অনুভুতিহীন জীবনের অপেক্ষায়... http://www.raatmojur.com/
গত দিন ঢাকা থেকে প্রায় পনেরো ঘন্টা বাস জার্নি করে আবার একবেলা কামলা দিয়ে শরীরের সব শক্তি শেষ। রাতে রাঁধবার ঝামেলা মিটিয়েছিলাম রেঁস্তোরার প্যাকেট কিনে। রাত এগারোটা নাগাদ দেখি চোখের পাতা টেনে নামিয়ে আনছে ঘুম। তারপরও চা গিলে জেগে থাকা। খুব প্রিয় একজন মানুষের কাছ থেকে একটা ফোনের অপেক্ষায়।
রাত বারোটায় প্রথম এসএমএস পেলাম কণ্যার, (ভাগ্নী আরকি)। তারপর ফেসবুকের রাতমজুর প্রোফাইলে সুহৃদরা এসে জানিয়ে গেলেন জন্মদিনের শুভেচ্ছা। নাঈম ভাই প্রতিবারই অবাক করেন কিছু না কিছু ঘটিয়ে, এবারো উনি পোষ্ট দিয়ে ফেললেন একটা। অরুনভাই মেইল করে জানিয়েছে আমাকে কোনো নম্বরেই পাচ্ছে না, পাবার কথাও নয়। অনলাইনে বিচরন প্রায় বাদই দিয়ে দিয়েছি কয়েকমাসে ফেসবুক নোটিফিকেশনগুলোও ইদানিং পড়ি মেইলে, সেলফোন দিয়ে।
হোঁদলরাজা ম্যাসেজ পাঠিয়েছে ফেসবুকে, সাথে সাথে আরো অনেক ব্লগার (সবার নাম দিতে গেলে পোষ্ট অনেক বড় হবে তাই নামের তালিকা উহ্যই থাক)।
এই অধমের জন্মদিনটা মনে রাখবার জন্যে সবাইকে আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে নিজের চটজদি জবাব না দিতে পারার জন্যে কৈফিয়ৎটা দিই এবার।
আমার নানী হেপাটাইটিস-বি আর লাং ক্যান্সারের মতন রোগ জয় করার পরে বলতে গেলে ঠুনকো আর উটকো কিছু ঝামেলাতে প্রচন্ড অসুস্থ। বুড়ো বয়সে হাত ভেঙেছেন, সেটা অপারেশন করতে গেলে এনাস্থেশিয়া সহ্য হবে না বলে জানিয়েছিলেন ডাক্তার। তারপর দিন সতেরো আগে উনি হঠাৎ ব্রেইন স্ট্রোক করে ভর্তি ছিলেন স্কয়ার এর লাইফ সাপোর্ট ইউনিটে।
তারপর সেখানে একবার স্ট্রোক। এতটাই খারাপ অবস্থা যে সাধারন আইসিইউতে আনা যাচ্ছিলো না।
চৌদ্দদিন সেখানে থাকবার পর ওনাকে একটু ভালো দেখে রাখা হয়েছিলো সিএমএইচ এর আইসিইউতে, লাইফ সাপোর্ট সহ। আজ সকালের দিকে হয়েছিলো হার্ট ফেইল, হৃদপিন্ডটা থেমে গিয়েছিলো, শক দিয়ে ফেরৎ আনা হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন রোগীর কন্ডিশন ক্রিটিকাল, সবাই যেনো যে কোনো দুঃসংবাদের জন্যে প্রস্তুত থাকি।
দেশের বাইরে থাকা মামাটাও এসে বসে আছে ঢাকাতে।
এই ভয়াবহ সিচুয়েশনে পরিচিতদের উইশগুলো অনেক হেলপ করেছে স্থির থাকতে।
আর হ্যাঁ, বহু প্রতিক্ষিত ফোনকলটা এসেছিলো রাতেই, যদিও ঠিক এক ঘন্টা পাঁচ মিনিট দেরী করে। তবু, মনটা অনেক হাল্কা লাগে, যখন খুব পছন্দের কেউ ঠিক আমার মত করেই উদ্বেগে ভোগে আমার পরিবারের কারো জন্যে, হাতের কাছে না থাকলেও যে নরম স্বরে বলতে জানে, "আর... আমিতো আছিই..." ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।