আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সর্বনাশ ! ছাত্রদল কমিটিতে প্রবাসী, ড্রাইভার, কাজের ছেলে, ভাঙ্গাড়ির দোকানদার !!!

যোগ্য, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনেক পদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতারা। তাঁরা দাবি করেন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত না থাকলেও বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের লোক হওয়ার কারণে অনেককে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়েছে। স্বজনপ্রীতি ও অর্থবাণিজ্যের মাধ্যমে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেয়েছে প্রবাসী, গাড়ির ড্রাইভার এবং সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরতরাও। বাদ যায়নি বাড়ির কাজের ছেলে, ভাঙ্গাড়ির দোকানদারও। এমনকি বিসিএস ক্যাডারভুক্তরাও ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান পেয়েছে বলে তাঁরা জানান।

শনিবার ঢাকা ক্রাইম রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনে কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত ও অবমূল্যায়িতরা এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, পদ-পদবি পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য ছাত্র নেতারা বাদ পড়লেও অর্থের বিনিময়ে পদ পেয়েছেন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাসাস ও শ্রমিক দলের নেতারা। অন্য অঙ্গ সংগঠনের এসব নেতা সভাপতির আশীর্বাদপুষ্ট ছাত্রদলের ২নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের সঙ্গে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করে গুরুত্বপূর্ণ পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে সাভার পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বদিকে দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক। এ ছাড়া আশুলিয়া উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আয়ুব খানকে এবং স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপক কুমার বর্মণ প্রিন্সকেসহ সাংগঠনিক পদ দেয়া হয়েছে।

গত কমিটির অনেক নেতারা লবিংয়ের মাধ্যমে সদস্য থেকে পুনরায় বর্তমান কমিটির সদস্যপদে থাকলেও আর্থিক সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতিকে দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিরসহ নাট্য সম্পাদক পদ। সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব আহসানের গাড়ির ড্রাইভার মোঃ জসিম উদ্দিনকে করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। ছাত্রদলের সহসভাপতি এবিএম পারভেজ রেজার বাসার কাজের ছেলে খন্দকার মুজাহিদুল ইসলামকে করা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিরসহ সাংগঠনিক সম্পাদক। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয় ঘোষিত ছাত্রদলের ২৯১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৭০ জনকে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হয়েছে। ৩১তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডার আদনান আলম বাবুকে দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির স্কুল বিষয়ক সম্পাদক।

মাই টিভির ব্যুরো চীফ সোয়েব খন্দকারকে দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিরসহ সাধারণ সম্পাদক। কাঁচপুর সিনহা গার্মেন্টসে কর্মরত আব্দুল হান্নান মিয়াকে দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক। ঢাকা ব্যাংকে কর্মরত ওমর ফারুক ডালিমকেও দেয়া হয়েছে সহ-সাধারণ সম্পাদক। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মাহবুবুর রহমানকে দেয়া হয়েছে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক। স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রশাসনিক পদে কর্মরত জাহাঙ্গীর আলম জাহাঙ্গীরকেও দেয়া হয়েছে সহসাংগঠনিক সম্পাদক পদ।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বায়োজিদ আরেফিনকে দেয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। শিশির গ্রুপে কর্মরত মিজানুর রহমান সোহাগকে দেয়া হয়েছে যোগাযোগ সম্পাদক। রাজধানীর নবাবপুর রোডের ভাঙ্গাড়ি দোকানদার খোরশেদ আলমকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন অভিযোগ করা হয় বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক এগারোর বেঈমানদের পদ পদবি দেয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। ওই সময়ে বেগম খালেদা জিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা জিয়ারউর রহমান হলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ভাংচুর করেছিল এমন কয়েকজনকে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে।

তারেক রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর যার নেতৃত্বে মধুর কেন্টিনে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছিল তাকেও দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ। অথচ এক এগারোর সময় যারা দলের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল তাদের বর্তমান কমিটিতে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, ১৫ এপ্রিল ছাত্রদলের ২৯১ সদস্যবিশিষ্ট ঢাউস সাইজের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগী, যোগ্য ও পরীক্ষিত নেতাদের অবমূল্যায়ন ও পদবঞ্চিত করার মাধ্যমে ছাত্রদলকে একটি দেউলিয়া সংগঠনে পরিণত করা হয়েছে। কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের চিত্র দেখে ছাত্রদলের অন্য নেতাকর্মীদের মতো তাঁরাও হতবাক হয়েছেন।

তিনি বলেন, এ কমিটিতে মারাত্মকভাবে অবহেলিত ও বঞ্চিত করা হয়েছে শিক্ষা সভ্যতা ও ছাত্ররাজনীতির সুতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে। ২৯১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাখা হয়েছে মাত্র ১২৩ জনকে। যা ছাত্রদলের গর্বিত ইতিহাস ও অর্জিত সাফল্যকে ম্লান করে দিয়েছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।