আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামান এখন দূর আকাশের তারা

জামানের সাথে আমার অনেক স্মৃতি। লাল, নীল, বেগুনি, খয়েরি, মেরুন, সবুজ ও আকাশি। পূর্ব তেজতুরী বাজারের একটা লাল বিল্ডিংয়ে আমি তখন থাকতাম, এখনো আছি। এক রুমে আমরা চারজন থাকতাম। আমি, সাইদুল, ইমরুল ও রুপক।

ধীরে ধীরে আমাদের চারজনের ভেতর মধুর একটা সম্পর্ক গড়ে উঠলো। সবচেয়ে বেশি সম্পর্ক হয় সাইদুলের সাথে। আমাদের মাঝে বয়সের ব্যবধান ছিল সাত আট বছর। দিন মাস অতিক্রমের সাথে সাথে আমরাও পরিবর্তন হলাম। ঘুচে গেল বয়সের ব্যবধান।

সাইদুল তার জীবনের অনেক গোপন কথা কাউকে না বলে আমার কাছে বলতো। তখন কেউ জেগে থাকতো না। জীবনের অনেক অনেক কথা, পেটের ভিতরের কথা, পারিবারিক কথা এবং কি জীবনের রোমান্টিক অধ্যায়ের কথাও বাদ পড়তো না। এক সময় আমরা দু’জন বয়সের ব্যবধান ভুলে গিয়ে বন্ধুতে পরিণত হলাম। তাই বলে আমার প্রতি সাইদুলের আগের শ্রদ্ধাবোধ একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে বহুগুণে।

যাক সে কথা। সে এক ভিন্ন গল্প। এখন বলবো জামানের কথা। সাইদুলের কাছে একটা ছেলে প্রায়ই আসতো আমার রুমে। শ্যাম বর্ণের, খাটোকায় অবয়ব।

ছেলেটির নাম তৌহিদুজ্জামান। জামান ডাক নাম। প্রথম যেদিন জামান আমার রুমে আসলো, সাথে সাথে সাইদুল তাকে আমার সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিল। প্রথম দেখাতে শ্যাম বর্ণের ছেলেটিকে আমার তেমন ভালো লাগেনি, তবে খারাপ লেগেছে একথাও বলছি না। তবে হাসিটি ছিল বেশ দেখার মতো, ভারি মিষ্টি।

কালো রসগোল্লার সাথে তুলনীয়। কথা বলতো ছোট গলায়, আস্তে আস্তে, স্পষ্ট উচ্চারণে। কথার মাঝে আঞ্চলিক টান থাকতো। সাইদুলের বিছানায় শুয়ে, বসে, গা এলিয়ে দিয়ে কথা বলতো। প্রথম প্রথম খুব বিরক্ত হতাম, এত কথা কিসের বলে? দেখতে দেখতে ছেলেটিকে আমার ভালো লেগে গেল।

পরে সে না এলে আমিই সাইদুলকে জিজ্ঞাসা করতাম, জামান আসে না কেন? তার কি অবস্থা? আমার প্রশ্ন শুনে সাইদুল খুব খুশি হতো। সুহাস্য বদনে সে আমাকে জামানের কথা বলতো। এভাবে জামান আমার রুমে প্রায়ই আসতো। রাতে থাকতো। রুমে ঢুকতেই হাসি মাখা মুখে সালাম দিয়ে আমার সাথে হাত মিলাতো।

আমিও ও কে হৃদয়ের সবটু ভালবাসা দিয়ে গ্রহণ করতাম। রুমমেট হিসেবে, এক সময় ভাইয়ের মতই মনে করতাম। হৃদয়ে ঠাঁই দিয়েছিলাম। সে আমার রুমে প্রায়ই আসতো। এলে রাতের অন্ধকার ভেদ করে আমরা রেল লাইনের ধারে গিয়ে শামসু ভাইয়ের দোকানে গিয়ে চা খেতাম আর গল্প করতাম।

সে আমার কাছে অনেক কথা বলতো। নিজে হাসতো, আমাকে হাসাতো। একদিন আমার বিছানায় গড়াগড়ি খেতে খেতে তার পছন্দের কথা বললো। তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মনি নামের এক মেয়েকে সে ভালবাসে। যার সাথে এক সময় স্কুলে এক সাথে পড়েছে।

মেয়েটি নাকি এখনো তাকে তেমন কেয়ারে দিচ্ছে না। আমার কাছে পরামর্শ চাইতো। আমি কি পরামর্শ দেবো! সে লাইনে আমিও তেমন দক্ষ না। তবে আমার পোড় খাওয়া এক জীবন বলা যায়। তবুও যতটা সম্ভব বিচার বিশ্লেষণ করে ভালো পরামর্শটাই তাকে দিতাম; অনেক দিয়েছিও।

একদিন তার মোবাইলে টাকা ছিল না। আমার মোবাইল দিয়ে মেয়েটার সাথে কথা বলেছে। পরে মেয়েটির সাথে তার সম্পর্ক কতটুকু গড়ে উঠেছে তা আর বলতে পারবো না। তবে মেয়েটিকে নিয়ে সে অনেক স্বপ্ন দেখতো। একদিন রাত নয়টা।

আমি আমার পড়ার টেবিলে। বসে বসে পড়ছি, লিখছি আর ভাবছি। সাইদুল বললো, তার মন খুব খারাপ। সে জামানের বাসায় যাবে, আজ রাত সেখানেই থাকবে। আমাকেও যেতে বললো।

প্রথমে আমি রাজি হইনি। পরে সাইদুল বললো, ’আকবর ভাই, চলেন সারারাত ছাদের উপর থাকবো, চাঁদ দেখবো, তারা দেখবো, চানাচুর খাবে, গল্প করবো, গান করবো। খুব মজা হবে। ’ সাইদুলের কথা শুনে আমি আর লোভ সামলাতে পারলাম না। অমিও এক আড্ডাবাজ মানুষ।

রাতে গির্জার পাশ ঘেষে আমরা দু’জন হেঁটে হেঁটে জামানের বাসায় গেলাম। সে থাকতো পাঁচ তলায় ছাদের সিড়ির উপরের একটা রুমে। একা। আমি নিচ থেকে হাফ লিটার সেভেন আপ আর একটা প্রাণ ডালভাজা নিলাম। ছাদের উপর বসে বসে খাওয়ার জন্য।

গল্পও যাতে জমে, তার রসদ হিসেবে। ইতোমধ্যে আকাশ থেকে ঝুম বৃষ্টি নেমে এলো। জামানের রুমে আমরা তিনজন অনেক গল্প করলাম। তখন বিশ্বকাপ খেলা চলছিল। আমি ছিলাম ব্রাজিলের সমর্থক।

জামানও ব্রাজিলকে সমর্থন করতো। তখন জামানকে আমার খুব ভালো লাগতো। আমরা তিনজন ডাল ভাজা খেলাম আর গল্প করলাম। বৃষ্টিøাত ছাদের একটা পরিত্যন্ত চকিতে গিয়ে আমরা বসলাম। ইতোমধ্যে আকাশ থেকে কালো মেঘ সরে গেছে।

নীলিমার সাগরে ভেসে উঠলো দ্বীপের মতো সাদা চাঁদ। তারারা মিটিমিটি আলোর পিদিম জ্বালাতে শুরু করলো। জামান গলা ছেড়ে গান গাওয়া শুরু করলো, ’কপি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই, আজ আর নেই..’ এটা ছিল জামানের প্রিয় গান। সাইদুলও তার সাথে গলা মেলালো শেষে আমিও বাদ থাকলাম না। ঘড়ির কাটায় তখন রাত তিনটা।

চারপাশে নীরব, নিস্তব্ধ ঢাকা শহর। আমরা আর বসে না থেকে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। তবুও গান চলতে লাগলো। গল্পের ঝুড়ি থেকে ছোট বড় মাঝারি সাইজের গল্প বের হতে থাকলো। গান, কথা আর আড্ডা স্মৃতি এখনো বিল্ডিংটির প্রতিটি ইটের ভাজে মিশে আছে।

আমরা বিছানায় নিজেদের শরীর এলিয়ে দিলাম। কথা, গান, গল্প তখনও চলতে লাগলো। কী সুন্দর সাদা নীল মিশ্রিত আকাশ। ছুটে চলা সাদা খন্ড খন্ড মেঘ। চাঁদের আলো আমাদের শরীরের উপর খেলা করছে।

তারারা যেন হেসে হেসে আমাদের সাথে গল্প করছে। মাঝে মাঝে লুকোচুরি খেলে। সে রাতে চাঁদ, তারা আমাদের তিনজনকে তাদের সঙ্গী বানিয়ে নিয়েছিল। আমরা গল্প করতে থাকলাম। মেঘ, তারা, চাঁদ দেখতে লাগলাম।

ঠান্ডা বাতাস আমাদের তিনজনের শরীর জুড়িয়ে দিচ্ছিল। আমরা হিল্লোলিত হলাম, পুলকিত হলাম, সিক্ত হলাম প্রকৃতির প্রগাঢ় ভালবাসার ছোঁয়ায়। সে রাতের চাঁদ,তারা, সাইদুল, জামান আর ঠান্ডা বাতাস আমার চির জীবনের সঙ্গী হয়ে রইল। সে রাতের কথা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ গল্প, সোনালি অধ্যায়, খোদাই করা ভাস্কর্য। এখনো আমার কাছে মনে হয় জামান হেসে উঠছে, ছোট গলায় আমার সাথে কথা বলছে, ভাইয়া বলে আমাকে সালাম দিচ্ছে।

গত বছর পাবলিক লাইব্রেরী থেকে রচনা প্রতিযোগিতায় আমি তৃতীয় স্থান অর্জন করি। জামান একদিন আমার রুমে এলো। আমি তাকে আমার সুসংবাদটি জানালাম, সে খুব খুশি হল। সাইদুলকে বললাম আমার সাথে যাওয়ার জন্য। সাইদুল গেল না, তার ক্লাশ আছে তাই।

জামান বললো, ভাইয়া আমি যাবো আপনার সাথে। ভিসির হাত থেকে আপনি যখন পুরস্কার নিবেন, আমি তখন আপনার ছবি তুলবো। তখনও আমার কোনো ক্যামেরা ছিল না, আমাদের ম্যাসের অনেকের ছিল, কোনদিন কারো ক্যামেরা একদিনের জন্যও আমি পাইনি। সাইদুলের স্যামসাং মোবাইলেই সেদিন জামান আমার ছবি তুলেছে। ছবিটি আমার ল্যাপটপে এখনো আছে তবে জামান কোথায়? তা আমি জানি না।

সে এখন দূর আকাশের তারা। হিজল বনে পালিয়ে যাওয়া পাখি। সে এখন মায়াবী এক পৃথিবীর বাসিন্দা। এক বছর হলো জামান ফার্মগেটের বাসা ছেড়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু হলে উঠেছে এক বড় ভাইয়ের রুমে।

বড় ভাই মানেই তো ছাত্র নেতা। আমি বিকালে পাবলিক লাইব্রেরীতে গেলে জামানকে ফোন করতাম, সাইদুলও থাকতো, জামান আসতো। জামান এলে আমরা সিংগারা, আলুর চপ আর চা খেতাম। খেতে খেতে গল্প করতাম। দশটার সময় আমরা বাসায় ফিরতাম।

আমরা আসতাম ফার্মগেটের বাসায়, জামান চলে যেত বঙ্গবন্ধু হলে। ২৮ আগষ্ট মিজান বাড়ি থেকে এসেছে। সে আমার পূর্বের রুমমেট। তিনমাস থেকেছি একসাথে। তখন মিজানের সাথে আমার সময় ভালো কাটেনি।

আমাদের ভেতর দুষ্টামি, খুনসুটি এমনকি মারামারি পর্যন্তও হয়েছে। ও খুব রাগ করতো তবে আমি খুব উপভোগ করতাম। আজ সারা বিকাল মিজান আমার রুমে ছিল, গল্প করলো বাড়িতে ঈদ কাটানো সময়ের। আমি মিজানকে বললাম, বিকালে কোথায় যাবে? সে বললো, একটা প্যান্ট কিনবো। আমাকে কিনে দিবেন।

আমি না করলাম না। মিজানকে নিয়ে নিউমার্কেট গেলাম। তখন অধিকাংশ দোকান বন্ধ, এখনো বাড়ি থেকে ফিরেনি। সেখানে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জাহিদ রুমানকে ফোন করলাম। মিজান বললো, রুমান ভাই আসলে একসাথে প্যান্ট কিনবো।

কিন্তু রুমান আসছে না। তার অফিসে সেদিন অনেক কাজের ছাপ ছিল। আমি আর মিজান তবুও অপেক্ষা করতে লাগলাম। আমি মিজানের দিকে তাঁকালাম। তার চেহারার মধ্যে সামন্য ক্লান্ত-শ্রান্ত ভাব দেখতে পেলাম।

দেখে আমার খুব খারাপ লাগলো। কারণ, আমার নিজের কোন ছোট ভাই নেই। তাই আমি মিজানকে আমার ছোট ভাইয়ের মতোই মনে করি। বললাম, খারাপ লাগছে মিজান? সে বললো না কিছু না। আমি কথা বলে ওর ভারি মন হালকা করার চেষ্ট করছি।

এমন সময় সাইদুলের ফোন এলো। আমি হাসিমাখা মুখে সাইদুলের মোবাইল রিসিভ করলাম। হ্যালো বলতেই ও প্রান্ত থেকে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে সাইদুল আমাকে বললো, ’আকবর ভাই আপনি কই? জামান মারা গেছে, জামান নাই, আমার প্রাণের বন্ধু, আমার আর ঢাকা শহরে কেউ রইল না। ’ এভাবে আরো অনেক বিলাপ। সাথে সাথে রুমানকে মেসেজ দিলাম।

সে এলো না। আমার খুব রাগ হলো ওর উপর। আমি আর মিজান একটা রিকসা করে গ্রিন লাইফ হসপিটালে গেলাম। সেখানে একটা জটলা দেখতে পেলাম। আমি এগিয়ে গেলাম জটলার দিকে, দেখলাম মামুন আর সাইদুল শিশুর মতো কান্না করছে।

আমি ভিড় ঠেলে ভেতরে গেলাম, আমি গেলে সাইদুল আর মামুন জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না! তাদের কান্না দেখে ইট পাথুরে বসবাস করা কঠিন হৃদয়ের মানুষগুলোরও চোখ ভিজে এলো। কিন্তু আমি সেদিন তাদেরকে কোন শান্ত্বনা পর্যন্ত দিতে পারিনি। শুধু নির্বাক হয়ে নিচের দিকে তাঁকিয়ে থাকলাম। প্রয় এক ঘন্টর মতো। জামান আমাকে প্রায়ই বলতো, তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ যাওয়ার জন্য।

আমি বলতাম যাবো, অবশ্যই যাবো ইনশাল্লাহ। কিন্তু আজকে আমাকে তাদের বাড়িতে যেতে হচ্ছে। তাও জামানের সাথেই। পার্থক্য শুধু এটুকু যে সে চলছে এ্যাম্বুলেন্সে করে সামনে সামনে আর আমরা চলছি বাসে করে তার পেছন পেছন। রাত তিনটার সময় আমরা জামাদের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছলাম।

কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ থানার নেয়ামতপুর গ্রামে। তখন চারদিকে এক বেদনাবিদুর পরিবেশ। জামানের বড় বোন মাতম করছে। তার কান্না দেখে আমরা সবাই কাঁদছি। গাছ থেকে পাতা ঝরছে, আকাশ থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ফোটা পড়ছে।

আকাশও মনে হয় কান্না করছে জামানে শোকে। জামানদের বাড়ির কুকুরটি চুপচাপ করে মাথা নিচের দিকে দিয়ে শুয়ে রইল, বাড়িতে এমন শোরগোল তবুও তার কোন সাড়া শব্দ পর্যন্ত নেই। সেও মনে হয় ভীষণ ব্যাথা পেয়েছে! এ রকম আশ্চর্যজনক দৃশ্য আমি আর কখনো দেখিনি। আমরা তার শবদেহের পাশে সারারাত বসে থাকলাম। মোশা কামড়াচ্ছে, আকাশ থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ঝরছে তবুও আমরা নড়ছি না।

সারারাত আমরা বসে থাকলাম জামানের শবদেহের পাশে। ফজরের সময় হলে আমরা নামাজ পড়তে মসজিদে গেলাম। আজ দুপুর দুইটায় জামানের জানাযা হবে। দেড়টার সময় খাটিয়া করে জামানকে দেওপুর রুছমত বেপারী ঈদগাহ মাঠে নিয়ে যাওয়া হলো। সবার সামনে জামানকে শুইয়ে রাখা হলো।

পেছনে আমরা হাজার হাজার শোকার্ত জনতা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু থেকে গ্রামের রিকসা চালকটি পর্যন্ত। কেউ যেন বাদ পড়তে চায়নি সেই শ্রেষ্ঠ শোকের মিছিল থেকে। আবাল বৃদ্ধ বণিতা, শিশু, কিশোর, যুবা; সবাই এসে শোকের মিছিলে সামিল হয়েছে। জানাযা শেষে হাকিম স্যার এসে পাথরের মত দাঁড়িয়ে রইলেন।

তার মাথা দিয়ে সাদা মুক্তোর মতো ঘাম ঝরছে, লাল চোখ দিয়ে বইছে দুঃখের অশ্র“। তিনি কাঁদবেন না কেন? ২০০৭ সালে তারই স্কুল থেকে এসএসসিতে প্রথম এ প্লাস পেয়ে গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়েছিল এই ছেলেটি। আজ তার জানাযা তাকে পড়তে হলো। এর চেয়ে ব্যাথা, বেদনা আর দুঃখ আর কি হতে পারে! হাকিম স্যারের পাশে সাইদুল, মামুন আরও অনেক ছাত্ররা এসে দাঁড়িয়েছে। দূর থেকে মুনাজাতে শরীফ হচ্ছেন সোহাগ ভাই।

তারই ছোট ভাই পরাগের খুবই নিকটতম বন্ধু ছিল জামান। পরাগ লন্ডন থেকে বারবার ফোন করে কান্না করছে, কথা বলছে সাইদুল আর মামুনের সাথে। সহস্র মাইল দূর থেকে সেও শরীক হচ্ছে প্রিয় বন্ধুর শোক মিছিলে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রিয় বন্ধু ফররুখ হাউমাউ করে কাঁদছে তার প্রিয় বন্ধুটির জন্য। পাঁচ তলার উপর জানালার পাশে আমার খাট।

রাত একটার সময় আমি বিছানায় শুতে যাই। কিন্তু আমার চোখে ঘুম আসে না। আমি জানালা দিয়ে আকাশ দেখি, তারা দেখি, চাঁদ দেখি। চাঁদের সৌন্দর্যের ভেসে উঠে জামানের মুখ। তারাদের মিটিমিটি আলোর মাঝে খুঁজি জামানের হাসি।

এখনো জিরিজিরি বাতাসের শব্দে আমি জামানের ছোট ছোট কথা শুনতে পাই। বিঃদ্রঃ-গত ২৮ সেপ্টেম্বর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদুজ্জামান মারা যায়। সে আমার অনেক প্রিয় মানুষের একজন ছিল। তাকে নিয়ে এই স্মৃতিকথাটি লেখা হলো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.