আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চার্লস ডারউইন

চার্লস ডারউইন তিনিই সর্বপ্রথম অনুধাবন করেন যে সকল প্রকার প্রজাতিই কিছু সাধারণ পূর্বপুরুষ হতে উদ্ভূত হয়েছে এবং তার এ পর্যবেক্ষণটি সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন। জৈব প্রযুক্তি থেকে শুরু করে ফরেনসিক মেডিসিন পর্যন্ত সকল ব্যবহারিক বিজ্ঞানই আজ বিবর্তনের পক্ষে সাক্ষ্য দিচ্ছে। আজ তাই ডারউইন দিবস উদ‌যাপনের জন্য নব উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। যে জিন সম্পর্কে ডারউইনের জ্ঞান প্রাচীন বিজ্ঞানীদের মতই ছিল, সেই জিন কিভাবে মানবতার খোলস উন্মোচন করেছে, কিভাবে শৌখিন বিজ্ঞানী ডারউইনকে আধুনিক সভ্যতার নায়ক বানিয়েছে তা দেখে আমরা আবারও বিস্মিত হব। এক সময় বাবা রবার্ট ডারউইন বুঝতে পারলেন তার এই ছেলেকে দিয়ে বিশেষ কিছু হবে না।

তাই তাকে ধর্মবেত্তা হওয়ার জন্য ইউনিভার্সিটি অফ ক্যামব্রিজে ভর্তি হতে আদেশ করলেন। ডারউইন বলেছেন- এই যে জীবজগৎ,এই যে সব গাছপালা,পশুপাখি,মানুষ এর কিছুই আল্লাহ সৃষ্টি করেন নি?মুসলমানরা মনে করেন আল্লাহ,হিন্দুরা মনে করেন ভগবান আর খ্রিস্টানরা মনে করেন গড। তিনিই সৃষ্টিকর্তা। কিন্তু ডারউইন বলেছেন,কোনও পরমেশ্বরই এসব সৃষ্টি করেন নি। প্রকৃতির সব কিছুই নিজস্ব সৃষ্টি।

১৮৩৫ সালে বিগল জাহাজে চড়ে চার্লস ডারউইন গালাপাগোস দ্বীপে গিয়েছিলেন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর। দ্বীপের বেশ কিছু পাখি তার নজর কেড়েছিল। সেই পাখিগুলোর নামের সাথে তাই ডারউইনের নাম জড়িয়ে আছে। এখনও এগুলোকে ডারউইনের ফিঞ্চ (finch) নামে ডাকা হয়।

ডারউইনের সেই বিখ্যাত ফিঞ্চ পাখিরা এখনও বিজ্ঞানীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। আলবার্ট আইনস্টাইন এবং এরকম অনেক বিজ্ঞানীর মত ডারউইনও জন্মসূত্রে মেধাবী ছিলেন। প্রকৃতিবিজ্ঞান বিষয়ে তার কোন উঁচুমানের ডিগ্রি ছিল না। ছাত্র হিসেবে মাঝারি গোছের ছিলেন, সবসময়ই প্রথাগত শিক্ষাকে ঘৃণা করতেন। জাহাজে বসেই তিনি চার্ল লায়েলের “Principles of Geology” বইটি পড়ছিলেন।

এই বইয়ে উল্লেখ ছিল, বর্তমানে যে হারে ভূমিক্ষয় ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে এবং পলি জমছে অতীতেই ঠিক একই হারে হতো। একটি প্রজাতি যখন বিবর্তন ধারায় অন্য প্রজাতিতে রূপান্তরিত হবে তখন নিশ্চয় দুই প্রজাতির মাঝা মাঝি এক মধ্য প্রজাতির জীব হিসাবে দীর্ঘদিন অতি বাহিত করবে কারন বিবর্তন ঘটে হাজার হাজার নয় বরং লক্ষ লক্ষ বছর ধরে । চার্লস ডারউইন ইংল্যান্ডের এক ডাক্তারের ছেলে প্রথমে তিনি ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার মন বসে নি। তারপর ডারউইন তার বাবার ইচ্ছায় ধর্মতত্ত্ব পড়তে শুরু করলেন।

ডারউইন এর যখন ২২ বছর বয়স,তখন তিনি একটি জাহাজে ঘোরার আমন্ত্রণ পান। সেই জাহাজে নানান রকম লোকজন ছিল। ডারউইন কে নির্বাচন করা হলো প্রকৃতি বিজ্ঞানী হিসেবে। জাহাজ টা সমদ্রে ভাসবে পাঁচ বছর ধরে। পাঁচ বছর ধরে বহু দ্বীপ ঘুরে ঘুরে ডারউইন অনেক জন্তু-জানোয়ার,পোকা-মাকড়,লতা-পাতা সংগ্রহ করে আনেন।

তারপর সেগুলো নিয়ে গবেষনা করতে করতে অনেক বছর পরে একটা বই লিখেন। সেই বইটির নাম- 'দা অরিজিন অফ স্পিসিজ'। ডারউইনের আর একটা তত্ত্ব হচ্ছে- 'স্টাগল ফর একজিসটেন্স'। পৃথিবীতে যত মানুষ জন্মায়,পঁচিশ বছরে তার সংখ্যা দ্বিগুন হয়ে যায়। বন্যা,খরা,ভূমিকম্প,দুর্ভিক্ষ,যুদ্ধে বহু মানুষ ও প্রানী মারা যায়।

এর মধ্যে যারা বাঁচে,তারাই টিকে থাকে। সারভাইভাল অফ দা ফিটেস্ট!সমস্ত প্রানী কুলের মধ্যে অবিরাম জীবন যুদ্ধ চলছে। যারা জয়ী হয়,শুধু তাদেরই অধিকার আছে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার। বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিম্নতর প্রজাতি থেকে উচ্চতর প্রজাতির জন্ম হয়েছে। ১৮৮২ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্তই তিনি অসুস্থ ছিলেন, যদিও এর কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি।

মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে হৃদরোগ, মাংসপেশীর খিঁচুনি ইত্যাদি সব ধরণের লক্ষণই তার মধ্যে দেখা গিয়েছিল। এসব কারণেই ডারউইন পরবর্তীতে আর কোন অভিযানে বেরোতে পারেননি। ১৮৫৯ সালে ডারউইন তাড়াহুড়ো করে “অরিজিন অফ স্পিসিস” ছাপিয়ে দিলেন। কারণ, তিনি শুনতে পেয়েছিলেন, ওয়ালেস নাকি একই ধরণের সিদ্ধান্তে এসেছেন এবং তার পাণ্ডুলিপিটি অচিরেই প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। বর্তমান পৃথিবীর বৈচিত্র্যময় প্রজাতিগুলো যে একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে শাখা-প্রশাখা বিস্তারের মাধ্যমে বিকশিত হয়েছে, এই ধারণা মানুষ বেশ দ্রুতই গ্রহণ করেছে।

কোটি কোটি বছর আগেকার হরিণ জাতিয় প্রানীরা খাদ্যেও অভাবে পড়ে উচু ডাল থেকে পাতা খেতে গিয়ে গলা লম্বা হয়ে তারা জিরাফে পরিনত হয়েছে (যদিও অন্য হাজারো রকম প্রানী একই সমস্যায় পড়া সত্ত্বেও তাদের গলা যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেছে), ভল্লুক জাতীয় প্রানীরা ঝর্নাধারার নীচে বয়ে চলা পানির স্রোত থেকে মাছ ধরে খেতে গিয়ে তিমি মাছে পরিনত হয়েছে, বানর জাতিয় প্রানীরা হঠাৎ করে খাবার সন্ধানে গাছ থেকে নেমে আসায় লেজ হারিয়ে মানুষে পরিনত হয়েছে ইত্যাদি। I fully agree with your comments about the lack of direct illustration of evolutionary transitions in my book. If I knew of any fossil or living, I would certainly have inculded them…. I will lay in on the line …. There is not one such fossil for which one could make a wattight argument.বিজ্ঞানীরা অধুনা মানুষের বাসোপযোগী গ্রহ-উপগ্রহ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। মঙ্গল গ্রহে প্রাণীর অস্তিত্ব থাকতেও পারে—এরূপ দৃঢ় আশাবাদ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মঙ্গলে অভিযান চলছে। কিন্তু সর্বত্রই হতাশার সুর। পৃথিবী ছাড়া আর কোথাও মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীর বাস নেই।

তাহলে প্রশ্ন, বিবর্তনের মাধ্যমেই যদি প্রাণীর উদ্ভব হয়ে থাকে তাহলে পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথাও সেরূপ কোনো প্রাণীর উদ্ভব ঘটেনি কেন? একটা কৌতুক বলি- শিক্ষক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলেন- পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন প্রানী কোনটি। ছাত্র তৎক্ষণাৎ উত্তর দিল - জেব্রা। শিক্ষক আবার জিজ্ঞাসা করলেন কেন? ছাত্রটি আবার বলল স্যার পৃথিবীতে প্রথমে তো সব সাদা কালো ছিলো। জেব্রা তো এখনও সাদা কালো। তাই এটাই সবচেয়ে প্রাচীন প্রানী।

রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব চের্নিশেভস্কি একহাত নিয়েছিলেন ডারউইনের উপর। তিনি মনে করতেন ডারউইনের তত্ত্ব যদি সঠিক হত তাহলে জীবজগতে এক চরম বিশৃঙ্খলাতা দেখা দিত এবং সমাজ অগ্রগতির পথে পা বাড়াতে পারত না। তিনি মনে করতেন প্রকৃতি জগতে প্রতিযোগীতাই শেষ কথা নয়, সহযোগিতাই শেষ কথা। রুশ বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে চের্নিশেভস্কির এই মতবাদকে অভিহিত করা হয়েছিল "চমৎকার, শক্তিশালী ও অনিন্দ্যসুন্দর' হিসেবে। রুশ বিজ্ঞানী ক্রপটিকনও মনে করতেন প্রাণীদের অস্তিত্বরক্ষার চাবিকাঠি হল তাদের সামাজিক জীবন-যাপন ও সহযোগিতার মনোভাব।

বস্তুবাদকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বা নিরীশ্বরবাদ প্রচারের জন্য ডারউইনের মতবাদের কোনো বিকল্প ছিল না। তবে সমাজতান্ত্রিকরা এই তত্ত্বের প্রয়োগে সমাজতন্ত্রের রং চটাতে ভুলতো না। বর্ণবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের গন্ধ থাকলেও সমাজতান্ত্রিকদের বস্তুবাদী ধারণার সাথে এর দহরম-মহরমটা বেশী থাকায় ডারউইনের বিবর্তনবাদকে গ্রহণে তারা পিছিয়ে থাকেনি। ডারউইনের সময়ে যে অনুন্নত Microscope ছিল তাতে প্রতিটি কোষকে এক একটি প্রকোষ্ঠ ছাড়া কিছুই মনেই হয়নি। কিন্তু ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কারের পর দেখা যায় একটি কোষ কত জটিল।

বিবর্তন তত্ত্ব সর্বপ্রথম ফ্রেন্স জীববিজ্ঞানী ল্যামার্ক তার Zoological Philosophy (1809) নামক গ্রন্থে তুলে ধরেন। লামার্ক ভেবেছিলেন যে, প্রতিটি জীবের মধ্যেই একটি জীবনী শক্তি কাজ করে যেটি তাদেরকে জটিল গঠনের দিকে বিবর্তনের জন্য চালিত করে। তিনি এটাও ভেবেছিলেন যে, জীবেরা তাদের জীবনকালে অর্জিত গুণাবলি তাদের বংশধরে প্রবাহিত করতে পারে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.