আমিনুল ইসলাম লিটন, ঝিনাইদহ থেকে: মহেশপুর উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের কামাল হোসেন নামে এক যুবককের লিঙ্গ পরিবর্তন করা হয়েছে। লিঙ্গ পরিবর্তনের পর তাকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হতো বলে অভিযোগ পরিবারের। আড়াই বছর পর ভারত থেকে ফিরে এসেছে মেয়ে হয়ে। তবে পাচারকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় কামালের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। কামাল হোসেনের পিতা নূর মোহাম্মদ বাদী হয়ে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ আদালতে একটি মামলা করেছেন।
নুর মোহাম্মদ জানান, তার ছেলের বয়স ২৫ বছর। ৬ বছর আগে মহেশপুর উপজেলার সামন্তা গ্রামের সাজেদা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তাদের সাদেকুল নামে ৩ বছরের একটি পুত্র সন্তান আছে। আড়াই বছর আগে রাজ্জাক হোসেন নামে তাদের গ্রামের এক পাচারকারী ভারতে ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তার ছেলেকে পাচার করে। পরে ভারতের বোম্বেতে নিয়ে তাকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে পাচারকারীরা।
সেখানে তাকে অপারেশন করে গোপনাঙ্গ কেটে ফেলা হয়। শরীরে মহিলা হরমোন ইনজেকশন পুশ করে মেয়েতে রূপান্তর করা হয়। এদিকে অনেক চেষ্টার পর দালালদের মাধ্যমে গত ৫ই অক্টোবর দেশে ফিরিয়ে আনা হয় কামাল হোসেনকে। এর আগে কামালের পিতা নূর মোহাম্মদ বাদী হয়ে মহেশপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলা দায়েরের পরও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক।
পরে দেশে আসার পর আদালতে আরও একটি মামলা করেছেন। আদালত কামালকে ডাক্তারী পরীক্ষা ও মামলা নথিভুক্ত করার জন্য মহেশপুর থানাকে আদেশ দিয়েছেন। গতকাল ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আরও পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা হয়েছে। কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, তাকে ভাল চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করা হয়।
এরপর বোম্বে নিয়ে তাকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয় পাচারকারীরা। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়। হরমোন ইনজেকশন দিয়ে মহিলায় রূপান্তরিত করে। পরে পতিতালয়ে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। অনেক চেষ্টার পর দালালদের মাধ্যমে সে দেশে ফিরে আসে।
কাঁদতে কাঁদতে কামাল বলেন, এখন তার উপায় কি? এ ঘটনায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. অরূপ কুমার সাহা জানান, ছেলেটিকে আর পুরুষে রূপান্তর করা সম্ভব না। মেয়েদের হরমোন ইনজেকশন দেয়ায় তার চুল বড় হয়েছে, গলার স্বর মেয়েলী হয়ে গেছে। বাহ্যিক সবকিছু পরিবর্তন ঘটেছে। মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, ছেলেটির ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।