ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৬০ সালে তৎকালীন চট্টগ্রামের পূর্ব অংশের পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা। ১৮৬৪ সালে তা স্বতন্ত্র জেলার মর্যাদা পায়। জেলার শাসন কর্তার পদবি ছিল superintend সদর দপ্তর ছিল চন্দ্রখোনায় । ১৮৬৮ সালে তা রাঙামাটিতে স্থানন্তরিত হয়।
১৯০০ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য “ Chittagong hill tracks regulation acts” নামে একটি আইন জারি করে।
এই আইন অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসিত হতে থাকে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাকে ব্রিটিশ সরকার non regulated area বলে ঘোষণা দেয়।
১৯২০ ও ১৯২৫ সালে Chittagong hill track regulation acts সংশোধন করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে excluded area বা শাসন বহির্ভূত এলাকা বলে ঘোষণা করা হয়। ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনেও এ এলাকাকে excluded area হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হলে উপজাতীয় নেতৃবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাকে একটি পৃথক এলাকা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকার, কংগ্রেস, মুসলিম লীগ নেতাদের প্রতি দাবি জানায়।
এ দাবি ব্যর্থ হয় এবং নেতারা পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা , কুচবিহার,মেঘালয়,মিজোরাম প্রভৃতির সমন্বয়ে কতৃপক্ষের নিয়ন্ত্রনে একটি confederation গঠনের দাবি জানায়। কিন্তু এ দাবি বাতিল হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্দোলনের জড় ওঠে এবং action committee গঠিত হয়।
১৯৫৬ সালে সালে পাকিস্তান সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার বিশেষ মর্যাদা (excluded area) অবসান ঘটানো হয় এবং উপজাতীয় জনগণ এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
আইয়ুব খানের শাসনামলে (১৯৫৭-১৯৬২) ১৯৫৮ সালে কাপ্তাই বাধ শুরু করা হয় এবং ১৯৬০ সালে শেষ হয়। আনুমানিক ৩০০ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে কাপ্তাই লেক তৈরি হয়।
ফলে আধিবাসিদের ৪০% ভাগ চাষযোগ্য জমি প্লাবিত হয় । প্রায় ১ লক্ষ উপজাতি বাস্তুহারায় পরিণত হয়। এর ফলে আধিবাসিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
১৯৬৮ সালে আবার পাকিস্তান সরকার জনমতকে অগ্রাহ্য করে পার্বত্য চট্টগ্রামকে “ বিশেষ এলাকার মর্যাদা” দিতে অনিহা প্রকাশ করে। ঘরবাড়ি,চাষযোগ্য জমি ও সম্পদ হারানোর বেদনায় এবং বিশেষ এলাকার মর্যাদা থেকে বঞ্চিত উপজাতি জনগণের প্রায় ৫০,০০০ উপজাতি দেশত্যাগ করে প্রতিবেশী ভারত ও মায়ানমারে চলে যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।