আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঢাকায় প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক মানের "প্রাণী মেলা", এই ধারাবাহিকতা যেন নস্ট না হয় ...

গাড়ি থেকে নেমে মূল ভবনের দিকে হাটতে লাগলাম আমি, গাজ্জালী ও ডঃ বাদায়ুনী। বাগানের বা দিক থেকে একটা ডাক আসল (গাজ্জালীকে ডাকা হল)। তাকিয়ে দেখি পাইপ দিয়ে গাছে পানি দিচ্ছেন আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব, বিনয়ী সেই মহামানব। হ্যাঁ, ডঃ মাহাথির মোহাম্মদ ... বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো আন্তর্জাতিক ডেইরি, মৎস্য ও পোষ্য প্রাণী মেলা আয়োজন করেছে এনিমেল হেলথ্‌ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন। তিন দিন ব্যাপি এই মেলা শুরু হবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার থেকে - ১০ নভেম্বর, শনিবার পর্যন্ত।

মেলায় দেশি- বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পশু-স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পণ্য, উপকরণ ও যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে। মেলা উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে এনিমেল হেলথ্‌ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন (আহকাব) সভাপতি মোমিন উদ দৌলা মূল বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি বলেন, প্রদর্শনীতে মোট ১০৬টি স্টল থাকবে। এতে অংশ নেওয়ার জন্য অনেক দেশি- বিদেশি কোম্পানি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

প্রায় সব স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, মেলা উপলক্ষে কয়েকটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। সেমিনারে দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীরা পশু সম্পদ ব্যবস্থাপনা, উন্নত প্রযুক্তি, মূলধন সংগ্রহে ব্যাংক বা এনজিও সহযোগীতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। এক সাক্ষাৎকারে এসোসিয়েসনের সভাপতি মোমিন উদ দৌলা বলেন, “আমাদের প্রানীজ শিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি শিল্প। তারপরেও ডেইরী, মৎস্য ও পোষাপ্রানী সেক্টরের উন্নয়নের জন্য অতীতে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ দেখা যায় নি।

আমাদের দৈনিক জনপ্রতি ১২০ মিলিলিটার হিসেবে বার্ষিক প্রায় ৭২ লক্ষ টন দুধের চাহিদা রয়েছে, এর মধ্যে আমরা মাত্র ২৬ লক্ষ টন উৎপাদন করতে পারি, বাকী প্রায় ৫২ হাজার টন গুড়াদুধ আমদানী করে চাহিদা মেটাতে হয়। এতে বছরে আমদানীর ক্ষেত্রেই প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। " তিনি আরো বলেন, নদীমাতৃক আমাদের দেশের মৎস্য সেক্টর একটি বিশাল সম্ভাবনাময় সেক্টর। আমাদের মিঠা ও লোনাপানির বিশাল জলরাশি আছে। আমরা এই বিশাল জলরাশির যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারছি না বিভিন্ন প্রতিকুলতার কারণে।

বিশাল অবকাঠামোর তুলনায় আমাদের মৎস্য উৎপাদন অত্যন্ত অপ্রতুল। তারপরেও শুধুমাত্র চিংড়ি রপ্তানি করেই আমরা বার্ষিক প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সমান ২০০০ কোটি টাকা আয় করছি। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা সমগ্র দেশবাসী, নীতিনির্ধারণী মহল এবং বিশেষ করে প্রাণীজশিল্প সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠিকে এটা অবহিত করতে চাই যে, শুধুমাত্র আমাদের বিদ্যমান মৎস্য অবকাঠামো সঠিকভাবে ব্যবহার করেই আমরা বর্তমানে উপার্জিত ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারকে ৩০০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে পারি। এছাড়া দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য দুগ্ধ বা ডেইরী শিল্পের কারিগরি উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। কৃষিভিত্তিক আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ডেইরী ও মৎস্য সেক্টরের উন্নয়ন হলে এই শিল্পে আমরা স্বয়ংস্বম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হবো, এতে আমদানীনির্ভরতা কমে দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠির পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।

দেশের ডেইরী ও মৎস্য শিল্পের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ডেইরী ও মৎস্যের চাহিদা পুরণের লক্ষ্য নিয়েই এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এছড়াও আমরা আশা করছি এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে আমরা সংশ্লিষ্ট সকলকে সাথে নিয়ে এ সেক্টরের দ্রুত উন্নয়ণের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌছুতে পারবো । ” পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই প্রতি বছর বৃক্ষ মেলা, প্রাণী মেলা, মংস্য মেলা আয়োজন করা হয়। জাপান, চীন, মালয়শিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, ইতালী, মিশর, সুদান, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়াসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশে সরকারীভাবে এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়। আমাদের দেশে আন্তর্জাতিকমানের "প্রানী মেলা" এটাই প্রথম।

আমরা আন্তরিকভাবে আশা করছি এনিমেল হেলথ্‌ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন প্রতি বছর তাদের প্রানী মেলার ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।