আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা কি পারিনা পৃথিবীটাকে স্বর্গ বানাতে.....আমাদের মানবতাবোধ কোথায়০৬/১০/২০১২

নাগরিক ব্লগে আমার এক বন্ধু চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকার এক পঙ্গু বাক্তির ভিক্ষাকরার করুণ পরিনতিতে সৃষ্টিকর্তার মানবতাবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন,''মানবতাবোধ হারিয়ে আল্লাহ আত্মহত্যা করেছেন লজ্জায়-সংগোপনে!'' ''একজন মানুষ, যে পঙ্গু, স্রষ্টা যাকে নিজ হাতে পঙ্গু বানিয়েছে, সে কীভাবে নিজেকে সাহায্য করবে? তাকে তো কর্ম করে খাওয়ার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা দেন নি। পঙ্গু মানুষটি তো আর নিজেকে নিজে সাহায্য করতে পারবে না, আর তাই বলে স্রষ্টাও উনাকে সাহায্য করবে না। কিন্তু এর দায়ভার কার নেওয়া উচিত? নিশ্চয় স্রষ্টাকে, কারণ মানুষটিকে পঙ্গু বানিয়েছে তো তিনিই। '' এই ধরনের একটি প্রশ্ন তুলেছিলেন ছবি নির্মাতা Gene Roddenberry, তিনি বলেছিলেন “সর্বজ্ঞ সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ঈশ্বরের গল্পের যৌক্তিকতা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন করা উচিত।

সে ভুলভ্রান্তিতে ভরা মানুষ বানায়, আবার নিজের ভুলের জন্য দায়ী করে তাদেরকেই। “ পঙ্গু বাক্তিতি প্রতিদিন‘আইল,আইল,আইল’বলে হাত তুলে ভিক্ষা করে কিন্তু চট্টগ্রামে প্রচুর বৃষ্টি হওয়াতে ভিক্ষা করতে পারে নি, একটু বৃষ্টি কমাতেই সারা শরীরে প্ল্যাস্টিকের আবরণ জড়িয়ে রাস্তায় নেমেছে ভিক্ষে করতে,নয়তো রাতে খাবে কী? সৃষ্টিকর্তার মানবতাবোধ নিয়ে প্রশ্ন করার আগে আমাদের বিবেককে প্রশ্ন করা উচিৎ আমাদের মানবতাবোধ কোথায়?৩০-৪০ টাকার জন্য যে পঙ্গু লোকটি রাস্তায় ভিক্ষা করে তার ঘরে দুই বেলা ভাত দেওয়ার মত ধনী লোক কি সৃষ্টি কর্তা সৃষ্টি করেন নি? পঙ্গু লোকটিকে যেমন পঙ্গু করে ভিক্ষুক বানানো হয়েচে তেমনি আমাদেরকে সর্বাঙ্গ দিয়ে ধনী বানানো হয়েছে যাতে পায়ে হেটে ভিক্ষুকের থালায় দুটো পয়সা দিতে পারি। কিন্তু আমরা বিবেককে ভাঁজ করে মানিব্যাগে সযত্নে রেখে দেই যার কারনে তার মত পঙ্গু লোকের আজ এ দুরবস্থা। সে তার স্রষ্টাকে করুন পরিনতির জন্য কখনো দায়ি করে নি,সে বারংবার ধিক্কার দিচ্ছে আমাদের সমাজ কে,আমাদের বিবেকবোধ কে। সৃষ্টিকর্তা শুধু পঙ্গু মানুষটির দায়ভার নেননি,তিনি নিয়েছেন সারা পৃথিবীর উদ্ভিদ ও প্রানির দায়ভার।

অবশ্য খাদ্য খাদক সম্পর্কে ব্লগার আরও লিখেচেন,''যখন কোন সবল প্রাণী দুর্বল প্রাণীকে ধরিয়া ভক্ষণ করে, তখন ঈশ্বর খাদকের কাছে ‘দয়াময়’ বটে। কিন্তু তখন তিনি কি খাদ্য-প্রাণীর কাছেও দয়াময়? যখন এই সর্প একটি ব্যাঙকে ধরিয়া আস্তে আস্তে গিলতে থাকে, তখন তিনি সর্পটির কাছে দয়াময় বটে। কিন্তু ব্যাঙটির কাছে তিনি নির্দয় নহেন কি? পক্ষান্তরে তিনি যদি ব্যাঙটির প্রতি সদয় হন, তবে সর্পটি অনাহারে মারা যায় না কি? কাহারও জীবন রক্ষা করা যদি দয়ার কাজ হয় এবং হত্যা করা হয় নির্দয়তার কাজ, তাহা হইলে খাদ্য-খাদক ব্যাপারে ঈশ্বর ‘সদয়’-এর চেয়ে ‘নির্দয়’ই বেশী। “ এক্ষেত্রে আমি বলতে চাই ব্লগার হয়ত সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিরহস্য সম্পর্কে জ্ঞ্যাত নন, সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীকে তিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষের সেবার জন্য। তাই তারা নির্দ্বিধায় তাদের জীবন বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত।

আর এ জন্যই খাদ্য খাদকের মধ্যকার এ সম্পর্ক। কোন কবির নাম ছাড়া অনেক আগে ফেসবুকে ব্লগার এই দুর্দান্ত কবিতাটি পেয়েছিলেন - "অফুরন্ত আলোয় আলোকিত উঁচু উঁচু ভবন আর গরিবের কূপিতে তেল ফুরিয়ে গেছে সলতে দ্রুত পুড়তে পুড়তে একেবারে শেষ আঁধার ঘর! নীরব রাতের নিষ্ঠুর বৈরিতা! পাগলের প্রলাপ রাতের নীরবতা ভাঙ্গিয়ে দেয় গৃহকর্তার উন্মাদ আচরণ ভাঙ্গিয়ে দেয় ঘুম রাতের ঘুম ভেঙ্গে যায় আঁধারের নগ্ন খেলায় ঈশ্বর এতকিছু দেখেন অথচ এইটুকু দেখেন না! বোধহয় ঈশ্বর আত্মহত্যা করেছেন লজ্জায়-সংগোপনে!" সৃষ্টি কর্তাতো আমাদের জন্য পৃথিবীতে সব কিছু দিয়ে দিয়েছেন,আমরা যদি আমাদের মানবতাবোধ,বিবেকবোধ জাগিয়ে তুলতে পারি না,তবে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমাদের কোন আক্ষেপ থাকবে না , আমরা কি পারি না আমাদের পৃথিবীটাকে স্বর্গ বানাতে?  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।