আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হায়রে বাংলাদেশী ,বাটপারি ছাড়তে পারলি না,আর কত ????ওয়াশিংটনে কোরবানির গরু নিয়ে প্রতারণা!

তাশফী মাহমুদ কোরবানির ঈদের দিনেও কয়েকজন বাঙালি মুসলমানের প্রতারণায় দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে। অনেকের খুশির ঈদ ম্লান হয়েছে। অনেকেই গরু কিনেও কোরবানির দিনে কোরবানি করার জন্য গরু খুঁজে পাননি। ফলে তারা আর কোরবানি দিতে পারেননি। কোরবানির দিনে দেখা গেছে, একই কোরবানির গরুর মালিক একাধিক।

এমনও দেখা গেছে, জবাই করবেন বলে এক পক্ষ গরু দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে, আরেক পক্ষ এসে বলছেন, ‘‘এটা আমাদের গরু, আপনারা বাঁধছেন কেন?’’ ঠিক সেই সময়েই তৃতীয় পক্ষ এসে বাঁধা গরুটি জবাই করে নিয়ে চলে গেলো গায়ের জোরে। এ নিয়ে বাদানুবাদও বেঁধে যায় কোরবানিদাতাদের মধ্যে। অনেকেই গরু কোরবানি দিতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন খালি হাতে। আবার অনেকেই সারাদিন অপেক্ষা করে ফার্মের মালিক যা দিয়েছেন তাই নিয়ে কোরবানি দিয়েছেন। ফলে মধ্যরাত পর্যন্তও সেখানে গরু জবাই করতে দেখা গেছে।

এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটে ল্যারি সামস নামক এক ব্যক্তির ফার্মে। জানা গেছে, ঈদের দিনে মুসলিম নামধারী কিছু লোক নির্ধারিত সময়ের আগেই ফার্মে গিয়ে সবচেয়ে বড় বড় কোরবানির গরু তাদের কেনা বলে দাবি করেন! ফার্মের মালিক ল্যারি সামস দুর্বৃত্তদের কথামতো গরুগুলো জবাই করে দেন। কিন্তু তারা কোরবানির মাংস নিয়ে সেখান থেকে সটকে পড়েন মালিককে পাওনা টাকা না দিয়েই। পরে গরুগুলোর প্রকৃত ক্রেতারা সেখানে এলেও গরু খুঁজে না পাওয়ায় ঈদের দিন কোরবানি দেওয়া থেকে বঞ্চিত হন। কোরবানির ঈদের দিন বিকেলে ফার্মের মালিক ল্যারি, তার স্ত্রী ও মেয়েকে কাঁদতে দেখা যায়।

সঙ্গে সঙ্গে ফার্মের কর্মচারী, অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে চোখ মুছতে দেখা যায়। ল্যারির মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘দেখুন, আমার বাবা খুব মর্মাহত ব্যাপারটি নিয়ে। আমরাও দুঃখিত খুব। আমরা পরিবারের সবাই আজকে এখানে ফ্রি সার্ভিস দিচ্ছিলাম কোরবানি ঈদ উপলক্ষে। এখানে আমরা সবাইকে খাবার, স্ন্যাক্স, পানি ফ্রি খাইয়েছি।

বাচ্চাদের জন্য খেলার পার্ক দিয়েছিলাম আমাদের নিজ খরচে। আর দেখুন বিনিময়ে আমরা কি পেলাম? আমরা আর এ নিয়ে কথা বলতে চাই না। ’’ ঈদের পরের দিনও সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শত শত ধর্মপ্রাণ মুসলমান সেখানে কোরবানি দিচ্ছেন। আবার অনেকেই আগের দিনের দুঃখজনক ঘটনার শিকার হয়ে শূন্য হাতে ফিরে যাওয়া মানুষ, যারা নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করতে পারেননি। সাংবাদিকদের দেখে তারা ছুটে আসেন এবং তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা বলেন।

তারা অনুরোধ জানান, সংবাদটি গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করার জন্য; ভবিষ্যতে এমন দুঃখজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে। এদিনও ফার্মের মালিক ল্যারি সামসকে বিষণ্ণ দেখায়। ‘‘কেউ এসে বললেন, গরুটি আমার আর আপনি তা কেটে দিয়ে দিলেন কেন? কেন আগে টাকা নিলেন না?’’ এমন প্রশ্ন করলে ল্যারি ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন কিছুক্ষণ। তার একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘‘আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে ধর্মপ্রাণ মানুষ। পারলে মানুষের উপকার করার চেষ্টা করি, না পারলে চুপ থাকি।

কোনো মানুষ ঈদের দিনে যা আল্লাহকে কোরবানি দেবেন সেটা নিয়েও প্রতারণা করবেন তাই কি হয়? এ-ও কি সম্ভব? আমার মনে কখনো এই চিন্তাই আসেনি যে কোনো মুসলমান তার সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে এমন তামাশা করতে পারে! আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারি না। তারা হয়তো আবার ফিরে এসে আমার টাকাটা দিয়ে যাবেন, আমার বিশ্বাস এমনই!’’ ল্যারি জানান, ‘‘তারা এসেই অন্যের কেনা গরু তাদের বলে দাবি করেন। আমিও তাদের কেনা গরুগুলো দেখাই। কিন্তু তারা ফার্মের সব থেকে বড় গরুগুলো তাদের বলে দাবি করেন। এতে যারা প্রকৃত ক্রেতা তারা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন।

এতে আমার এখানে ব্যাপক অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়। আসল ক্রেতাদের আমার আবার নতুন করে গরু এনে দিতে হয় এবং সেগুলো নতুন করে কাটতে কাটতে অনেকের রাত ১২টা বেজে যায়!’’ ‘‘আপনি পুলিশ ডাকলেন না কেন?’’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দেখুন, ঈদ আনন্দের, খুশির। এই দিনে পুলিশ ডেকে আমি কারোর আনন্দ মাটি করতে চাইনি। আমার তো সব রেকর্ড আছে। কারা এগুলো করেছেন তার তালিকা আছে।

কিন্তু আমি কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি না আপাতত। তারা হয়তো জানেন না ‘কোরবানি’ মানে কি? কিন্তু আমি তো জানি। তারা টাকা না দিলে আমি মনে করবো এটা আমার জন্য স্যাক্রিফাইস! কেউ চাইলে আমি সব তথ্য দিতে পারি। আমার ১৫ হাজার ডলার লোকসান হয়েছে আজ, এতে আমার কোনো কষ্ট নেই। দুঃখ লাগে তাদের জন্য, যারা এই মহান ত্যাগের দিনেও মানুষকে ঠকান, আল্লাহকে ঠকিয়ে নিজেই ঠকেন।

’’ তবে ল্যারি জানান, ‘‘দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দিতে আসা মুসলমানেরা অনেক ধর্মপ্রাণ। তারা জানেন, ত্যাগের মহিমা কি! এখন পর্যন্ত কোন অনিয়ম আজ দেখা যায়নি। ’’ এ কথা বলে প্রাণ খুলে হাসতেও দেখা গেলো তাকে। তিনি সাংবাদিকদের নিউজটা করার অনুরোধ জানান। সেখানে ভার্জিনিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিক পারভেজ ও মেট্রো ওয়াশিংটন বিএনপির সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী বলেন, ‘‘আমরা খুবই ভাগ্যবান যে প্রবাসে থেকেও আমরা কোরবানি দিতে পারছি।

’’ তবে দু`জনেই ঘটনাটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করে দোষী ব্যাক্তিদের শাস্তি দাবি করেন। সেখানে কমিউনিটির নেতা, সাংবাদিক কবি বাবুল নকরেকসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সুত্র----বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.