পৃথক দ্বি-পাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিতে আগামী সপ্তাহে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়া হু এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস চীন সফরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আগামী সোমবার চীনের বাণিজ্যিক শহর সাংহাইয়ে পৌঁছবেন নেতানিয়াহু। আগের দিন বেইজিং পৌঁছবেন মাহমুদ আব্বাস।
সফরকালে বিরোধপূর্ণ দেশদুটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে কোনো বৈঠকের আভাস না থাকলেও মধ্যস্থতার বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ পেয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই নেতা একত্রে বসতে চাইলে চীন তার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
গত ছয় বছরের মধ্যে এবারই ইসরাইলের কোনো শীর্ষস্থানীয় নেতা চীন সফর করছেন। এর আগে ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট চীন সফর করেছিলেন।
সফরকালে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ইরানের তেলের অন্যতম আমদানিকারক দেশ চীন দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবরোধেরও ঘোর বিরোধী।
পরমাণু ইস্যুতে বিশ্ব শক্তির সঙ্গে তেহরানের অচলাবস্থা নিরসনেও কাজ করছে জাতিসংঘের স্থায়ী কমিটির এই সদস্য রাষ্ট্র।
এদিকে সফর শুরুর আগে ইসরাইলের যুদ্ধ বিমান সিরিয়ার একটি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যা চীনের জন্য উদ্বেগের কারণ।
সোমবার সাংহাইয়ে পৌঁছে সেখানে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বেইজিংয়ে যাবেন নেতানিয়াহু।
এদিকে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা শিনহুয়ার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, সফরে ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাগুলোর কথা চীনা নেতাদেরকে জানাবেন তিনি ।
শান্তি আলোচনার অগ্রগতিতে চীন ভুমিকা রাখতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন আব্বাস।
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহুর চীন সফরের বিষয়টিও একটি ভালো খবর, চীন সরকার আমাদের দুপক্ষের বক্তব্যই শুনতে পারবে।
”
ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরাইলের আরোপিত অবরোধ প্রত্যাহারে চীনের নেতারা ভুমিকা রাখবেন বলেও তার আশা।
দীর্ঘদিন থেকেই ফিলিস্তিনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে আসছে চীন। সম্প্রতি দেশটি সামরিক খাতসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ইসরাইলের সঙ্গেও সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতিতে চীন খুব কম ভুমিকা রাখার সুযোগ পায়। বিশ্ব রাজনীতিতে নিজের প্রভাব বৃদ্ধির লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইল-ফিলিস্তিনের অচলাবস্থা নিরসনে চেষ্টা চালালেও চীনের সাফল্য খুবই কম।
মাস খানেক আগে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে এক আলোচনায় ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
ইসরাইলের অন্যতম গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের (আইএনএসএস) মতে, জেরুজালেমের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের প্রভাবাধীন থাকা এ অঞ্চলে নিজের প্রভাব বৃদ্ধির ইঙ্গিত হিসেবেই দেখছে চীন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।