আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘’প্রসঙ্গ চৈতালি বাস ‘’-'পীর -আওলিয়াদের মাঝে এক ‘’ঘাড়তেড়া মানুষের’ কিছু কথা ... !

‘আমাদের’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসের (চৈতালি) ‘অনাকাংখিত,লজ্জাকর ও দুঃখজনক ’ একটি ঘটনা নিয়ে কয়েকদিন ফেসবুকে আর ব্লগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাবির স্টুডেন্টের সম্পর্কে নেতিবাচক 'কথার ঝড় ' দেখলাম ...... দেখলাম আমাদের 'সাবেক ঢাবি স্টুডেন্টের ' লজ্জাবোধের ছড়াছড়ি (বিস্ফোরণ ) ......... মানতে পারলাম না তাদের এই লজ্জাবোধ ... কারন তারা সত্যিই যদি ঢাবির স্টুডেন্ট (মনে প্রানে স্টুডেন্ট) হতেন তাহলে ' মসলাদার নাটক ' মিশ্রিত একটি ব্লগ কে এই অন্ধভাবে শেয়ার করতেন না ...... আবার একই কারনে বর্তমান কিছু স্টুডেন্টদের লজ্জাবোধ নিয়ে আমি সন্দিহান ............... কেউ কেউ পুরা ঢাবি পরিবারের (১৯২১-২০১২) উপর 'নীচু’ ‘মন ও মানের’ ভাষায় কথা বলেছেন '' ...... কেউ বলেছেন তার ‘ভাই -বোন ,সন্তানকে’ এখানে ভর্তি হতে দিবেন না...... কারন ঢাবিতে এসব ''নিকৃষ্ট খারাপ কাজ' শেখানো হয় ...... কোন মানবিকতা / মনুষ্যত্ববোধ এখানকার বর্তমান স্টুডেন্টদের নাই......সাবেকদেরও ছিল না ( বুঝতেই পারছেন সাবেকরা –আপনারাও ধোয়া তুলশীপাতা নন/ছিলেন না ... এখন পীর-আওলিয়া ভাব নিয়ে শেয়ার আর মন্তব্য দিয়েও রক্ষা পাননি ‘তাদের’ হাত থেকে...... কিন্তু এই সেন্সটা আপনাদের কাজ করে নাই শেয়ার দেবার সময়...শেয়ার দিয়ে নিজেরই ‘ইজ্জত নিলামে’ উঠিয়ে দিয়েছেন !! )...... কোন মানবিকতা / মনুষ্যত্ববোধর শিক্ষা দেয়া হয়না এখানে............ মোট কথা সব দোষ ‘ঢাবির’ .........কারন ‘ঢাবি’ সব রকম মাস্তানি , দুর্নীতি ,খারাপ কাজ ,ভাংচুর ইত্যাদি শিক্ষা ছাড়া আর কিছুই শিখায় না ......চুরি,ডাকাতি,ছিনতাই ইত্যাদি শেখানো হয় এখানে... 'আর 'এই বাসের ঘটনা ' হচ্ছে এই শিক্ষার ফল !!!!!!!!!!!!!!!!!' তাহলে আমাকে বলতে হয় - '' নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি '' কে দেশের ‘প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোর’ মুখপাত্র আর ‘মডেল’ হিসাবে ধরা হয় ......... এই নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র (সাবেক ) '' মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস '' যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ৯/১১ এর পর ''সবচেয়ে সন্ত্রাসী হামলা '' করার পরিকল্পনা করে এখন এফবিআই এর হাতে ধরা পড়েছে (সুত্র : প্রথম আলো) ......তাহলে আমি বলবো যে ''নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি '' তথা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি গুলোতে এই সব ঘৃণ্য সন্ত্রাসী হামলা শেখানো হয় ?? তাহলে কি বলবো কি বলবো -নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি তথা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি গুলোর আমার সব বড় ভাই-বোন , বন্ধুরা সবাই এই সন্ত্রাসী হবার শিক্ষা পাচ্ছে ?? তারা সবাইতো তাহলে বিশ্বমানের সন্ত্রাসী ?? মডেল '' নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র যখন এই অবস্থায় তখন অন্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি গুলার অবস্থা না হয় কতই মারাত্মক !!!!!!!! তা আমি কিভাবে বলবো ?? আমি পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ি বলে সামান্য ক্ষোভের কারনে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি নিয়ে এই ‘’নিচু মানুষিকতা’’ সম্পন্ন কথা কেন বলবো ?? কেন নিচু মনের হয়ে আমি ব্লগ/ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে একটা ‘ মসলাদার নাটক’ কে সবার কাছে খেতে বাধ্য করবো ?? যারা ঢাবির স্টুডেন্ট হয়ে শেয়ার বা এরকম কিছু করেছেন তাদেরকে আমি সম্মান করি এ জন্য যে ‘’ তাহারা কোন কিছু বিবেচনা না করেই অতীত ‘মিরজাফরীয়’ স্বভাব বজায় রেখেছেন .... হাজার হোক ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে না !! ‘’ পত্রিকায় দেখলাম বলা হচ্ছে '' যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা করার পরিকল্পনাকারী নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি ছাত্র ‘নাফিস’ ‘’পরিস্থিতির বা ষড়যন্ত্রের ’’ শিকার হতে পারেন ...... তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় – পাবলিক বা ঢাবির স্টুডেন্টরা কি পরিস্থিতির শিকার হতে পারে না ?? নাকি তারা ‘পরিস্থিতির’ বাইরে থাকে !!!!!!! প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কথা কেন এনেছি প্রশ্ন করতে পারেন ...... কারন এই শেয়ার আর ব্লগের ব্যাপারটা তারাই বেশি করেছেন ....কেন ভাই ?? .. আরো একটা কথা...... যাকে ও যার বাবাকে মেরে মাথা ফাটানো হয়েছে (হাত দিয়ে মেরে ফাথা ফাটানো !! উফফ ...হাত নাকি অন্য কিছু ... ) -তিনি নাকি ঢাবিরই সাবেক ছাত্র ...... যতদূর জানতে পেরেছি তিনি মারতে উদ্যত হয়েছিলেন ...... এমনকি তার বাবা বাসের এক ছাত্রকে চড় মেরেছিলেন ... (শুনতে পেয়েছি –কিন্তু বয়স্ক লোক এমন করবে তা আমার বিশ্বাস হয়নি ) ...... তার ছেলে নাকি স্থানীয় কিছু ছেলেকে তখনই ডেকেছিলেন এই ছাত্রদের ‘শায়েস্তা’ করার জন্য !! ভাইজানেরও দেখি পুরান অভ্যাস রয়েই গেছে (ঢাবি স্টুডেন্ট ছিলেন...... ছাত্রজীবনের তাহার এমন কর্মের অভ্যাস ছাড়তে পারেন নাই ) !! তো বর্তমান ছাত্ররা (বাসের) তো ৩ টাকা দিয়ে ‘প্রাণ’ ললিপপ কিনে বসে মাইরের সাথে ললিপপ মিক্সড করে খাবে না ‘প্রাণভোরে’ !! তো.....................!! কিন্তু আমি এই মারামারি , ভাংচুর গুণ্ডামিকে একদম সমর্থন করি না. ঐ দিন ওই থাপ্পড় দেবার পরও চলে আসা উচিত ছিল...আসেনি ... কারন ?? ওই যে আগেই বলেছি ‘’ পরিস্থিতির শিকার ‘’ ! বাস রং সাইড দিয়ে নিয়ে খুব বেশি ফল হয় না (সকালে কিছুটা হয়) ...এটা দেখতে খারাপ লাগলেও কিছু সময় বাঁচানোর জন্যই করা হয় ......কারন ঢাবির বাস ৫ মিনিট পর পর ছাড়ে না ......ক্ষেত্র বিশেষে ১ ঘণ্টার বেশি সময় পর পর ছাড়ে ...... আর নিজের বাপের গাড়িও ৯০% এর অধিক ছাত্রের নাই (যেমনটা আছে প্রাইভেটের স্টুডেন্টদের) যে যখন ইচ্ছা নিয়ে গেলাম কাম্পাসে ... তার পরো রং সাইডে না যাওয়াই উত্তম মনে করি ...আমরা তো কত কিছুই সহ্য করি ...... না হয় ১ঘন্টা বেশি জ্যাম সহ্য করলাম ...... (আমাদের প্রাইভেট কার নাই ...এসিও নাই... তাতে কি ... বিআরটিসির ‘ফেলে দেয়া নষ্ট বাস’ আছে আমাদের...... আর আমাদের গায়ে গণ্ডারের চামড়া আছে বলে সবার ধারনা !! ) আমার এই লেখাটা আসলে কাউকে ছোট করার জন্য না... প্রাইভেট – পাবলিক ভাই ভাই...... আমরা আলোর পথের সহযাত্রী ......তবে কেন এই রাগ ?? কেন আমাদের প্রতি ‘তোমাদের ‘ এই নেতিবাচক’ ভাবনা ?? আমরা তো তোমাদেরই ভাই ...... আমার অধিকাংশ বন্ধু প্রাইভেটে পড়ে ...কত ভালো সম্পর্ক আমাদের...... দেখা হলে আমাদের আড্ডা – মাস্তি থামতেই চায়না......... সকল স্থানে সবাই যে একই রকম /মানের মানুষ হবে এটা আশা করা যায়না...... ঢাবিতেও সবাই ভালো না ...... আমি নিজে দেখেছি কিছু স্টুডেন্ট নামক ‘বেয়াবদ’ আছে যারা উল্টাপাল্টা কাজ করে ......অনেক অপরাধ করে...... এদেরকে আবার ‘উপর’ থেকে সহায়তা করা হয় ......!! আমরা তাই অনেক সময় এদেরকে কিছু বলতেও পারি না সম্মুখে ...... এরাই অধিকাংশ নেতিবাচক কাজে যুক্ত থাকে ......... কিন্তু বিশ্বাস করুন (প্রমাণও পাবেন) – ঢাবির ৯৮% ছাত্র-ছাত্রী নিরিহ ,ভদ্র, অনুকরণ করার মতো চরিত্রের অধিকারী ...এরা মানবতার সেবাই সবচেয়ে অগ্রগামী ...প্রতিদিন ঢাকার কত হাসপাতালের অসংখ্য রোগীর জীবন বাঁচে এদের রক্তে আপনি জানেন ?? জানেন না... ......হাজারো অসহায় মানুষের রোগের চিকিৎসার অর্থ জোগান দেয়া হয় এখানকার স্টুডেন্টদের কাছ থেকে ...... কিভাবে এই টাকা জোগান দেয়া হয় জানেন ?? একবেলা –দুবেলা না খেয়ে...... কারন আমাদেরকে মাস হিসাবে ‘মিল’ গুনে টাকা দেয়া হয় বাসা থেকে ......অথবা সামান্য টিউশনী থেকে কোন মতে খাবারের টাকা সংগ্রহ করতে হয় ...... সেই টাকা সঞ্চয় করে দেয়া হয় অসহায় ‘গালিবের’ মত পরিবারকে .....(গালিব –ভাইয়া ক্ষমা কর আমাদের ...আমরা চেষ্টা করেও তোমাকে বাঁচাতে পারিনি ) ... . আপনি জানেন ?? জানেন না... এগুলা কারও চোখে পড়বে না ... ভাবছেন ছাফাই গাচ্ছি ?? না ...বাস্তবতা বর্ণনা করলাম......আরো আছে... সেই সাথে আমাদের নেতিবাচক কাজ গুলাকে আমি ঘৃণা করছি উচ্চস্বরে ......... আর ৯৮% বাদে আছে কিছু ‘রাবিশ’ ........একবার ভাবুন – এই ক্ষুদ্র অংশের জন্য কি ‘পুরা ঢাবি পরিবারকে’ দোষ দেয়া যায় ?? আপনারা যে এলাকায় থাকেন সেখানে কেউ না কেউ দুর্নীতিবাজ –চোঁর-বাটপার আছে ...... তাই বলে কি আমি বলবো –যে আপনিও দুর্নীতিবাজ –চোঁর-বাটপার ?? আশা করি আমার লেখার উদ্দেশ্য আপনারা ধরতে পেরেছেন ......... নেতিবাচক ওই ঘটনার জন্য আমিও লজ্জিত , ক্ষমা চাইছি সবার পক্ষ হতে...... তবে অন্যদের মতো ফেসবুক আর ব্লগে আমার লজ্জা –দুঃখবোধ দেখতে পাবেন না...আমার এই দুঃখবোধ আর লজ্জা মনের গভীরে.......আমি শপথ নিয়েছি মনের মাঝে এটা থেকে–যে এমন ‘পরিস্থিতিতেও’ এমন কিছু আমি করবো না যা খারাপ ......... করবো না ‘নিচু মনের শেয়ার’ ...... আমার খারাপ দিক গুলাকে মানুষ অবশ্যই জানবে ......তবে আসল সত্যটাই জানবে... মসলা নাটক নয় ......... আর আমি আমার সাধ্যমত আমার ঢাবিকে এই সব মারামারি , ভাংচুর ,অনিয়ম ,উশৃঙ্গখলতা থেকে মুক্ত করার চেষ্টা করবোই ...... আশা করি এই নেতিবাচক কাজ মুক্ত হয়ে আমরা সেই রকম স্থানে ঢাবিকে নিতে পারবো - যখন একদিন ‘এই নাটক গুলা ‘ কেউ প্রচার করলে সাধারণ অশিক্ষিত জনগনও নিজে থেকেই জুতা মারবে প্রচারকারীদের...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।