এএক আকাশেতেই আমাদের ওড়াওড়ি। বাংলা সাহিত্যের কতগুলো ভাগ আছে। ছড়া, কবিতা গান, প্রবন্ধ। চর্যাপদের পদ দিয়ে শুরু, এখন চলছে নাটক সিনেমার কাহিনী হয়ে। ঘেটু গান বাংলার লৌকিক সাহিত্যের একটি অনবদ্ধ অংশ।
বর্ষাকালে সুনামগঞ্জের হাওর এলাকায় ঘেটু গান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেত। আনন্দ করার জন্য এই গান গাওয়া ও শোনা হত। তাই একে ঘেটু গান বলা হত। সুদর্শন বালকেরা মেয়েদের সাজে সজ্জিত হয়ে ঘেটু গান প্রদর্শন করত।
বিত্তশালী মধ্যবয়স্ক বাঙালী পুরুষ বর্ষ মৌসুমে ঘেটুপুত্রদের বাড়িতে এনে রাখত।
এটা ট্রেডিশানে রুপান্তরিত হয়েছিল। এই কিশোর ছেলেদের তারা প্রেমিকের মত ভালবাসত। তাদের জৈবিক চাহিদা, মানসিক চাহিদা দুইই পুরন করতে হত ঘেটুপুত্রদের।
লেখাটি এখানে প্রথম প্রকাশিত Click This Link
বাংলাদেশে সমকামিতা অবৈধ। ব্রিটিশ কলোনিয়াল সময়ে করা আইনের সুত্র ধরে ৩৭৭ ধারা মোতাবেক বাংলাদেশে সমকামিতাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অথচ মাত্র ১৫০ বছর আগে এই বাংলায় খোলাখুলি ভাবে গ্রামীণ মুসলিম ভূ-স্বামীদের মধ্যে সমকামিতার প্রচলন ছিলো। ইতিহাসকে পাশ কাটিয়ে গেলেই ইতিহাস মিথ্যে হয়ে যায় না।
বাংলাদেশের জননন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তার মৃত্যুর আগে (জুলাই’১২) এই ঘেটুপুত্রদের নিয়ে একটি সিনেমা বানিয়ে গেছেন, “ঘেটুপুত্র কমলা”। এই সিনেমাটিতে একজন মুসলিম পুরুষের গল্প বলা হয়েছে যার জীবন তার ইর্ষাকাতর বধু ও একজন ঘেটুপুত্র কমলার জন্য অসহনীয় হয়ে ঊঠেছে। সিনেমাটি মুক্তির দেয়ার আগে স্থানীয় পত্র-পত্রিকাতে অনেক লেখলেখি হয়েছে।
অনেকে সিনেমাটিকে নিষিদ্ধ ঘোষ্ণা করার কথা বলেছেন। কিন্তু সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর অধিকাংশের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
এএফপি’র সাথে সাক্ষাতকারে আব্দুল কুদ্দুস বয়াতি জানান যে তার যৌবনকালে তিনি ঘেটুপুত্র কালচার দেখেছেন। তিনি বলেন, “তারা সেক্স করত এবং এটার জন্য কারো কাছ থেকে কোন প্রকার বাঁধা আসতো নাই। ” মুসলিম সমাজ থেকে কোন বাধা দেয়া হত না।
এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সমকামী জনগোষ্ঠীকে হেয় চোখে দেখা অন্যতম দেশ। এখানে সমকামিতা নিয়ে কথা বলতে গেলে সবাই থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। তাই বাংলাদেশ সরকার ঘেটুপুত্র কমলা সিনেমা মুক্তি দিয়ে ব্যাপক উদারতা দেখিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।