স্কুলের নাম: আছিয়া মোতালেব রেজিয়া নাছরিন হাই স্কুল।
ঠিকানা: গ্রাম+পোস্ট- চরলক্ষ্যা, থানা- কর্ণফুলী, উপজেলা- পটিয়া, চট্টগ্রাম।
স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা- প্রায়ই ৩০০০।
শিক্ষকের সংখ্যা- শ্রেণী অনুযায়ী।
ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যা নিম্নেরূপ:
১. সকল ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাশ টিচারের কাছে প্রাইভেট পড়তে হবে, না পড়লে ফেল দেখানো হয়।
২. ছাত্ররা স্কুলে এবং প্রাইভেট পড়ার পরও পাশ করতে পারে না।
৩. ২০১১ ইং সালে এসএসসি পরীক্ষার সংখ্যা ছিল- ১৪৬ জন। তারমধ্যে পাশ করেছে শুধুমাত্র ৩০ জন। উল্লেখ্য যে, সাইন্স বিভাগের ২ জন, কমার্স বিভাগের ১২ জন এবং ১৬ জন মানবিক বিভাগ হ্ইতে পাশ করেছে।
৪. ২০১১ সালে এক ছাত্র টেষ্ট পরীক্ষায় ফেল করে।
তার ক্লাশ শিক্ষক বাসায় গিয়ে তার মাকে বলে- আপনার ছেলে পাশ করে নাই। মা- পরীক্ষা আবার দিবে। শিক্ষক- আবার কেন দিবে? আপনার ছেলের একবছর নষ্ট হবে। মা- কি করা যায় কোন উপায় আছে কি। তখন শিক্ষক বলল! হা আছে।
মা বলল কি, শিক্ষক বলল ৩২০০/- টাকা দিতে হবে। মা-কেন টাকা দিতে হবে। শি- এটা যারা টেষ্ট পরীক্ষায় গার্ড ছিল তাদেরকে চা-নাস্তা করার জন্য দিতে হবে। মা- এত টাকা। শিক্ষক- আমি আপনার পরিবারের অবস্থা দেখে ৩২০০/- টাকা বলছি।
অন্যকেহ হ্ইলে ১০০০০/- টাকা বলতাম। তারপর মা- ৩২০০/- টাকার স্থলে ৩০০০/- টাকা দিল। ছেলি এসএসসি ফাইনাল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হল। বর্তমানে ছেলেটি বেকার অবস্থায় আছে।
৫. অনেক ছাত্র এইভাবে প্রতারিত হচ্ছে এবং এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর রাস্তাতায়-রাস্তায় ঘোর ঘোর করছে।
এখানে আমার বক্তব্য হইল যে, আমার গ্রামের শিক্ষার যদি এই অবস্থা হয়। তাহলে শিক্ষা গ্রহণ করে লাভ কি? এখানে উল্লেখ্য যে, আগের শিক্ষক ছিল লেখা-পড়ায় ভাল। টাকা দিক বা না দিক তাকে স্কুলে নিয়মিতভাবে সিলেবাস শেষ করতো। কিন্তু বর্তমানে সিলেবাসের ৩ ভাগের ০১ ভাগও শেষ করতে পারে না। নিম্নে আমার কিছু প্রশ্ন যা সকল ব্লগারদের প্রতি অনুরোধ যে, আমার গ্রামে শিক্ষার উন্নতি করতে হইলে কি করণীয়?
ক. এই স্কুলের ছাত্ররা কেন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেনা?
খ. কেন এই স্কুলের ছাত্ররা ভাল শিক্ষক দ্বারা পড়তে পাড়তেছেনা?
গ. তাদের কিসের অভাব?
ঘ. স্কুলের কমিটি এবং শিক্ষেরা কি চাই?
শিক্ষকদের কিছু অর্থ উপার্জনের উপায়:
১. প্রধান শিক্ষক এমন যে, সে ভাজা মাছ খাইতে জানে না।
২. শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে কিভাবে টাকা আদায় করা যাবে তার চিন্তায় থাকেন।
৩.স্কুলের নামে প্রতি বছর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য গম, আটা, চাউল, তেল ইত্যাদি আসে। এগুলো স্কুলের মালিক কর্তৃক পাঠানো হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তা গোডাউনে ৭-০৯ মাস পর্যন্ত রাখে তার কিছু অংশ বিলি করে বাকী অংশ ট্রাক ভাড়া করে বিক্রি করে দেয়।
৪. সকল ছাত্র-ছাত্রীরা পড়েন।
তাদের থেকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন উপায়ে টাকা আদায় করে।
৫. অনেক শিক্ষক স্কুলের ক্লাশ রূমে প্রাইভেট পড়ায় । প্রাইভেটের বিপরীতে প্রধান শিক্ষককে প্রতি মাসে ক্লাশ রুম ভাড়া বাবদ ২৫০০/- টাকা করে পরিশোধ করতে হয়।
৬. একজন শিক্ষক ২৫০০/- টাকা দিলে ৬টি শিক্ষক থেকে প্রতি মাসে ১৫০০০/- টাকা আয় করে।
৭. শিক্ষকরা প্রতি ক্লাশে ৮০-৯০ জন্য স্কুলের ক্লাশ রুমে প্রাইভেট পড়ায়।
প্রতি ছাত্রদের থেকে ৩০০/- টাকা প্রতি বিষয় হিসাবে আদায় করা হয়।
৮. স্কুলের সমস্যার শেষ নাই। সকল ব্লগারদের প্রতি অনুরোধ কি করলে এই সব সমস্যা দুর করা যাবে।
২০১২ সালে এসএসসি পরীক্ষর্থীদের টেষ্ট পরীক্ষার রেজাল্ট এখনো ফ্লাশ হয় নাই। কিন্তু শিক্ষকের টাকা ইনকামের পধ বন্ধ নাই।
প্রতিটা ছাত্রকে বলতেছে যে, তোমরা পাশ কর নাই। তোমরা টাকা দিলে পাশ হয়ে যাবে। এই বলে ৪-৫ হাজার টাকা নিচ্ছে। উল্লেখ্য যে, কতগুলো এমন ছাত্র আছে যে, তারা দেখে লিখলেও পাশ করবে না। অথচ তারাই পাশ করে ফেলছে।
এখনো রেজাল্ট আউট হয় নাই। কিন্ত তারা জানে যে, আমরা ১০০% নিশ্চিতে পাশ হয়েগেছি।
আমার এই মন্তব্যটি সবাই শেয়ার করলে আমার লাভ না হইলেও অন্তত গ্রামের লেখা-পড়ার মান হয়তো বা পরিবর্তন হতে পারে। এই বলে আমি আজকের মত এখানে শেষ করছি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।