নিজেও করে কিন্তু দেখা যাবে সে এর ঘোরতর বিপক্ষে।
এটা স্বীকার করলে তার নিজের এমনকি তার পরিবার কেও সবাই খারাপ জানবে। ‘’ওর নিজের প্রেমিকা আছে কিনা এ প্রশ্নের উত্তর সরাসরি না দিয়ে জানালো অন্য তথ্য। ফেসবুকে যাদের ‘’ইন আ রিলেশনশীপ’’ দেয়া নেই, তারা বাস্তবে প্লে বয়। এভাবেই ১৮-২৫ বছরের মধ্যকার কয়েকজন তরুন-তরুনী নিজেদের মত প্রকাশ করেছেন।
একজন মা, মুন শেখ, যিনি নিজেও এক সময় প্রেমে পড়েছিলেন।
তিনি মনে করেন, বর্তমান প্রেমিক-প্রেমিকারা সাহসী ও সৎ। তাদের মধ্যে লুকোচুরি নেই। প্রেমের অভিব্যক্তি প্রকাশ করা জরুরি। এটা তারা প্রকাশ্যেই করতে পারে, অথবা একান্তে। তবে সে প্রেমকে হতে হবে শুদ্ধ, থাকতে হবে কমিটমেন্ট।
পরকীয়ার মত অনৈতিক কোন সম্পর্ককে তিনি সমর্থন করেন না। তিনি তাঁর সন্তানকে সফল ও সৎ প্রেমিক হিসেবে দেখতে চান। প্রেমের দায়িত্ব যেন সে নেয়। অসৎ, বিকৃত জীবন নয়, সুস্থ প্রেম, সুস্থ যৌন ও ভালবাসাপূর্ণ জীবন কামনা করেন সন্তানের জন্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।