আমি সুমাইয়া বরকতউল্লাহ। ছাত্রী। লেখালেখি করা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ছড়া, গল্প লিখি। পত্রিকায় নিয়মিত লিখি।
লেখালেখি করে বেশ কয়েকটা পুরস্কারও পেয়েছি। শিশু অধিকার রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরূপ (প্রিণ্ট মিডিয়া) পর পর ৩ বার জাতিসংঘ-ইউন মীনা আমার খুব বন্ধু। সেপ্টেম্বর ২৪ তারিখে গেল মীনা দিবস। আমাদের দেশের জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র মীনা। মীনাকে চেনে না এমন কোনো শিশু-কিশোর পাওয়া যাবে না দেশে।
শুধু চেনেই না, মীনাকে সবাই খুব ভালোবাসে। কারণ মীনা বলে দেয় আমাদের কী করা উচিৎ আর কী করা উচিৎ নয়। মীনা বলে দেয় কীভাবে নানা সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হয়। কীভাবে মেয়েশিশুকে তার অধিকার আদায় করে নিতে হয়। মীনা আমাদের অনেক সাহসী করে তুলছে।
আর বুদ্ধিমান করে তুলছে। মীনা কার্টুন দেখতে যেমন মজার তেমনই অনেক কিছু আছে শেখার। তাই শিশুরা মীনা কার্টুন দেখে অনেক কিছু জানতে পারে আর শিখতে পারে।
ইউনিসেফ-এর উদ্যোগে ১৯৯১ সাল থেকে আমাদের দেশে মীনা কার্টুন শুরু হয়। মীনা কার্টুনের মীনা আমাদের সবার প্রিয়।
আমি খুবই পছন্দ করি এ কার্টুনটি। মীনা কার্টুন দেখার সময় আমি মনে মনে মীনা হয়ে যাই। এমনটি ভাবতে আমার খুব ভালো লাগে। মীনা যখন যা করে আর যা কিছু বলে এসবই আমার মনের কথা।
জন্মের পর থেকে পরিবার থেকেই শুরু হয় ছেলে আর মেয়ের মধ্যে নানা রকমের বৈষম্য।
পিতামাতারাও মনে করেন, একটি পরিবারে মেয়ের চেয়ে ছেলের প্রয়োজন বেশি। কারণ ছেলেরাই বিপদে কাজে লাগে। ছেলেরাই সবসময় কাছে থাকে। আর মেয়েরা বড় হলেই চলে যায় স্বামীর বাড়ি। তাকে দিয়ে কী লাভ? তাই মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা বেশি সুযোগ পায় আবার আদর-যতœও পায় বেশি।
এমন চিন্তাই করে অনেকে। আমাদের দেশে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সমস্যা বেশি। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের দামও কম। সমাজে চলাফেরায়ও মেয়েদের নানান সমস্যা আছে। নানা কাজে আর কথায় বুজিয়ে দেয় মেয়ের চেয়ে ছেলেরা দামি।
কিন্তু না, তা ঠিক নয়। ছেলের চেয়ে মেয়ে একটুও কম নয়। ছেলেরা জন্মের পর থেকেই আদর-যতœ আর সুযোগ পায় বলে তারা অনেক কিছু করতে পারে। মেয়েরা যদি ছেলেদের মতো যতœ আর সুযোগ পায় তাহলে মেয়েরাও ছেলেদের মতো অনেক কিছু করতে পারে। কিন্তু একথাটা যে অনেকেই বুঝতে পারছেন না।
এটাই হলো আসল সমস্যা। মীনা কার্টুনের মীনা ছাড়াও আছে রাজু আর মিঠু। কি চমৎকার বন্ধু এরা! এরা নানাভাবে বুঝিয়ে দেয় যে পরিবারে ও দেশে ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা কোনো অংশে কম নয়। সুযোগ পেলে তারাও হতে পারে ছেলেদের সমান।
মীনাকে মনে হয় আমাদের প্রিয় একজন।
মীনার কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখছি। আমাদের বড়রাও শিখছেন। মীনা আমাদের যেমন সচেতন করে দিচ্ছে তেমনি সচেতন করছে বড়দের। ফলে আগের চেয়ে এখন মেয়েদের কদর বেড়েছে। ছেলে-মেয়ের মধ্যে বৈষম্যও কমেছে।
এখন লেখাপড়ায়, কাজে আর বুদ্ধিতে মেয়েরা পিছিয়ে নেই। সুযোগ পেলে মেয়েরাও করতে পারে অনেক কিছু। তাহলে আমরা মীনাকে নিয়ে অহংকার করব না তো কি!
এবার মীনা কাজ করবে অটিজম নিয়ে। মীনা নানাভাবে দেখিয়ে দেবে যে অটিষ্টিক শিশুদেরও আছে অধিকার। তারাও আদর-যতœ আর ভালোবাসা পাওয়ার অধিকার রাখে।
তারা অবহেলার পাত্র নয় আর পরিবারের বোঝাও নয়। তারাও সুযোগ পেলে করতে পারে অনেক কিছু।
মীনা আমার চমৎকার বন্ধু। মীনাকে আমি খুব ভালোবাসি। মীনা দিবসে আমি মীনা, রাজু আর মিঠুকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।