নিজের সম্পর্কে কিছুই লিখার নাই। দুলছে পালকি, বসে বসে দুই বোন মিলে চিন্তা করছিলাম কোথায় আমাদের বোরিং ঘরে বসে থাকা, আর সেখান থেকে এখন আমরা অনিশ্চিত এক রোমাঞ্চকর যাত্রার অংশ।
এই অভিযানে আসার সময় একটা ভাল সময় কাটবে আশা করে এসেছিলাম ছিলাম, কিন্তু এখন যা হচ্ছে, সম্ভবত আমার জীবনের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ঘটনা। আপুর অনুসন্ধান যে এভাবে এরকম দিকে মোড় নেবে, চিন্তাও করতে পারিনি। তাকিয়ে দেখলাম, আপু চুপ করে বসে আছে।
একটা চাপা অস্থিরতা আর টেনশন ক্ষনে ক্ষনে তার চেহারায় খেলা করে যাচ্ছে। বেচারী! আমি ভয় পাবো মনে করে মন খুলে দু:শ্চিন্তাও করতে পারছে না। যদি জানতো, আমি কতটা এনজয় করছি..।
আমাদের পালকি বহন করছিলো আটজন ইয়েতি। প্রত্যেকের ইয়া দশাসই শরীর দেখলে স্বাভাবিক অবস্থায় যে কেউ ভড়কে যাবে, কিন্তু সন্দেহ নেই, আমরা সেই পর্যায় পার হয়ে এসেছি।
আমরা চলছিলাম পাথুরে পথ বেয়ে, কখনো উপরের দিকে অথবা কখনো নিচের দিকে। বেহারাদের কষ্ট হচ্ছে হয়তো, তবে বোঝার উপায় নেই। আমাদের পালকির পিছনে আসছে ডঃ শীধু রায় আর শাহেদ ভাইয়া, আমাদের পালকির পাশেই হাটছে আংলু। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে কোন কারনে চিন্তিত। বেশ কিছুক্ষন উশখুশ করে ওর সাথে কথা বলতে শুরু করলাম।
- আচ্ছা, তোমার নাম যেন কি বললে? আমরা যাচ্ছি কোথায়? তুমিই বা কে? এক নাগারে প্রশ্ন করে থামি আমি।
- আংলু চিন্তিত মাথায় উপরে তাকিয়ে বুঝতে পারলো ওকেই আমি প্রশ্ন করেছি। গম্ভীরভাবে জবাব দিল সে,
- আমার নাম আংলু, আমি একজন ডাইনী, আমরা যাচ্ছি আপনার আদিনিবাসে।
- আমার আদিনিবাস.. মানে কি?
- আপনি আমাদের দেবী, আমাদের রক্ষক, আমাদের মা। আপনি আসবেন বলেই আপনার জন্যে হাজার বছর ধরে আমরা অপেক্ষা করছিলাম।
অবশেষে আপনি এলেন। ” একটু হাসে সে।
- “তবে পূর্ণ ক্ষমতা পেতে হলে আপনাকে দীক্ষা গ্রহন করতে হবে।
- দীক্ষা?” আমি অবাক হতে থাকি। “কিসের দীক্ষা? কেনই বা সেটা নিতে হবে আমাকে?”
- সময়ে সব জানতে পারবেন।
এখন আমাদের একমাত্র চিন্তা আপনাকে নিরাপদভাবে আপনার আবাসে পৌছে দেয়া।
- বুঝলাম, এর বেশি আপাতত কিছু জানা যাবে না। অন্য প্রসংগে গেলাম তাই।
- “কিন্তু আমরা এর চেয়ে সহজ কোন পথ দিয়ে কি যেতে পারতাম না? এটা তো বাজে একটা পথ, ওদের কষ্ট হচ্ছে” আমি ইয়েতিদের দিকে লক্ষ্য করে বললাম।
- যেতে পারতাম, মহামান্যা।
কিন্তু আমার উপর কড়া নির্দেশ আছে সব কিছুর উপরে আপনার নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের.. আপনার শত্রুরা সব জায়গায় ওত পেতে আছে। এখানে আসার পথেও তাদের অস্তিত্ব টের পেয়েছি আমি। তাই এই দুর্গম পথ বেছে নিতে হয়েছে। আর এই পথের নির্দেশ আমরা ছাড়া আর কেউ জানে না, তাই আমরা অনেক নিরাপদ।
“
-
- আচ্ছা আমিই যে তোমাদের কাঙ্খিত জন সেটা কি করে বুঝলে?” আংলুর কাছ থেকে কথা বার করার চেষ্টা করি আমি। একটু হাসে আংলু, যেন ছোট বাচ্চার সাথে কথা বলছে।
- মহামান্যা, আপনি এই মুহূর্তে আমাদের উংচি ভাষায় কথা বলছেন, আপনি যদি তিনি না হতেন তবে নিশ্চিতভাবে এই ভাষায় কথা বলতে পারতেন না। এই ভাষা অনেক প্রাচীন। কেবলমাত্র দেবীর অনুসারীরাই এই ভাষায় কথা বলে এখনও।
বেশ বুঝতে পারছি এর বেশি কথা আর কিছু বলার নেই, আমার কোন ধারনা নেই, কিভাবে আমি তাদের ভাষায় কথা বলছি। আমার কাছে তো মনে হচ্ছে, আমি বাংলাতেই কথা বলছি।
আপুকে পুরো কথাবার্তার বিষয়বস্তু বুঝিয়ে দিলাম। সে এতক্ষন আমার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে ছিল। হয়ত আমার উংচি বলা দেখছিল! জ্বালা!
কি করবো ভাবছি এখণ, আপুই পরামর্শ দিলো ওদের ভাষা তাকে শেখাতে, এটা আপুর ইয়েতিদের নিয়ে গবেষণায় অনেক কাজে আসবে।
আমিও তাই খুশি মনে শেখাতে শুরু করলাম এক অজানা ভাষা, যার মাথা মুন্ডু আমি নিজেও তেমন জানি না।
কিভাবে যে সময় কেটে গেছে, একদম টের পাইনি। এর মধ্যেই আমরা চলে এসেছি একটা গুহায়। ওরা পালকি নামিয়ে খাবারের আয়োজন করতে শুরু করলো। আমি আপুকে সাথে নিয়ে কালির কাছে চলে গেলাম।
কালি উঠে দাঁড়ালো আমাদের দেখে। চোখের দেখায় বুঝলাম, ইয়েতিদের ওষুধে বেশ ভালই কাজ দেখিয়েছে। তবে পুরো ব্যপারটা নিয়ে সে যে ভীষণ মনমরা হয়ে আছে, তা তার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এর সাথে নিজের পরিচিত এলাকা ছেড়ে আসার অস্বস্তিবোধ তো আছে।
কোন একটা আশ্চর্য কারনে আমার একদম কোন অস্বস্তি নেই।
এই ঠান্ডা, বরফ শীতল আবহাওয়া, কোনটাই আমাকে একবিন্দু ক্লান্ত করছে না। বরং সময়ের সাথে সাথে আমি আরও সজীব হয়ে উঠছি যেন!
একটু পরেই খেয়েদেয়ে সবাই যখন বিশ্রাম নিচ্ছে, তখন আপু গিয়ে বসলো শাহেদ ভাইয়াদের কাছে। আমি কালিকে নিয়ে আবার ঐ বাক্সের কাছে গিয়ে বসলাম। কালি চেয়ে নিল, সেই খুলবে, কোন অজানা বিপদ থাকতে পারে এটাতে। বিপদ না, অজানা কিছু মিলল।
বাক্সটা খুলতে গিয়ে এবারে একটা ছোট্ট গোপন কোঠর পেয়ে গেলাম। ওটার মধ্যে থেকে বের হলো একটা ভারী লকেট যুক্ত চেইন।
তাকিয়ে থাকলাম একদৃষ্টে, লকেটটা অদ্ভুত, চমৎকার একটা লাল চুনি পাথরের হৃদপিণ্ড। নিজেকে সামলাতে পারলাম না, কালির হাত থেকে লকেটটা নিয়ে পড়ে ফেললাম গলায়। সাথে সাথেই মাথা ঘোরার মত একটা অনুভুতি হল, মনে হলো আমার চারপাশের পৃথিবী যেন লালচে হয়ে উঠেছে, আমার আশেপাশের প্রতিটি পাথুরে দেয়াল, প্রতিটি মানুষের মুখ ভিন্ন ভিন্ন লাল রঙ ধারন করেছে।
একটা ঝটকা দিয়ে আবার সব ঠিক হয়ে গেল। মাথাটা একটু হালকা লাগছে।
কি কারনে কে জানে, আমার কেন জানি মনে হল, আমি চাইলে এই পাথুরের দেয়ালের ওপাশে কি আছে সেটা দেখতে পারবো। নিজেকে একবার মনে মনে ধমক দিলাম, পাগলের মত চিন্তা করিস কেন?
কিন্তু যখন তাকালাম দেয়ালের দিকে, আমি পরিসকার দেখতে পেলাম, দেয়ালের ওপাশে একটা বুনো ঝোপ আর তার মধ্যে দুটো বনমোরগ খুটে খুটে পোকা খাচ্ছে। সত্যি দেখছি নাকি মনের কল্পনা, এটা পরীক্ষঅ করার জন্য কালিকে বলতেই ও ইয়েতিদের একটা বল্লম নিয়ে চলে গেলো, একটু পরেই দুটো বনমোরগ নিয়েই হাজির।
মুখ ভর্তি হাসি। আমি চুপ করে বসে রইলাম। এভাবে একটার পর একটা চমক, কতক্ষন সামলাতে পারবো জানি না।
একটু পরেই আংলু এসে আমাকে বলল, এভাবে কালি কে কোথাও পাঠানো উচিত হয়নি, এতে আমাদের লুকোনো জায়গার কথা প্রাচীন সময়ের শত্রুদের কাছে প্রকাশ পেয়ে যাবে। তার দুশ্চিন্তা শুনে তাকে আস্বস্ত করার জন্য আংলুকে বললাম আমার দৃষ্টির এই অভাবনীয় পরিবর্তন এর কথা।
জবাবে আংলু শুধু মাথা নিচে নামিয়ে আমাকে কুর্নিশ করলো।
আবার শুরু হল আমাদের যাত্রা। আমি যেকোন কিছু ভেত করে চাইলেই দেখতে পারছি, এটা ভীষন নাড়া দিয়েছে আপুকে। আপু বাদে উন্নত সমাজের বাকিরা অনেক আগে থেকেই আমার কাছ থেকে দুরে সরে গেছে, এই ঘটনায় সেটা বাড়ল আরও। তবে এর বাইরে আমার এই নতুন ক্ষমতা বেশ কাজে দিচ্ছে।
আমি চাইলেই যেকোন বাধা ভেদ করে দেখতে পারছি, দুরে থাকা পশু খুজে বার করা আমার জন্য কোন ব্যাপারই না এখন। সাথে থাকা ইয়েতিদের সহায়তায় সেইসব পশু শিকার করছে কালি। তাকে সবসময়ই খুশি দেখায় এখন, আংলু বারবার বলেও তাকে আমার পালকির পাশে পাশে হাটা থেকে বিরত করতে পারেনি।
এরপরে আবার নতুন জিনিস হল, আমি এখন চাইলেই দুরের কিছু শুনতে পারি। আমাকে কেবল মনোযোগ দিতে হয়, খুজে নিতে হয় একটু কষ্ট করে, এই যা।
নতুন নতুন পরিবর্তন আমাকে এখন আর আগের মত করে অবাক করে না। আমি মেনে নিয়েছি আমার এই অদ্ভুত জীবন।
অল্প দিনের মাঝেই এরপরেই আমরা চলে এলাম একটা নদীর ধারে, আংলু জানালো এর নাম নাম ইরাবতী। এই নদী পেরিয়েই আমাদের পৌঁছাতে হবে আদিনিবাসে।
কিন্তু এখন নদীতে যা স্রোত, তাতে নদী পেরোতে গেলে মারাত্মক ঝামেলায় পড়বো।
আংলু সিদ্ধান্ত নিলো, রাতের দিকে স্রোত কমে আসলে আমরা সবাই একে একে পার হবো। তবে আমি আর আপু নিরাপত্তার জন্য পালকিতেই থাকবো।
অনেকটা সময় পালকিতে থেকে হাত পায়ে জড় হয়ে গেছে। তাই একটু হাটাহাটি করার চিন্তা করলাম, আংলু তো প্রথমে রাজিই নয়। পরে কালি এবং আরও দুজন ইয়েতি আমার সাথে যাবে, এই শর্তে রাজি হল সে।
বাইরে আসতেই অদুরে বনমোরগ নজরে আসলো। কালি আর ইয়েতি দুজনের সহায়তায় প্রায় এক ডজন বন মোরগ ধরলাম আমি।
ওদের ছাড়িয়ে একটু সামনে এগিয়ে যেতেই ঘটনাটা ঘটল। আমি একজন মানুষতে দেখলাম দুরের পাহাড়ের মাথায় দাড়িয়ে থাকতে।
দরকার না থাকলেও, নতুন পাওয়া খেলনা যেভাবে খেলে মানুষ, আমি সেভাবেই সুযোগ পেলেই আমার নতুন পাওয়া ক্ষমতার ব্যবহার করছি এখন।
একটু মনোযোগ দিয়ে মানুষটার দিকে তাকাতেই তাকে স্পষ্ট দেখতে পেলাম আমি। একা নয় সে, পাশে বেটে মত আর একজন।
আমার দিকে তাকিয়ে কথা বলছে দুজনে। ভয় পেলাম আমি। এরাই কি আংলুর বলা শত্রু?
আরও জানতে হবে ওদের বিষয়ে।
চোখ থেকে মনোযোগ সরিয়ে শব্দের দিকে মন দিলাম। বাতাসের বিরতিহীন শো শোর পাশাপাশি আস্তে আস্তে দুরের দুজন মানুষের আলোচনা স্পষ্ট হয়ে উঠতে থাকল আমার কাছে।
এভাবেই আমি জেনে গেলাম মানুষ দুজনের পরিকল্পনার কথা। আমাদের দু বোনকে তারা অপহরণকরতে চায়। বরফের মত স্থির হয়ে জমে গেলাম আমি।
একটু সময় পার হতেই জানতে পারলাম গত কয়েকদিনের তাদের কর্মকান্ড। কোথায় দেখেছে তারা আমাদের, কিভাবে পেছনে পেছনে এসেছে, কোথায় তারা আমাদের ধরতে চায়।
বেশিক্ষন দাড়াতে সাহস করলাম না। না জানি কি ঘটে, বিশেষকরে ওদেরবুঝতে দেয়া যাবে না, আমি কিছু আচ করেছি বা তাদের সম্পর্কে জানতে পেরেছি। কালি আর বাকি তিনজনকে নিয়ে দ্রত ফিরে এলাম আমাদের নদী তীরবর্তী ক্যাম্পে।
আংলুকে পেয়েই ওকে সব খুলে বললাম। আংলু চুপচাপ শুনলো, চেহারায় সতর্কতার ছাপ। বার বার জিজ্ঞেস করে সব ডিটেল জেনে নিল আমার কাছ থেকে। কয়জন, দেখতে কি রকম, কি তাদের পরিকল্পনা। স্থির হয়ে সব শুনলো।
এরপরে আরও খানিক চুপ করে থেকে বলল, মহামান্যা, ওদের অস্তিত্ব আমি আরো আগেই টের পেয়েছি, কিন্তু ওরা ঠিক কোথায় তা বুঝতে পারছিলাম না। তবে তারা যে আশে পাশেই আছে, তা জানতাম। ওরা কিছু করার চেষ্টা করবে, এটা জানলেও পরিস্কারভাবে তাদের পরিকল্পনার কথা জানতাম না।
কিন্তু, আমার দিকে তাকিয়ে একটা শ্রদ্ধা মিশ্রিত হাসি দেয় সে, আপনার কৃপায় এখন আমরা জানি তাদের ভবিষ্যত কর্মকান্ড। এখন এটাকে কাজে লাগাতে হবে।
কিভাবে কি করবো এটা নিয়ে কথা বলার জন্যে সবাইকে একসাথে ডাকলাম আমি আংলুর পরামর্শে। এক জায়গায় বসে ঝলসানো বনমোরগ খেতে খেতে বিস্তারিত আলোচনা করলাম আমরা।
ডঃ শীধু একটা ভালো বুদ্ধি দিলেন। “এক কাজ করা যেতে পারে, ওরা যেহেতু আসবে রাতের আধারে সুতরাং পালকিতে কে আছে এটা ওরা বুঝতে পারবে না। আজ পালকিতে আমি আর শাহেদ বসে থাকবো তুমি আর শায়লা হেঁটে পার হবে নদী।
ওরা যখন আসবে আমরা তৈরি হয়েই থাকবো। আসার সাথে সাথে ধরে পেটের সব কথা বের করে নিতে হবে। তারপর ভাবা যাবে ওদের নিয়ে কি করা যায়।
প্রবীন ডঃ শীধুর পরিকল্পনা সবাই পছন্দ করে নিলো, শুধু আপু বাদে। বেচারী করুণ চোখে শাহেদ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি আর ডঃ শীধু হাসি লুকানোর জন্যে অন্যদিকে নজর ফিরালাম। আলোচনার ওখানেই শেষ। আংলু পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে বাকি টুকু সামলাবে। কালি আমার সাথে লেগেই রইলো পুরোটা সময়, বুঝতে পারলাম, নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও আমায় রক্ষা করার চেষ্টা করবে সে।
অবশেষে সন্ধ্যা এলো আর সন্ধার হাত ধরেই এলো ঝুম রাত।
একটু পরেই এলো চাঁদ তার সমস্ত সৌন্দর্য নিয়ে। বরফের উপরে চাদের আলোর যে সৌন্দর্য, যে না দেখেছে তারপক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। আমি থমকে তাকিয়ে থাকলাম খানিক্ষন। এই কয়দিন বেশ কুয়াশা ছিল, চাদের আলো বোঝা যায়নি। আজ চারদিক একদম ঝকঝকে পরিস্কার।
ততক্ষনে নদী ইরাবতীর স্রোত বেশ কমে এসেছে। আমি আর আপু, চেহারা ঢাকা পোশাক পড়ে কষ্ট করে হেটে পার হলাম নদী। স্রোত কম হলেও, কষ্ট কোন অংশে কম হল না। পার হবার পর, ইয়েতিদের এটা দল আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই আমাদের পালকি রওনা হর অন্য পাশ থেকে।
ঠিক যখন নদীর মাঝখানে পালকি, তখনি প্রথমে দুলে উঠল পালকি জোরেসোরে, তারপরেই ওটার মধ্যে শুরু হলো ভীষণ ধস্তাধস্তি।
বেহারাদের কাধ থেকে পালকি পানিতে পড়ে গেলো, দ্রুতই সবগুলো ইয়েতি মিলে দুইজন মানুষ ধরে ফেলল। ড: শীধু আর শাহেদ ভাই একদম ভিজে শেষ। তাড়াতাড়ি ওদের জন্য শুকনো কাপড়ের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়ে আমি চলে এলাম সামনে। ইয়েতিরা দুজনকে বেধে ফেলেছে এতক্ষনে। আংলু তাদের মাথার উপরে হাত নেড়ে কি সব জাদু মন্ত্র পড়ছে।
আমি ওদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,কেমন আছো তেখ্রা? কেমন আছো কাংচি? ওরা যেন ঠিক ভূত দেখার মতোই চমকে উঠলো। গা গুলানো একটা অনুভুতি আমাকে গ্রাস করে ফেলল যেন, আমার মাঝে যেন আসুরিক কিছু একটা ভর করেছে। আমি ওদের চোখের দিকে তাকিয়ে তাদের সমস্ত অতীত দেখতে পাচ্ছিলাম।
অফ টপিকঃ নেক্সট পর্ব শুক্রবার দেয়া হবে। এবং আজকের পর্ব বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারনে দিতে একটু দেরী হয়েছে সেজন্যে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।